প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে তালেবান : জাতিসংঘ
নারীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ, কিশোরীদের স্কুলে যেতে বাধা এবং পুরোনো শত্রুদের ঘরে ঘরে তল্লাশির মাধ্যমে আফগানিস্তানে তালেবান শাসকরা তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচলেট এই মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘‘গত মাসে ইসলামপন্থী এই গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তান ‘নতুন এবং বিপজ্জনক এক অধ্যায়ে’ প্রবেশ করেছে। দেশটির নারী এবং জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অনেক সদস্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’’
জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে ব্যাচেলেট বলেন, ‘তালেবানরা নারীদের অধিকার সমুন্নত রাখার আশ্বাস দিলেও গত তিন সপ্তাহে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। আশ্বাসের বিপরীতে সেখানে নারীদের জনপরিসর থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’
তালেবানের সরকারে নারীদের অনুপস্থিতি এবং জাতিগত পশতুনদের আধিপত্য থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১২ বছরের ঊর্ধ্বের আফগান কিশোরীদের স্কুলে যেতে বারণ এবং নারীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; যা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের তালেবানের নিপীড়নমূলক শাসনের মতোই। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল তালেবান।
আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাধারণ ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিলেও তালেবান তা ভঙ্গ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাচেলেট। তিনি বলেন, একইভাবে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশিতে তালেবানের নিষেধাজ্ঞার প্রতিশ্রুতিও ভঙ্গ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানি এবং নিরাপত্তা বাহিনীতে যারা কাজ করেছেন তাদের বাড়িতেও তল্লাশির একাধিক অভিযোগ জাতিসংঘ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মিশেল বলেছেন, জাতিসংঘের কিছু কর্মী ক্রমবর্ধমান হামলা এবং হুমকির কথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এই হাই কমিশনার বলেন, ‘আফগান সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্যকে প্রতিশোধমূলক হত্যার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগও পাওয়া গেছে।’
আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে একটি প্রক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যাচেলেট। তিনি বলেন, আমি আফগানিস্তান সংকটের ভয়াবহতা অনুযায়ী সাহসী এবং জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এই কাউন্সিলের কাছে আমার আবেদনের পুনরাবৃত্তি করছি।
রয়টার্স