Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
March 28, 2024
Homeআন্তর্জাতিকআলোচিত সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ নিখোঁজ

আলোচিত সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ নিখোঁজ

আলোচিত সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ নিখোঁজ

বাংলা চ্যানেল নিউজ ডেস্ক: গেল প্রায় আট মাস ধরে কোনো হদিস মিলছে না সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ বিন্ত সৌদের। চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়। এরপর থেকে তিনি গৃহবন্দি হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য সুপরিচিত সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ বিন্ত সৌদ। বেশ কিছুদিন ধরে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো রকমের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই তাকে রিয়াদে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাজকন্যার ঘনিষ্ঠ একজন জানান, বাসমাহ চাইলেও তার বক্তব্য প্রকাশ করতে পারছেন না, কেননা তার সমস্ত যোগাযোগের ওপর নজর রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ঐ ব্যক্তি নামও প্রকাশ করতে চাননি।

বাসমাহ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সাংবাধিনিক সংস্কার এবং মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে আসছেন। তার মতো দেশটির রাজতন্ত্রের সমালোচকরা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্রোধের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজপরিবারের অনেককেই এজন্য হত্যা, গুম, কারাবন্দি ও হুমকির শিকার হতে হয়েছে।

বাসমাহর বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি।

চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ ও সৌদি কর্তৃপক্ষের সন্দেহ

সূত্র অনুযায়ী, কন্যাকে নিয়ে বিদেশ পালিয়ে যেতে পারেন এমন সন্দেহে চলতি বছরের মার্চে বাসমাহকে বন্দি করা হয়। চিকিৎসার জন্য তার সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল। আন্তজার্তিক গণমাধ্যমের ডয়চে ভেলের কাছে আসা নথি অনিযায়ী সুইস ডাক্তারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ১৮ ডিসেম্বর বাসমাহ কন্যাসহ জেদ্দা ত্যাগের ছাড়পত্র পান। কিন্তু ভ্রমণের দিনই দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় এবং উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে আনা হয় বলে জানান তার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইনজীবী লিওনার্ড বেনেট।

বেনেটে বলেন, দুই মাস পর থেকে ‘তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ জানে না তিনি কোথায় আছেন। আমরা প্রকৃতপক্ষে খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছি।’

বেনেট জানান, কয়েক দফা ফোন কল করার পর তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও তিনি তেমন কিছু বলেননি। বাসমাহর কথা শুনে মনে হয়েছে তিনি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বেনেট বলেন, বাসমাহর গন্তব্য সুইজারল্যান্ডের জেনেভা হলেও, যাওয়ার কথা ছিল তুরস্ক হয়ে। অঙ্কারার সাথে শত্রুতামূলক সম্পর্ক থাকায় রিয়াদ বিষয়টিকে দেখেছে সন্দেহের চোখে।

কোথায় আছেন বাসমাহ?

বাসমাহর ঘনিষ্ঠ সূত্রটি জানিয়েছে, ‘(পালিয়ে যাওয়ার) অভিযোগ সত্য কিনা তারা (কর্তৃপক্ষ) সেই তদন্ত শেষ করেছে। তারপরও এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, বাসমাহর বিরুদ্ধে দেয়া তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু কেন এখনো তাকে আটকে রাখা হয়েছে সেটি তাদের জানা নেই।

কে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে এই সূত্র। রাজকন্যার নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাসমাহর এক বন্ধু এবং ব্যবসায়িক সহকর্মী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, শাসক পরিবার ঠিকই জানে বাসমাহ কোথায় আছেন।

তিনি বলেন, ‘দুটি সূত্র অনুযায়ী (রাজপরিবারের) এক নম্বর ব্যক্তি (মোহাম্মদ বিন সালমান) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন৷ কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি, তিনি জানেন৷ আমরাও জানতে চাই সে (বাসমাহ) কোথায় আছে, কেন তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে?’

বাসমাহ নিয়মিত টুইটার ব্যবহার করলেও ফেব্রুয়ারির পর থেকে তিনি অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে নীরব রয়েছেন৷ জুলাই অবধি তার কর্মচারীরা কিছু ধর্মীয় পোস্ট দিয়েছেন৷

রাজপরিবারের সরব সদস্য

৫ সন্তানের জননী বাসমাহ ২০০৬ সাল থেকে সৌদি গণমাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখি করেন৷ কিন্ত তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ও জনগণের হয়ে কথা বলার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি দেশটির শাসকরা৷

বিবাহ বিচ্ছেদের পর ২০১০-২০১১-র দিকে তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান। পরিচিতি পান গণমাধ্যমে৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে আরব অঞ্চলের দুর্নীতি, মানবাধিকার এবং সম্পদের বৈষম্য নিয়ে কথা বলে ব্যাপক আলোচনায় আসেন বাসমাহ৷ সৌদি আরবে ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা হ্রাস, নারীদের অধিকারসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্কারের দাবিও জানান তিনি৷ প্রশাসনের সমালোচনা করলেও রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে অবশ্য কখনো সরাসরি কোনো কথা তাকে বলতে শোনা যায়নি৷

২০১৫ সালের দিকে সৌদি আরবে ফিরে আসেন বাসমাহ৷ লন্ডনের বেশ কিছু ব্যবসা তিনি গুটিয়ে ফেলেন৷ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিবিসি অ্যারাবিককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়েমেন যুদ্ধের ইতি টানতে সৌদি আরবের প্রতি আহবান জানান৷ এরপর থেকে তাকে আর গণমাধ্যমে দেখা যায়নি৷

রাজপরিবারের রাজনীতি

বাসমাহ সাবেক সৌদি রাজার ১১৫ সন্তানের একজন৷ এই পরিবারের একটি অংশকে বর্তমান রাজা সালমান ও তার পুত্রের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দী বলে মনে করা হতো৷

বর্তমান সৌদি রাজপরিবারের মোট ১৪ হাজার সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে ক্ষমতা বিস্তারের জন্য বেশ কয়েকটি বিভাজন রয়েছে৷

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের সৌদি রাজনীতি ও রাজপরিবার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাদাওয়ি আল-রাশিদ বলেন, রাজা আবদুল্লাহর শাসনকালে রাজকন্যারা সব ধরনের আলোচনায় অংশ নিতে পারতেন৷ এটা অনেকটা জনসংযোগের মতো ছিল৷ ললোয়াহ বিন্ত ফয়সাল আল সৌদ ছিলেন তেমনই একজন৷ তিনি বাইরের জনসংযোগমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সৌদি রাজ পরিবারের নারীদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ছিলেন৷ রাশিদ বলেন, এখন এই নারী পুরোপুরি নীরব হয়ে গেছেন৷

সালমান ও তার সন্তান ক্ষমতার বাইরে থাকা এইসব নারীকে একে একে নীরব করে দিতে চাইলে তা অবাক করার মতো কিছু হবে না বলেই মনে করেন তিনি৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment