নির্বাচনের ১৩ দিন, ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট নিশ্চিতের কাজ
নির্বাচনের আর ১৩ দিন বাকি থাকতে বাইডেনের মাথায় ৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট নিশ্চিতের চিন্তা কাজ করছে। ২০১৬ সালে পপুলার তথা জনগণের ভোটে জয়ী হয়েও ৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের অভাবেই বিজয় হাতছাড়া হয়েছিল হিলারি ক্লিনটনের। তিনি পেয়েছিলেন ২৩২টি ইলেক্টোরাল ভোট।
অন্যদিকে পপুলার ভোটে হেরেও ৩০৬ ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে রাজনীতিতে নবাগত ডোনাল্ড ট্রাম্প হারিয়ে দেন অভিজ্ঞ হিলারিকে। এ কারণে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়তি ৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা ডেমোক্রেট শিবিরে। সিএনএন।
ডেমোক্রেট অধ্যুষিত রাজ্যগুলো ব্লু ওয়াল নামে পরিচিত। আর এই ব্লু ওয়ালের তিনটি রাজ্য মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে সামান্য ব্যবধানে জিতে যান ট্রাম্প। তার শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী নীতির কারণেই এমনটি হয়েছিল।
এ কারণে এবার ডেমোক্র্যাটদের গত বারের ২৩২টি ইলেক্টোরাল ভোট ঠিক রাখার পাশাপাশি এ তিন রাজ্যের ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে বাইডেন শিবিরে। মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে মোট ইলেক্টোরাল ভোট আছে ৪৬টি।
মিশিগানে ১৬, পেনসিলভানিয়ায় ২০ ও উইসকনসিনে ১০টি ইলেক্টোরাল ভোট। গত বারে হিলারির পাওয়া ২৩২টি ইলেক্টোরাল ভোট ঠিক রাখার পাশাপাশি ১৯৯২ সালের পর থেকে ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত কখনও না হারা তিনটি রাজ্যে বিজয়ের ধারায় ফিরতে পারলে বাইডেন পেয়ে যাবেন ২৭৮টি ইলেক্টোরাল ভোট।
৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি হলেই হোয়াইট হাউস নিশ্চিত। এটিই হচ্ছে বাইডেনের হোয়াইট হাউসে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ হিসাব।
এছাড়া অন্যভাবেও বাইডেনের জন্য প্রয়োজনীয় বাড়তি ৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোট আসতে পারে। সেক্ষেত্রে গেল বার সামান্য ব্যবধানে ট্রাম্পের জেতা ছয়টি অঙ্গরাজ্যের যে কোনো তিনটিতে জয়লাভ করা।
এর মধ্যে মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন ছাড়া আছে ফ্লোরিডা (ইলেক্টোরাল ভোট ২৯টি), অ্যারিজোনা (ইলেক্টোরাল ভোট ১১টি) ও নর্থ ক্যারোলিনা (ইলেক্টোরাল ভোট ১৫টি)।
এছাড়া আছে নেবরাস্কার দ্বিতীয় কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টও ভূমিকা রাখতে পারে বাইডেনের জয়ে। নেবরাস্কা প্রতি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টে জয়ের প্রার্থীকে একটি করে ইলেক্টোরাল ভোট দেয়।
তবে ডেমোক্রেট অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে জয় পাওয়াই সহজ। জনমত জরিপেও দেখা যাচ্ছে মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে বেশি ব্যবধানে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন বাইডেন। মিশিগানে বাইডেন ৮ এর বেশি পয়েন্টে, উইসকনসিনেও ৮ এর বেশি পয়েন্টে এবং পেনসিলভানিয়ায় ৭ এর বেশি পয়েন্টে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।
এছাড়া নেবরাস্কার দ্বিতীয় ডিস্ট্রিক্টে ৭ এর বেশি পয়েন্টে, আরিজোনায় ৪ এর বেশি পয়েন্টে, ফ্লোরিডায় ৪ এর বেশি পয়েন্টে এবং নর্থ ক্যারোলিনায় ৩ এর বেশি পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। ৭ থেকে ৮ পয়েন্টে এগিয়ে থাকা রাজ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট লেক অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
অন্যদিকে ৩ থেকে ৪ পয়েন্টে বাইডেনের এগিয়ে থাকা রাজ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সান বেল্ট অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। তবে নির্বাচনের দাবার ঘুঁটি হতে পারে পেনসিলভানিয়া। এই অঙ্গরাজ্যটির ইলেক্টোরাল ভোটই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মূল প্রভাবক হতে পারে বলে মনে করছেন মার্কিন বিশ্লেষকরা।
আর ট্রাম্পকে জিততে হলে ডেমোক্রেট অধ্যুষিত বড় রাজ্যগুলোতে এবারও জয় নিশ্চিত করতে হবে। এটি যদি তিনি করতে না পারেন, তবে বাইডেনই হতে যাচ্ছেন সম্ভবত পরবর্তী চার বছরের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট।❐