Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
April 20, 2024
Homeআন্তর্জাতিকজাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে সদস্য দেশসমূহের উপস্থিতিতে উন্মুক্ত ভোটের মাধ্যমে আবারও রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে বিপুল ভোটে একটি নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এবারের নিন্দা প্রস্তাবটি মিয়ানমারের ওপর রাজনৈতিক চাপকে শুধু জোরদারই করবে না বরং তা অব্যাহত রাখতে ভূমিকা রাখবে।
নিন্দা প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয় ১৪০টি দেশ। বিপক্ষে ৯টি ও পক্ষ অবলম্বনবিহীন ভোট প্রদান করে ৩২টি দেশ।
 
নিন্দা প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর এ বিষয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থানীয় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
 
এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জানিয়েছে, ‘নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শিরোনামে আনীত এবারের নিন্দা প্রস্তাবটির বিশেষ দিক হলো এতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন উপায়গুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এবং মিয়ানমারকে কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’
 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিন্দা প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যা নিরাপত্তা পরিষদের ওপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করবে। তাছাড়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যর্থতার জন্য এতে মিয়ানমারকে দায়ী করে স্পষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন ও প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিসহ সুনির্দিষ্ট ১০টি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এতে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতকে বাস্তব পরিস্থিতির বিষয়ে রিপোর্টিং বাধ্যতামূলক করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে প্রদত্ত বক্তব্যে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে যে সকল প্রস্তাবনা দেন তার বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা রেজুলেশনটিতে স্থান পেয়েছে এবং ‘রোহিঙ্গা মুসলিম’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে -যা গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।’
 
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে রেজুলেশনটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এটি সমর্থন করতে সদস্য দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটিকে আমরা শুধু একটি দেশ-ভিত্তিক নিন্দা প্রস্তাব হিসেবেই দেখছি না, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি দায়বদ্ধতার দলিল যার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তন।’
 
তিনি এই সমস্যার সমাধানে দ্বি-পাক্ষিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার বিশেষ গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেন।
 
সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিজে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে বিবেচনাধীন পদক্ষেপসমূহের বাস্তবায়ন গণহত্যা বলে অভিহিত এই সহিংস অপরাধের প্রকৃত দোষীদের দায় নিরূপণের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করতে ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন মোমেন।
 
এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ‘মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন’, ‘রাখাইন প্রদেশে বেসামরিক তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় প্রতিষ্ঠা’ এবং ‘প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ ও আস্থা তৈরি করা’-সহ যে সকল প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। রাষ্ট্রদূত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ সকল প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
 
তৃতীয় কমিটিতে গৃহীত নিন্দা প্রস্তাবটি আগামী ডিসেম্বর মাসে সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতে উপস্থাপিত হবে। ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে রেজুলেশনটি এবার উপস্থাপন করে যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিনল্যান্ড।
 
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন শুরু থেকেই এই নিন্দা প্রস্তাবটি প্রক্রিয়াকরণ, উপস্থাপন ও গ্রহণের ক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
 
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের উদ্ভূত পরিস্থিতির উপর ঐ বছর থেকেই নিয়মিতভাবে ওআইসি’র নেতৃত্বে মিয়ানমারের মানবাধিকার সঙ্কট ইস্যুতে তৃতীয় কমিটিতে এই নিন্দা প্রস্তাব আনা হচ্ছে। গত বছর থেকে ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যৌথভাবে তৃতীয় কমিটিতে নিন্দা প্রস্তাবটি উত্থাপন করছে এবং প্রতিবারই বিপুল ভোটে তা গৃহীত হচ্ছে। এবারের রেজুলেশনটি মিয়ানমারের উপর রাজনৈতিক চাপকে শুধু জোরদারই করবে না বরং তা অব্যাহত রাখতে ভূমিকা রাখবে।
 
ওআইসি ও ইইউ’র সদস্যরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও মেক্সিকোসহ মোট ১০২টি দেশ রেজুলেশনটি কো-স্পন্সর করে এবং বিপুল ভোটাধিক্যে এটি গৃহীত হয় যা রোহিঙ্গা বিষয়ে বিশ্ব জনমতের জোরালো প্রতিফলন।
 
নিন্দা প্রস্তাবটি ভোটে যাওয়ার আগে এর পক্ষে ভোট দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে বক্তব্য রাখে ফিনল্যান্ড (ইইউ), কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সৌদি আরব ও সুইজারল্যান্ড। ভোট গ্রহণের আগে ও পরে দেওয়া বক্তব্যে প্রায় সকল সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সংরক্ষণ, টেকসই পুনর্বাসন, জাতিগত নিধন ও গণহত্যার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ, সহিংসতার দায় নিরূপণ ও অপধারীদের বিচারের মুখোমুখি করা এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানসহ মিয়ানমারে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিন্দা প্রস্তাবটি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
 
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে গৃহীত বৈশ্বিক পদক্ষেপসমূহের মধ্যে এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেন তারা। তাছাড়া এই নিন্দা প্রস্তাব সংকটটির সমাধানে অন্যান্য অংশীজনদেরকে উৎসাহিত করবে এবং যে সকল দেশ এখনও এতে নেতিবাচক ভোট দিচ্ছে তাদেরকে নৈতিক চাপের মধ্যে ফেলবে বলেও মন্তব্য করেন এ সকল কূটনীতিক। তারা সকলেই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান ও অব্যাহতভাবে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment