Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
April 26, 2024
Homeসাহিত্যগল্পঅনুবাদ গল্প: অপ্টিমিস্টকে জিজ্ঞেস কর

অনুবাদ গল্প: অপ্টিমিস্টকে জিজ্ঞেস কর

অনুবাদ গল্প: অপ্টিমিস্টকে জিজ্ঞেস কর

জর্জ সন্ডার্স
ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার জর্জ স্যান্ডার্সের প্রথম উপন্যাস ‘লিংকন ইন দ্য বার্ডো’ ম্যান অব বুকার ২০১৭ পুরস্কার জিতে নেওয়ার পর বলা হয়েছিল, এটা পুরস্কার জিতেছে কারণ এটার নতুনত্ব, এর স্টাইল সম্পূর্ণ আলাদা। জন্ম ১৯৫৮ সালে আমেরিকার টেক্সাসে। তবে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে শিকাগোতে। পড়াশোনাও শিকাগোতে। গ্রাজুয়েশনের ছাত্র থাকাকালীন তার লেখালেখির সূচনা। মূলত তিনি একজন গল্পলেখক হিসেবে পরিচিত। 
জর্জ স্যান্ডার্সের ভাষার বুনন ও আঙ্গিকগত উপস্থাপনের কৃৎকৌশলের একেবারেই আলাদা। বিষয় আঙ্গিকের দিক থেকেও অনন্য। একবার স্যান্ডার্স বলছিলেন, খুব অদ্ভুত এক সময়ে বাস করছি আমরা। আমাদের সবসময় নেতিবাচক অনুভূতি ও সহিংসতার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে।
জর্জ সন্ডার্সের আস্ক ‘দ্য অপটিমিস্ট’,যেটি ফারজিনা মালেক স্নিগ্ধার অনুবাদে ‘অপ্টিমিস্ট কে জিজ্ঞেস কর’ গল্পও আমাদেরকে এই সময়ের নেতিবাচক অনুভূতি ও সহিংসতার চিত্রটি আঙুল তুলে দেখিয়ে দেয়। গল্পটি দ্য নিউ ইয়র্কার পত্রিকায় ২০০৬ সালে প্রকাশিত। তবে এ গল্পের বাংলা ভাষার অনুবাদ ফারজিনাই প্রথম করলেন।

ফারজিনা মালেক স্নিগ্ধা

জন্ম ময়মনসিংহে ১০ জানুয়ারি ১৯৮৩ সালে।  জীবনের প্রথম আঠার বছর সেখানেই কাটিয়েছেন। এরপর ঢাকায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেন ২০০৭-০৮ সালে। তারপর হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানে মাস্টার্স। দেশে ফিরে ৬ বছর কাজ করেন বিভিন্ন এনজিওতে। এখন বাস করছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে। সেখানে পিএইচডি করছেন ডিসএবিলিটি নিয়ে; কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে।
 ফারজিনা মালেক স্নিগ্ধা নিজেকে লেখক বলে দাবী না করলেও চারপাশের সঙ্গতি-অসঙ্গতি, অনুভূতির গভীরে পোঁছে আঘাত করা ঘটনাগুলো নিয়ে কলম তোলেন তিনি। অন্যদিকে ব্যস্ততা ফারজিনাকে লেখালেখির সময় দিতে চায় না।   কিন্তু না চাইলেও ফারজিনা ঠিকই সময়টা আদায় করে নেন। লেখেন গল্প, কবিতা অথবা নিবন্ধ। দায়সারা নয়, দায়বদ্ধতাই পাওয়া যায় তাঁর লেখাতে।  অনুবাদ লেখককে স্বাধীনতা দিতে চায় না। অনুবাদে ফলে পাঠক হয়ত লেখক ফারজিনার মূল রচনার স্বাদটা পাব না, কিন্তু তাঁর চিন্তার জগত ও পদচারণের খোঁজটা ঠিকই পেয়ে যাবেন।
প্রিয় অপ্টিমিস্ট,
আমার বর ভালো করেই জানে কাপড়ের টুপি পড়তে আমি কত্ত ভালোবাসি, তবুও কয়েকদিন আগে ও একটা খোলা ছাদের গাড়ি কিনেছে। ও সবসময়ই এমন চাপা কষ্ট দেয় আমাকে। যেমন, একবার যখন আমার সবগুলো দাঁত পড়ে গেল, ও আমার জন্য বড় এক ক্রেকার্স জ্যাক্স এর প্যাকেট নিয়ে আসলো। আরেকবার, আমার শরীরের নব্বই ভাগের বেশি অংশ ভয়ংকরভাবে পুড়ে গিয়েছিল, ও আমাকে চালাকি করে গরম তেলের ম্যাসাজ নিতে দিল। আর তারপর আমাকে হাইড্রোলিক এসিডের একটা বড় পাত্রে কৌশলে ফেলে দিল! যাই হোক, ওকে আমি এইসব ‘ভুলবোঝাবুঝি’র জন্য সেই কবেই মাফ করে দিয়েছি। কিন্তু তুমিই বলো এই ‘কাপড়ের টুপি’ বিষয়ে আমি কিভাবে আশাবাদী হই?
ইতি
কাপড়ের টুপি পড়তে না পারায় উন্মাদিনী একজন

ক্লিভল্যান্ড, ওহাইও

প্রিয় উন্মাদিনী,

তুমি কিন্তু এখনও খোলা ছাদের গাড়িতে কাপড়ের টুপি পড়তে পারো! একটু বেশি টুপি লাগবে, এই যা! আমি কি বলি জানো? তুমি একগাদা কাপড়ের টুপি কিনো, গাড়িতে রাখ, আর তারপর গাড়ি চালানো শুরু করো। যদি একটা টুপি উড়ে যায়, তাহলে রেখে দেয়া টুপি থেকে আরেকটা  নাও!  এবং ভাবো তো, কি আনন্দটাই না হবে যখন গরিব মানুষগুলো গাড়ির পেছন পেছন দৌড়াবে তোমার ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্ট টুপি গুলো নিতে! সুপার!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

এবার ছুটি থেকে এসে দেখি আমাদের ঘর ভর্তি হয়ে আছে লেবুতে।  মানে পুরো বাসা ভর্তি লেবু! এমন কি বেড়ালটার মুখেও একটা লেবু ছিল! কি করি বলো তো?
ইতি
মহাবিরক্ত

সিয়াটল, ওয়াশ

প্রিয় মহাবিরক্ত,

এটা একটা জটিল সমস্যা! আমার পরামর্শ কি জানো? যখন জীবন তোমাকে অনেক লেবু দেয়, তখন তুমি –
· প্রথমত, অনেকগুলো ময়লার ব্যাগ কিনো
· লেবুগুলো সেখানে ভরো
· ব্যাগটাকে টেনে রাস্তার কিনারে নিয়ে যাও
· একজন সনদপ্রাপ্ত ময়লা নিষ্কাষনকারীকে ডাক যেন তোমার রোদে পোড়া এই লেবুগুলোকে ঠিকভাবে নিয়ে যেতে পারে।

তারপর দেখবে ম্যাজিকের মতোই তোমার ঘর লেবুমুক্ত হয়ে গেছে! তারপর তুমি বাইরে গিয়ে ঠান্ডা পানীয় খেয়ে সেটা উদযাপন করতে পারো! ও আচ্ছা, তোমার বেড়াল বাচ্চাটার জন্য একটা চোয়ালের ম্যাসাজ নিতে ভুলে যেও না কিন্তু!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

আমার বৌ খুবই ভালো ছবি আঁকে; কিন্তু আমার বেলায় একদমই না! ওর ছবিতে আমার পা দুটো বুক আর পেটের অর্ধেক লম্বা হয়, আমার মুখটা দেখতে ব্যাঙের মতো লাগে, আমার পায়ের পাতাটা সরীসৃপের মতো বীভৎসভাবে ছড়ানো থাকে, আর আমার মুখটায় একটা কিম্ভুত চটকালো ভাব থাকে। অন্য যাদের ছবিই ও আঁকে তারা  কিন্তু হুবুহু নিজেদের মতোই দেখতে থাকেI আমি এই বিষয়টাকে এড়ানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছুদিন আগে ওর একটা একক প্রদর্শনীতে আমার বন্ধুরা এটা নিয়ে আলোচনা করছিল আর আমি খুবই অস্বস্তি বোধ করছিলাম। এই বিষয়টাকে আমি কিভাবে আরেকটু ইতিবাচকভাবে নিতে পারি, বলতে পারো?
ইতি,
ব্যথিত কিন্তু আশাবাদী

টোপেকা, ক্যান্স

প্রিয় ব্যাথিত কিন্তু …,

তোমার চিঠি পাওয়ার পর আমি একজন ব্যাক্তিগত তদন্তকারীকে ক্যামেরাসহ তোমার বাসায় পাঠিয়েছিলাম। এবং ভাব তো কি হয়েছে! তুমি কি ইদানিং আয়নায় নিজেকে দেখেছ? তোমার পা দুটো আসলেই বামনাকৃতির, তোমার মুখটা ব্যাঙের মতো এবং সত্যিই সত্যিই তোমার একটা চটকালো মুখ আছে! সুতরাং….একদম চিন্তা কোরো না! তোমার বৌ সত্যিই একজন ভালো আঁকিয়ে!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

আমার খুব কষ্ট লাগে যখন চিড়িয়াখানায় যাই। বন্দি পশুগুলো কেমন মুখ করে বসে থাকে। তুমি কি কোনও পরামর্শ দিতে পারবে?
ইতি
পশুপ্রেমী

প্যাসাদেনা, ক্যালিফ

প্রিয় পশু,

আমি কি বলি জানো, চিড়িয়াখানায় যাওয়া বন্ধ করে দাও! কিন্তু তারপরও যদি একান্তই চলেই যাও, তাহলে বিষয়টাকে এভাবে ভাবতে পারো: এই সবগুলা পশু; গা ভর্তি হয়ে আছে নিজেদের মলমূত্রে, আশেপাশের শুষ্ক ঘাসহীন পরিখার মধ্যে ঘুরাঘুরি করছে, অন্যান্য খাদক প্রাণীগুলো ওদের যে কোনও সময় খেতে পারে এবং হয়ত এতদিনে মরেই যেত যদি বনে থাকত! সুতরাং তুমি নিজেই ভাবো: আমার কি মরে যাওয়া ঠিক হবে, নাকি গা ভর্তি মল নিয়ে থাকা ঠিক হবে অথবা শুষ্ক ঘাসহীন পরিখায় ক্রমাগত বিচরণ করা ঠিক হবে? আমি ঠিক  জানি এর উত্তর আমি দিব!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

কয়েকবছর আগে আমি অসাবধানতাবশত একটা ভুল দেশে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলাম। এছাড়াও, সম্ভবত একবার আমি খুব ধীরগতিতে একটি ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সাড়া দিয়েছিলাম। আমার যে বন্ধুরা এসব অভিযোগে অভিযুক্ত নয়, আমার ধারণা তারা আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। উপরুন্তু, আমি যে সংস্থাটির দায়িত্বে আছি, হঠাৎ করেই তা অনেক ঋণে ডুবে যাচ্ছে। এখানে এখনও আমার চাকরির আরও দুই বছর বাকি আছে।  কোনও পরামর্শ?

ইতি
মাথায় কিছু একটা চিন্তাযুক্ত

ওয়াসিংটন ডি সি

প্রিয় কিছু একটা যুক্ত,

ঠিক এইভাবেই থেকো! কিচ্ছু স্বীকার কোরো না! তোমার শত্রুদের অবজ্ঞা কর! আরেকটা যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারো কিন্তু? অথবা অন্য কোনও বুদ্ধি আসছে নাকি মাথায়? মনে হচ্ছে আরেকটু বেশি আশাবাদী হতেই পারতে! কি আর এমন দাম দিতে হতো এর জন্য? তোমার সহকারীকে বলো আমার সহকারীর সাথে যোগাযোগ করতে!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী অন্য একজনের জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। শুধু তাই নয়, অন্য মানুষটি আমার চেয়ে বেশি লম্বা চওড়া,  সুন্দর, এবং ধনী ছিল। আর আমার স্ত্রীর মতে, তার পুরুষাঙ্গ আমার চেয়ে বড়, এবং তার চমৎকার গানের গলা  আর পিঠে কম চুল আছে। সত্যি বলতে কি, আমি এই পরিস্থিতিতে খানিকটা ‘নেতিবাচক’ অনুভব করছি। পরামর্শ?
ইতি,
হতাশাগ্রস্ত কেননা আমার পুরুষাঙ্গ স্ত্রীর নতুন হ্যান্ডসাম প্রেমিকের থেকে ছোট

ব্রাইটন, মিচ্

প্রিয় ছোট পুরুষাঙ্গ,

তুমি কেন এর ভালো দিকটা দেখছো না? অন্তত সে তোমার চাইতে বেশি উপস্থাপিত বা প্রকাশিত নয়-

প্রিয় অপটিমিস্ট,

ওহ, হ্যা, সে আমার চাইতেও বেশি উপস্থাপন যোগ্য। আমি এটা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।

প্রিয় ছোট পুরুষাঙ্গ,

কোনও ব্যাপার না! আমি তোমাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করি! তোমার স্ত্রী নিশ্চিতভাবেই তোমার জন্য ঠিক মানুষ নন এবং এটা মেনে নেয়ার মাধ্যমে-

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আসলে, রাল্ফ পাঁচটা ভাষায় কথা বলতে পারে এবং কিছুদিন হলো সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপর একটা প্রাচীন সংস্কৃত লেখা অনুবাদ করেছে। আর আমি খুব ভালো করেই জানি জুডি আমার জন্যই মানানসই একজন নারী। আমি কখনই অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারব না। আমি তারচেয়ে বরং মরেই যাব।

প্রিয় ছোট পুরুষাঙ্গ,

ওহ্‌! আমি বুঝতে পারছি কেন তোমার বৌ তোমাকে ফেলে চলে গেছে! তুমি তো খুবই নেতিবাচক!  এবং খানিকটা একগুঁয়ে!

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আমি সেটা জানি, বুঝতে পারছ? জুডিও সবসময় এই কথাটাই বলত। ওহ্‌! এইভাবে বেঁচে থাকার কি মানে আছে? আমি এখন মরার জন্য তাড়াতাড়ি কাজ করে এমন কিছু ওষুধ খাব … এবং … এবং …

প্রিয় ছোট পুরুষাঙ্গ,

তুমি না আসলে ‘ইতিবাচকতা’ বিষয়টা বুঝতেই পারছ না! ‘ইতিবাচকতা’র মূল বিষয়টা কি বল তো? সে নেতিবাচক না! আর নেতিবাচকতার অপরিহার্য গুণ কী বল দেখি? সে খুব বেশী চিন্তা করে, তারপর খুব হতাশাগ্রস্ত  এবং অসাড় হয়ে যায়! অনেকটা তোমার মতো, ছোট পুরুষাঙ্গ! আমি, যতটা পারি কম ভাবতে পছন্দ করি এবং ফুর্তিতে থাকি! উত্তেজিত এবং সক্রিয়! যদি কোনও একটা বিষয় আমাকে বিরক্ত করে তাহলে আমি অন্য বিষয় নিয়ে ভাবি! যদি কেউ আমাকে খারাপ কোনও খবর দেয়? আমি তা উপেক্ষা করি! যেমন আমি একজন আশাবাদী মানুষকে চিনি, যাকে কিনা একটা হাঙ্গর খেয়ে ফেলেছিল। তখন সে কোনও চিৎকার চেঁচামেচি করেছিল না, শুধু জোরে জোরে বলছিল, ‘সবকিছুর পেছনেই মঙ্গল নিহিত আছে!’ ভেবে দেখ, কি পরিমাণ একজন আশাবাদী মানুষ! যদিও শেষ অব্দি সে মারা গেছে কিন্তু সে অন্য কাউকে নৈরাশ্যবাদী করে নি ! মানুষটা কি মহান ছিল! আমি সত্যিই তাকে অনেক মিস করি!  না না, আমি মিস করি না আসলে! সবকিছুর পিছনেই নিশ্চই মঙ্গল নিহিত আছে! আমি টডকে একদম মিস করি না, যদিও আমরা অল্পসময়ের জন্য হলেও ভালোবাসতাম একে অপরকে এবং আমার কখনই এতটা ছন্নছাড়া লাগে নি; তুমি নিশ্চই বুঝতে পারছ আমি কি বলছি ! সুতরাং নিজেকে মূল্যায়ন কর! এটা এমন কোনও বড় বিষয় না! আমি নিশ্চয়ই এর জন্য এখন সব ফেলে নিস্তব্ধ হয়ে বসে থাকব না? তাই না বলো ছোটলিঙ্গ? তাই না? হ্যালো! ওহ্‌! বুঝেছি! সে নিশ্চয়ই এখন অন্য কোথাও ঘ্যানঘ্যান করতে গেছে! পরের চিঠি দেখি!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

আমি এমন একজন ক্ষিপ্ত মা যে কিনা একটি বিশাল দুর্ভিক্ষ প্রভাবিত অঞ্চলে চারজন ক্ষুধার্ত বাচ্চা নিয়ে বেঁচে আছে। বিদ্রোহীরা প্রায়ই পাহাড় থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে নেমে এসে আমাদের অনেককে হত্যা করে, নিপীড়ন করে। এখানকার পুরুষেরা বেশির ভাগই হয় মারা গেছে নয়ত এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এখানে কোনও খাদ্য বা খাবার পানি নেই। আমি খুবই খুশি হবো যদি তুমি আমাকে কোনও উপদেশ দিতে পারো।
সার্বিকভাবে আশাবাদী না হতে পারা একজন

আফ্রিকা

প্রিয় আশাবাদী,

অনেক ধন্যবাদ আমাকে লেখার জন্য! সান্ত্বনার কথা এই যে, তুমি আসলে খুবই সংখ্যালঘু একটা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত! পৃথিবীর সবার সাথে তুলনা করলে, তোমার মতো অল্পকিছু মানুষ আছে! বাদবাকি বেশিভাগ মানুষেরাই ক্ষুধার্ত না বা এমন বিপদের মধ্যেও নেই। সত্যি কথা বলতে কি, তারা হয়ত জানেও না যে তুমি এতো বিপদের মধ্যে আছ। আর তারা এখানে অনেক ভালো আছে, জীবনকে উপভোগ করছে, সব ধরণের আনন্দ তাদের আছে! এই তথ্য কি কোনভাবে তোমাকে সাহায্য করছে? আমি আশা করি করছে! আর মনে রেখ- দুঃখ সারাজীবন থাকে না! আমি আশা করি শীঘ্রই তোমার দুঃখ কেটে যাবে!

প্রিয় অপটিমিস্ট,

কিছুদিন আগে আমার শ্বশুর তার গাড়ি পিছন দিক দিয়ে চালিয়ে আমাকে ধাক্কা দেয়। যখন আমি অভিযোগ করি তখন সে আবারও আমাকে ধাক্কা দেয়। তারপর আমি গাড়ির চাকার নিচে পরে যাই আর সেখান থেকে বিলাপ করতে থাকি। সে তখন গাড়ি থেকে বের হয়ে এসে আমার গায়ে গলিত ধাতব পদার্থ ঢেলে দেয়  আর আমাকে একটা পার্কে নিয়ে উঁচু বেদিতে রাখে এবং আমার পায়ের কাছে একটা প্ল্যাকার্ডে লিখে রাখে যে ‘অলস।’ এর মানে কি দাঁড়ায়? আমি এই পুরো ঘটনাটাকে খুবই ইতিবাচকভাবে দেখার চেষ্টা করছি; কিন্তু পারছি না, কেননা আমার চিবুক চুলকাচ্ছে আর আমি কিছুতেই আমার এই ব্রোঞ্জ মোড়ানো হাত দিয়ে তা ধরতে পারছি না।
ইতি
আমি পার্কপ্রেমী, কিন্তু এটা কিম্ভুত!

ফোর্ট মেয়ার্স, ফ্লা

প্রিয় পার্কপ্রেমী,

ওহ, সত্যি ! ব্রোঞ্জ মোড়ানো হাত? তাহলে এই চিঠি তুমি কিভাবে লিখলে?

প্রিয় অপটিমিস্ট,

উঃ! আমার আরেকটা হাত তো পুরোপুরি ব্রোঞ্জ দিয়ে মোড়ানো না?
প্রিয় পার্কপ্রেমী,

তাহলে তুমি ওই হাত দিয়ে চিবুক চুলকাচ্ছ না কেন?

প্রিয় অপটিমিস্ট,

উহ, কেননা আমি ওই হাত দিয়ে আমার কলম ধরে আছি। আর আমি যদি কলমটা ফেলে দেই, তাহলে আমি তো সেটা আর ওঠাতে পারব না কারণ আমার শরীরও তো ব্রোঞ্জ দিয়ে মোড়ানো। তখন যদি কবুতরগুলো কলম নিয়ে চলে যায়? যাই হোক, আমার একটা আইডিয়া আছে। কেন তুমি আমাকে আত্মহত্যা করতে বলছো না?  দ্রুত কাজ করে এমন কিছু ওষুধ খেয়ে, যখন তুমি আমাকে প্রথমেই বলছ ‘নেতিবাচক’ আর ‘একগুঁয়ে?’

প্রিয় পার্কপ্রেমী,

আচ্ছা এটা কি তুমি, ছোটলিঙ্গ? আমি ধারণা করছিলাম যে হাতের লেখাটা মিল ছিল! তুমি কি তখন হাতের লেখা নকল করছিলা যখন ওষুধ খাওয়ার কথা বলছিলা? আর, তুমি সত্যি সত্যি ব্রোঞ্জ দিয়ে আবৃত না, তাই না?

প্রিয় অপটিমিস্ট,

ঠিক ধরেছো, তুমি বুদ্ধিমান, আমি মারা যাই নি। আমি ব্রোঞ্জ আবৃতও না আর আমি হালও ছেড়ে দিচ্ছি না। সত্যি কথা বলতে কি আমাকে আরও অপেক্ষা করতে হবে এবং জুডিকে ফোনে ধরতে হবে।  যদি সে আমার কথা ফোনে শোনে, তাহলে আমি ধরে নিবো সে …

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আমি একটা টার্কির শরীরে আটকে পড়া মানুষ।  আমার অল্পস্বল্প মানুষের স্মৃতি আছে, কিন্তু যখন আমি নিচে তাকাই, আমি আমার লালঝুঁটি দেখতে পাই! মাঝে মাঝে যখন এখানে বৃস্টি হয় আমি তখন একদৃষ্টিতে হা করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি I আর ধীরে ধীরে কণ্ঠনালী বৃষ্টির পানি দিয়ে পূর্ণ করি। আমার নিজের প্রতি বিরক্ত লাগা শুরু করেছে, তুমি কি কোনও সাহায্য করতে পারো?
ইতি,
বিরক্তিকর বড় টার্কি

আলবানীর কাছে একটি ফার্ম

প্রিয় বড় টার্কি,

অবশ্যই আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি! তুমি আমার বাসায় চলে আসো ব্যাক্তিগত কাউন্সিলিং এর জন্য! বড়দিনের সময়টাতে কি তুমি ফ্রি আছ? তুমি আমার জন্য ওয়েটিং স্পটে অপেক্ষা করো, একটা গাছের গুড়ি আর কুড়াল আছে ওখানে! আর তুমি কি এমন একটা মানুষ কে চিনো যে একটা শুয়োরের শরীরে আটকে আছে? আমি তাকেও কাউন্সেলিং করতে পারি! ততদিন পর্যন্ত, তোমার জন্য আমার উপদেশ হলো যত পারো খেয়ে নাও, সবচেয়ে ভালো হয় যদি কিছু ভালো মানের ভুট্টা খেতে পারো! আর তোমার চিবুক উঁচু করে রাখো অথবা মাথার ঝুঁটি অথবা যা ইচ্ছা তা করো!

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আমাকে অষ্টাদশ শতাব্দী তে জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছিল। তখন আমি নারকোলেপসি রোগের কারণে দিনের বেলা প্রায়ই ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে থাকতাম এবং আমার পরিবার আমার গাঢ় ঘুমকে মৃত্যু ভেবে ভুল করে। এভাবে দুইশ’ ছাপ্পান্ন বছর আগে থেকে আমার আত্মা এই ক্ষয়ে যাওয়া শরীরের আর এই বীভৎস ঘটনার মধ্যে আটকা পরে আছে। আর যারা আমার জন্য প্রার্থনা করত তারা অনন্তকালের পথে চলে গেছে। অথচ আমি এখানে নিদারুণভাবে একা, পাশ দিয়ে কুকুর নিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষের পায়ের শব্দ আর শরতের পাতা ঝরার শব্দে ভীত হয়ে থাকি; অর্ধমৃত অবস্থায় দণ্ডিত আমি যেন কোনও মৃদু অপরাধের চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করছি যতক্ষণ না পর্যন্ত সময় বয়ে যাবে এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তোমার কোনও ভাবনা আছে এই বিষয়ে?
ইতি,
একটি শান্তির মৃত্যুর জন্য অপেক্ষায় থাকা একজন

প্লিমাউথ, মাস

প্রিয় অপেক্ষারত,

তুমি কি কিছু ‘কঠিন প্রেমের কথা ভাবছ? মানে, তোমার সময়ে কি এমন কিছু আসলে ছিল? তুমি কি সত্যিই তোমার এই পরিস্থিতি থেকে উঠে আসার কোনও চেষ্টা করেছ? মানে ধরো, তুমি গত কি ষাট সত্তর বছরে কখনও কফিনের ঢাকনা খোলার চেষ্টা করেছ? এবং, যদিও তখন তোমার মুখ ভর্তি থাকবে মাটি আর তুমি হয়ত ভয়ঙ্করভাবে অবরোধ আতঙ্কে থাকবে, তারপরেও তুমি কি মাটি খুঁড়ে উপরে উঠে আসার চেষ্টা করেছ? নাকি সেখানে এমন মনমরা হয়ে কেবল শুয়েই আছো-

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

তুমি আমাকে ভুল বুঝছ। আমি নড়তে পারি না। আমার আত্মা এখনও সচল, আমি ভয় পাই, কষ্ট পাই আর স্বপ্ন দেখি কিন্তু আমি একদম নড়তে পারি না। আমি ভাবছিলাম যখন আমি বলেছি যে আমি মৃত তখন তুমি বুঝবে আমি যা বোঝাতে চাইছি –

প্রিয় অপেক্ষারত,

আমাকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই! আমি এমন একটা বেকুব না যার জীবন নারকোলেপসির মতো একটা রোগের কারণে ঘুমে ঘুমে কাটছে! আমি তোমার ঘুমকে তোমার মৃত্যু ভেবে ভুলও করি নি! এমন কি ওই অষ্টাদশ নাকি কোন্‌ শতাব্দী ওই সময় আমি তো জন্মাই নি! তুমি বরং ওখানে শুয়েই থাক আর ভাবো সত্যিই তুমি কি চাও?

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

আমি আমার জীবন একজন ফেরেশতা হিসেবেই শুরু করেছিলাম, কিন্তু একটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে আমি একজন পতিত ফেরেশতা হয়ে যাই। আর আমি এখন লুসিফার, শয়তানের রাজা। যদিও আমি জানি আমার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত – কেননা আমি আমার নিজের জন্য কাজ করি এবং আমি এই পৃথিবীতে অন্যতম ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তি – কিন্তু আমার মধ্যে কিছু বিষয় অনুপস্থিত; যেন আমার কোনও একটা গুন নেই। আমি যখন ঘুরতে বের হই তখন আমি শুনেছি, মানুষেরা ‘মহত্ত্ব’ নিয়ে কথা বলছিল। সাধারণত যখন আমি এই শব্দটা শুনি তখন আমার খুব খারাপ লাগে আর তখনই আমি তাদের দিয়ে খারাপ কিছু করাই। কিন্তু তবুও এটাতে আমার মন ভরে না। কোনও আইডিয়া?
ইতি,
শয়তান

দোজখ

প্রিয় শয়তান,

এটা খুব পরিষ্কার যে তুমি খুব একা! আমি বলি কি শোন: প্লিমাউথ, ম্যাসাচুসেটস এ ‘শান্তির মৃত্যুর জন্য অপেক্ষায় থাকা একজনের কবরের কাছে যাও। সে খুব একা! তুমিও খুব একা! এটা সত্যিকারেই একটা উইন উইন বিষয় হবে! তার কফিনের পাশে তুমি তোমার আস্তানা গড়। আমার ধারণা সে এটা পছন্দ করবে! অথবা হয়ত করবে না! হয়ত শয়তানের হঠাৎ আগমনে সে ভয় পাবে! ওহ্‌, আমি নিশ্চিত নই! সে যাই হোক! যা হবে, ভালোই হবে!

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আমি খুব ভালো বোধ করছি এখন! তুমি বিগত সময়গুলোতে যা যা কলামে লিখেছো আমি সব অন্তর্গত করছি! আমি খুবই উত্তেজিত আছি!
ইতি,
বাঁচতে পেরে উৎফুল্ল একজন, যে কিনা কখনই এত ভালো বোধ করে নি

শিকাগো, ইল

প্রিয় উৎফুল্ল,

সুপার! তোমার কি কোনও প্রশ্ন ছিল!

প্রিয় অপটিমিস্ট,

না, আসলে ছিল না!

প্রিয় উৎফুল্ল,

তাহলে এখানে কি! এই কলামের নাম কি হবে? এর নাম কি হবে যে ‘অপ্টিমিস্ট এর প্রতি কিছু কথা?’ নাকি ‘এখানে আসুন আর মি. পারফেক্টের মতো আচরণ করুন?’ তাই কি –

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

কোনও সমস্যা নেই! আমি পুরোপুরি বুঝতে পারছি তুমি কি বলছ! আমি ক্ষমা চাইছি আর আশা করি তোমার দিন অনেক ভালো যাবে!  তুমি জানো কি, আমি এখন একটা নিরিবিলি জায়গায় যাব আর আমি ভাববো আমি কি করেছি। কেননা আমি যদি কোনও ভুল করে থাকি তা যেন আর ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে!
ইতি,

উৎফুল্ল

প্রিয় উৎফুল্ল,

ধ্যাৎ, কি বিতক্তিকর!  আচ্ছা, এই এতটুকু জায়গাই এর জন্য বরাদ্দ ছিল, তাই –

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আরে ধুত্তরি! জুডি আমার ফোন ধরবে না। আজকের দিনটা আমার জীবনে সবচাইতে খারাপ দিন।
 ইতি,

ছোট পুরুষাঙ্গ

প্রিয় ছোট পুরুষাঙ্গ,

আমাদের এই প্রসঙ্গে কথা বলা শেষ! আজকের কলাম এখানেই শেষ! আমি কি তোমার কাজ নষ্ট করতে তোমার ওখানে যাই?!

প্রিয় অপটিমিস্ট,

আমি কোনও কাজ করি না! আর ধন্যবাদ এই প্রসঙ্গটা বাদ দেয়ার জন্য। তুমি কি একটা বিষয় জানো? তোমার সাথে আমার এটা নিয়ে যথেষ্ট কথা হয়েছে। আমি এখন সরাসরি তোমার বাসায় আসছি। বুঝতে পারছো? আরে চালাক লোক, কিভাবে সামাল দিবে এখন?
ইতি,

ছোটলিঙ্গ

প্রিয় যে কেউ,

দয়া করে পুলিশকে ডাকুন! আমি জানি এটা ঠিক হয়ে যাবে! ওহ! ঈশ্বর, সে চলে এসেছে! সে দরজা ভেঙে ফেলেছে!  দয়া করে পুলিশকে ডাকুন! হেল্প! হেল্প!

প্রিয় অপ্টিমিস্ট,

কেমন লাগছে এখন? মি. সুপিরিয়র, কেমন লাগে বলো তো?

প্রিয় সবাই,

আউচ…আউচ…. ওহ, ঈশ্বর!

প্রিয় সবাই,

এটা শেষ। অপ্টিমিস্ট আর নেই। শেষ পর্যন্ত আমরা তার উন্মত্তপনা থেকে মুক্ত হলাম। আর জুডি, তুমি যদি শুনতে পাও তাহলে শোন, সাইজই সব কিছু না। আর নিজেকে প্রকাশ করতে পারাই সব না; এবং লম্বা হওয়াটাই বড় বিষয় না। আরেকটা কথা, আমি আমার পিঠের চুল উঠিয়ে ফেলেছি। দয়া করে আমাকে নিরাশ কোরো না! আমি তোমার চিঠির জন্য অপেক্ষা করব প্রিয়তমা!
ইতি
ছোটলিঙ্গ

এ.কে.এ. স্টিভ

প্রিয় ছোটলিঙ্গ, এ.কে.এ. স্টিভ,

হাই স্টিভ! কেমন চলছে সব? আমি অপ্টিমিস্টের পরিবর্তে কলামে নতুন যোগদান করেছি!  তুমি আমাকে নতুন অপটিমিস্ট হিসেবে ডাকতে পারো! সুপার! তোমার জন্য আমার পরামর্শ হলো, তুমি পুলিশের কাছে ধরা দাও! জেলে ভালো খাবার দাবার আছে আর তুমি সেখানে ধ্যান করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবে। আর কে জানে, হয়ত এতে করে তুমি আধ্যাত্বিক শক্তি সম্পন্ন হতে পারো আর তোমার গাধামি থেকে বেরিয়ে আসতে পারো! এটা কি এভাবে পালিয়ে বাঁচার থেকে ভালো না? জুডি কখনোই তোমাকে ফেরত নেবে না, কোনই সম্ভাবনা নেই এবং আমি নিশ্চিত জানি জুডি আমার সঙ্গে সারাজীবন কাটাবে!
ইতি,

বাঁচতে পেরে উৎফুল্ল একজন, যে কিনা কখনই এতো ভালো বোধ করে নি, এ.কে.এ. নতুন অপটিমিস্ট

প্রিয় রাল্ফ, তুমি একটা জারজ সন্তান!

এটা কি সত্যিই তুমি? তুমি মিথ্যুক, বৌ চোর! দেখ, তুমি আমাকে কতটা নিচে নামিয়েছো! আমি এখন একজন খুনি! আমি অপ্টিমিস্টকে খুন করেছি! ওহ ঈশ্বর! এমনকি মারা যাওয়ার আগেও তার চেহারা যদি দেখতে; সে চেষ্টা করছিল প্রশান্তিমাখা হাসি হাসতে!
ইতি,

স্টিভ

প্রিয় স্টিভ,

হুম, বেকুব, এইটা আমি রাল্ফ! আর ভেবে দেখ তো! আমি তোমাকে এই অব্দি ফলো করেছি! আমি ঠিক বাইরেই আছি! তুমি আর কখনই জুডিকে বিরক্ত করতে পারবে না! আমার কাছে একটা চিঠি লেখা আছে যেটা আমি তোমার শরীরে গেঁথে দেবো যেন সারা দুনিয়া বিশ্বাস করে যে অপ্টিমিস্টকে খুন করার পর তুমি নিজেকেও খুন করেছ! তুমি একটা বেকুব আর অপ্টিমিস্টও একটা বেকুব ছিল! যদি একজন সত্যি সত্যি অপটিমিস্ট হতে চায়, তাহলে একটাই পথ আছে: জয়ী হতে হবে! সব সময়ই জয়ী হতে হবে! ওপরে উঠতে থাকো এবং কখনও হেরে যেও না! শত্রুদের মেরে ফেলো এবং তুমি বেঁচে থাকো; যেন তোমার হাতেই ইতিহাস লেখা হয়!  বিদায় স্টিভ! রাল্ফ‌ের শাসন শুরু! এই তো আমি আসছি! ওহ! তোমাকে অনেক ভীত দেখাচ্ছে! এইত! শেষ! স্টিভ আর বেঁচে নেই! আমি এখন বাসায় যাব আর আমার প্রিয়তমা জুডিকে কিছু আশাবাদী ভালোবাসা দিবো!  এবং এখন থেকে এই কলাম আমার! সাপ্তাহিক বন্ধে যখন আমি আমার সংস্কৃত বই লেখার কাজ করব তখন আর এইসব ফালতু কোনও কাজ করতে হবে না!
ইতি,

বাঁচতে পেরে উৎফুল্ল একজন, যে কিনা কখনোই এতো ভালো বোধ করে নি, এ.কে.এ. নতুন অপটিমিস্ট

প্রিয় নতুন অপ্টিমিস্ট,

কিছুদিন আগে আমি আমার দশ বছরের বিয়ে করা স্বামীকে ছেড়ে নতুন একটা মানুষের কাছে চলে এসেছি। যদিও আমার ধারণা আমি ঠিক কাজই করেছি (আমার প্রাক্তন স্বামীর পুরুষাঙ্গ ছোট ছিল, পিঠ ভর্তি চুল ছিল আর সে ঠিক উপস্থাপন যোগ্য ছিল না)। কিন্তু আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে আমার মধ্যে কিছুটা অপরাধবোধ কাজ করে এটা নিয়ে। তোমার কোনও পরামর্শ আছে?
ইতি,

পুরোপুরি সুখী, প্রায় পুরোপুরি সুখী

প্রিয় প্রায় পুরোপুরি সুখী,

এটা নিয়ে ভেবো না! সব ঠিক আছে! আমি বলি কি, যখন তোমার নতুন স্বামী বাসায় আসবে, তখনই তাকে এমনভাবে ভালোবাসবে যেটা তুমি তোমার জীবনে আর কাউকে বাসো নি! এমন প্রেম তুমি তোমার স্বামীকে দেবে যেটা তুমি ওই বিরক্তিকর পরাজিত স্টিভকে দিতে ভাবতেও পারো নি কোনদিন!

প্রিয় নতুন অপ্টিমিস্ট,

বেশ! তাই করব! সত্যি বলতে কি ও মনে হয় বাসায় চলে এসেছে, দরজায় বেল বাজছে! আমি যাচ্ছি!
ইতি,
পুরোপুরি সুখী, সার্বিকভাবেই!

বিঃ দ্রঃ আচ্ছা তুমি কিভাবে জানো যে আমার প্রাক্তন স্বামীর নাম স্টিভ?

প্রিয় সার্বিকভাবেই,

এত নেতিবাচক হয়ো না তো! জুডি, তুমি কোনও কিছুর শুরুতেই এই কারণেই বিপদে পড়ে যাও! তুমি আসলে একটু বেশিই ভাবো! একটু চুপ থাকো আর আমি যাই বলি তাই কর! আমার কথা শোন! ইতিবাচক হও!  নতুন অপটিমিস্টিক দীর্ঘজীবী হোক! দরজা খোল জুডি, দরজাটা খোলো প্লিজ! যেন আমরা নতুন জীবন এক সাথে শুরু করতে পারি! আর বালিকা, আমার সাথে তর্ক করার কথা ভুলেও ভেবো না!

প্রিয় নতুন অপ্টিমিস্টিক,

ওকে! সুপার! অনেক ধন্যবাদ তোমার উপদেশের জন্য! ভেতরে এস রাল্ফ! হায় ঈশ্বর, তোমাকে দেখতে এমন রক্তিম লাগছে কেন? আর, সোনা, ও ঈশ্বর, তুমি হাতে লাঠি নিয়ে আছ কেন?
ইতি,

পুরোপুরি সুখী, সার্বিকভাবেই, যদিও এখন একটু ভীত, এ.কে.এ. জুডি

প্রিয় জুডি,

আমাদের আর কোনও সমস্যাই থাকবে না যদি তুমি আমার শ্রেষ্ঠত্ব এভাবে  স্বীকার কর যেন আমি সবসময় সুখী থাকি! আর এটা কোনও লাঠি নয়! এটা একটা ফুলের তোড়া! ঠিক? ঠিক কিনা বল জুডি? হুম, হুম এই এতখানি জায়গাই আছে আমাদের! তার মানে এই না যে আমি কোনও অভিযোগ করছি! আবার দেখা হবে তোমার সাথে! নিজের সম্পর্কে কোনও সন্দেহ রেখো না। আর যদি কখনও নিজেকে অবনত মনে হয়, ভর্ৎসনা করো।  যদি অন্য কেউ বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করে তোমাকে নিয়ে, তাদেরকে তীব্র তিরস্কার করো। তাতেও যদি তারা না থামে, তাদেরকে মারো তুমি, যদি দরকার হয় তাহলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, এমন কি মৃত্যুর পর পর্যন্ত তাদের মারো! এবং তাদেরকে ততক্ষণ পর্যন্ত মারতে থাকো যতক্ষণ না তাদের মরা হা করা মুখটা একটা সুখী আশাবাদী হাসিতে রূপান্তরিত না হয়! আর এইটাই আমার হুকুম! বিশ্বাস করো, তুমি তাদের এভাবেই ভালো করতে পারবে! দুষ্টামি করছিলাম আসলে! তুমি আসলেই স্পেশাল!
ইতি,
নতুন অপ্টিমিস্ট

 

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment