ইউরোপে স্কুলপড়ুয়ারা ঝুঁকিতে
ইউরোপে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা করোনা মহামারীতে ঝুঁকিতে রয়েছে।
গতকাল প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইউরোপের স্কুলগুলোর বড়দিনের ছুটি শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও ওই অঞ্চলের সরকারগুলো এক ঘোষণায় বলেছিল যে, নিম্ন ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলো আরও দুই সপ্তাহ পর খুলতে পারে। অনলাইনেই শিক্ষা কার্যক্রম চলবে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সতর্কতা জানিয়ে বলেছিলেন, অবিলম্বে স্কুলগুলোকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া উচিত হবে।
জার্মানিতে করোনার নতুন ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকায় ফের স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে অনেক বিজ্ঞানীই এতদিন করোনাঝুঁকি থেকে স্কুলপড়ুয়াদের দূরে রেখেছিলেন।
কিন্তু এখন আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। শুরুর দিকের আক্রান্ত হওয়ার পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুরা কম আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এখন আর সেই বাস্তবতা নেই। আয়ারল্যান্ড এবং স্পেনে শিক্ষকদের ইউনিয়ন এবং কিছু স্থানীয় নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্কুল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। কয়েক কোটি মানুষকে নতুন লকডাউন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। দেশটিতে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আক্রান্তের হার আগের তুলনায় সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনার নতুন ধরনে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। কারণ, এই ধরন আগের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক। ইউরোপের অন্তত ১৫টি দেশে নতুন এই ধরনটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
ইউরোপ এখনও স্কুল খোলা বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। ব্রিটিশ গবেষক ডা. শামজ লাধানি সিএনএনকে গত মধ্য ডিসেম্বরে বলেছিলেন যে, ‘ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোতে সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার মানে যুক্তরাজ্যে সামাজিক পর্যায়ে সংক্রমণের মাত্রা ব্যাপক। স্কুলগুলোতে সংক্রমণ কম হচ্ছে এমনটা ব্রিটিশরা বিশ্বাস করতে চাইলেও বাস্তবে ঘটছে ঠিক তার উল্টো।’
স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার যে নিয়ম বেঁধে দিয়েছে, তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা সম্ভব হয় না।
তবে স্কুল বন্ধ রাখা প্রশ্নে ভিন্ন মতও আছে। যুক্তরাজ্যের কিছু শিক্ষক ও মেডিকেল বিশেষজ্ঞ মনে করেন, স্কুল বন্ধ করে দিয়েও করোনাভাইরাসকে ঠেকানো যাবে না। সরকারের ব্যর্থতার কারণেই স্কুলগুলো অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
ইটালিতে করোনায় বহু মানুষ মারা গেলেও দেশটি চেষ্টা করছে আগামী সপ্তাহে যেন স্কুল খুলে দেওয়া যায়। ইটালির বিশেষজ্ঞরা সরকারকে সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হলে সংক্রমণের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। কারণ হিসেবে তারা শিশুদের উপসর্গহীন সংক্রমণের কথা উল্লেখ করেন।❐