দেবর -ভাবীর প্রেমে বাধা দেওয়ায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা
দেবর -ভাবীর প্রেমে বাধা দেওয়ায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করা হয় পাবনার ঈশ্বরদীর কাপড় ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন (৩৫) কে। বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর দেবর সাব্বির হোসেন (২৫) ও নিহতের স্ত্রী মীম খাতুন (২০) নাটকও সাজান।
বুধবার দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিহত শাকিলের স্ত্রী মীম খাতুন পাবনার আদালতের বিচারক মিলন আলীর কাছে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং ছোট ভাই সাব্বির হোসেন পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ক্লু ছাড়া মামলা হওয়ার পরেও মাত্র ৪৮ ঘন্টায় ব্যবসায়ী শাকিল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন পুলিশের একটি বড় সাফল্য।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেবর সাব্বিরের সঙ্গে পরকীয়া প্রেম চলছিল ভাবী মীমের সঙ্গে। শাকিলকে হত্যা করে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলেন মীম ও সাব্বির। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাব্বির ওড়না দিয়ে মীমের দুই পা, দুই হাত ও মুখ বেঁধে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলে যান।
মহিবুল ইসলাম বলেন, এ সময় সাব্বির মীমের সঙ্গে গোপনে কথা বলার জন্য তাকে দেওয়া মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যান। বাসা থেকে চাবি নিয়ে গিয়ে মেইন গেট খুলে বের হওয়ার সময় চাবিটি এক বাসা পরে প্রাচীরের দেওয়ালের ওপর রেখে দেন। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করল পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, ২৮ মে ভাড়া বাসায় খুন হন ঈশ্বরদীর কাপড় ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন। কিন্তু এই মামলার কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। হত্যার পরপরই মীম ও সাব্বিরকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে দেবর-ভাবী দুজনই বলেন, আমরা একে অপরকে চিনি না। মীম পুলিশকে জানান, ৫ থেকে ৬ জন যুবক এসে তার হাত-পা বেঁধে তার স্বামীকে হত্যা করে ঘরে তালা দিয়ে চলে যায়। পুলিশ এই কথার কোনো কূল-কিনারা পারছিল না। মীমের আলাদা একটি মোবাইলে সিমের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে সকল অজানা তথ্য।
পুলিশ সুপার বলেন, ওই সিম থেকে শুধু সাব্বিরের আলাদা একটি সিমে কথা হয়েছে ; অন্য কোনও নম্বরে একটি কল আসেওনি; করাও হয় নি। মূলত পরকীয়ার কারণেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়েছে বলে স্বীকারোক্তিতে মীম আদালতকে বলেন।
গত ২৮ মে রাত ১২টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী শহরের সরকারি কলেজের সামনে রূপনগরের (মাহাতাব কলোনি) ভাড়া বাসায় শাকিলকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ৩০ মে দুপুরে নিহতের মামা কোরবান আলী বাদী হয়ে মামলা করেন।❐