Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
April 16, 2024
Homeঅর্থনীতিরিটার্ন জমা না দিলে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন

রিটার্ন জমা না দিলে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন

রিটার্ন জমা না দিলে যেসব সমস্যায় পড়তে পারেন

বাংলাদেশে আয়কর দেন দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ মানুষ। দেশে টিন নম্বরধারী ব্যক্তির সংখ্যা ৪০ লাখের বেশি এবং তা দিনদিন আরও বাড়ছে কিন্তু আয়কর জমার অর্থ সেই অনুপাতে বাড়ছে না। ২০ থেকে ২২ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দেন– এসব তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের।

এবছর এখনো পর্যন্ত ৩০শে নভেম্বর আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার শেষ সময়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবছর আয়কর রিটার্ন মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। বেশ কয়েক বছর হল অনেকেই আয়কর মেলার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু এবার অনেকেই টিন নম্বর থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন জমা দেন নি।

এর ফলে আপনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। জেনে নিন সেগুলো কী এবং তা সমাধানের উপায়।

রিটার্ন জমা না দেয়ার পরের অভিজ্ঞতা

আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে যে কত রকমের ঝামেলা হতে পারে তা অনেকেই জানেন না। এমনকী আগে করযোগ্য ছিলেন কিন্তু পরে সেরকম আয় আর নেই এমন ব্যক্তিকেও বিপাকে পড়তে হতে পারে। নাম পরিচয় প্রকাশ না করে একজনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলছি। ঢাকার এক চাকুরিজীবী নিয়মিত কর দিতেন এবং সময়মত রিটার্নও জমা দিতেন।

এক পর্যায়ে বেশ কিছুদিন তার চাকরি ছিল না। বেশ কিছুদিন পর তিনি খুব অল্প বেতনে নতুন যে চাকরি পেলেন তখন আর তিনি করযোগ্য ছিলেন না। প্রথমত আয় নেই, তারপর আর করযোগ্য নন চিন্তা করে পরপর তিনবছর রিটার্ন জমা দেননি তিনি।

কিন্তু সমস্যা শুরু হল যখন তিনি একটা ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য ট্রেড লাইসেন্স করাতে গেলেন।

“টিন নম্বর যেহেতু ছিল সেটা হালনাগাদ হতে হবে, তা না হলে লাইসেন্স পাওয়া যাবে না। কিন্তু ব্যবসা চালু করতে অনেক সমস্যা দেখে সিদ্ধান্ত বদল করে বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম। সেখানে আরেক ঝামেলা। ভিসার জন্য সর্বশেষ তিন বছরের ট্যাক্স ফাইল চাওয়া হল। তখন আয়কর বিষয়ক প্রফেশনাল কারো কাছে না গিয়ে উপায় ছিল না,” বলেন তিনি।

একজন আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে, শুনানি করে, একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ জমা দিয়ে তবেই তিনি রিটার্ন জমা দেয়ার ঝামেলা মেটাতে পেরেছেন। কিন্তু তারপরও ঝামেলা শেষ হয়নি। সনদ নিতে গিয়ে তাকে দফায় দফায় আয়কর কার্যালয়ে যেতে হয়েছে।

এমন একজনকে পাওয়া গেল যিনি নির্ধারিত সময়ের মাস চারেক পর রিটার্ন দাখিল করতে গিয়ে জানলেন কেন তিনি সময়মত কাজটি করেননি তার জবাব দিতে শুনানি হবে। শুনানির নোটিস পেয়েছেন কিন্তু এরপর আট মাস পার হয়ে নতুন বছরের রিটার্ন জমা দেয়ার সময় চলে এসেছে তবুও তিনি শুনানির নোটিসেরই জবাব দেননি।

রিটার্ন জমা না দিলে যেসব বিপাকে পড়তে পারেন

ঢাকার একজন আয়কর আইনজীবী মিজানুর রহমান বলছেন, একজন ব্যক্তি রিটার্ন জমা না দিয়ে বা সমস্যা সমাধান না করে তিনি নিজের জন্য বড় ধরনের ঝামেলার পথ তৈরি করছেন।

কী ধরনের ঝামেলা তৈরি হয় তার বর্ণনা দিয়ে রহমান বলছেন, “যদি কোন ব্যক্তি সময়মত আয়কর রিটার্ন দিতে ব্যর্থ হন এক্ষেত্রে অধ্যাদেশ অনুযায়ী এক হাজার টাকা অথবা আগের বছরের ট্যাক্সের দশ শতাংশ জরিমানা করা যাবে। এদুটির ভেতরে যেটি পরিমাণে বেশি সেই অংকটি পেনাল্টি হতে পারে।”

তিনি আরও বলছেন, কয়েক বছর ধরে যদি কেউ রিটার্ন দাখিল না করেন তাহলে ওই দশ হাজার টাকা ছাড়াও যতদিন ধরে তিনি রিটার্ন দেননি ওই পুরো সময়ের দিনপ্রতি ৫০ টাকা করে জরিমানা হতে পারে। তবে তা যতদিনই হোক না কেন নতুন করদাতা হলে সবমিলিয়ে পরিমাণ পাঁচ হাজার টাকার উপরে নেয়া হবে না।

আর পুরনো করদাতা হলে তার যে পরিমাণ অর্থ আয়কর হয়েছে সেটিসহ ওই অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি দিতে হতে পারে।

যেভাবে সমাধান করবেন

আয়কর আইনজীবী মিজানুর রহমান বলছেন, “রিটার্ন জমা না দিলে যদি জরিমানা এবং অন্যান্য ঝামেলায় পড়তে হয়, তা থেকে মুক্তির অবশ্যই সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে প্রতি বছর সময় মতো রিটার্ন জমা দেয়া।”

কিন্তু কোন কারণে যদি তা না দিতে পারেন তাহলে রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য দুই মাস পর্যন্ত বাড়তি সময়ের আবেদন করতে পারেন। এই আবেদন করতে হবে ডেপুটি কমিশনার অফ ট্যাক্সেস বরাবর। যদি বাড়তি সময় দেয়া হয় তাহলে রিটার্ন জমা দেবার সময় জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে হবে না।

মিজানুর রহমান বলছেন, “যদি কেউ বাড়তি সময় না নেয় তাহলে তাকে পেনাল্টি দেবার আগে, কী কারণে রিটার্ন দেননি বা দিতে পারেননি সেটা ব্যাখ্যা করার জন্য অবশ্যই শুনানির সুযোগ দিতে হবে।”

তিনি বলছেন, শুনানির জন্য করদাতাকে নোটিস পাঠানো হয়। অনেক ক্ষেত্রেই একের অধিক শুনানির দরকার হতে পারে। যদি করদাতা কোন গ্রহণযোগ্য কারণ, কাগজপত্র দেখাতে পারেন তাহলে খুব একটা ঝামেলায় তাকে পড়তে হয় না।

কর্তৃপক্ষ কারণ শুনে সন্তুষ্ট হলে জরিমানা নাও করতে পারেন।

শুনানিতে করদাতা নিজে অংশ নিতে পারেন অথবা সনদপ্রাপ্ত আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট নিয়োগ দিতে পারেন। সেজন্য অবশ্য আরও বাড়তি অর্থ খরচ হবে। জরিমানা হলে তার বিপক্ষে করদাতার আপিলের সুযোগ রয়েছে। কর কমিশনার ও ট্রাইব্যুনালে আপিল করার পরও যদি করদাতা হেরে যান তাহলে হাইকোর্টেও আপিল করতে পারেন।

জরিমানার অর্থ জমা দেয়ার জন্য কর অফিসের একটি নির্ধারিত ফর্ম রয়েছে। সেটি পূরণ করে সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকে ক্যাশ, অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক, পে অর্ডার করে এই অর্থ জমা দিতে হবে। অথবা ডেপুটি কমিশনার অফ ট্যাক্সেসকেও সরাসরি অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক ও পে অর্ডার দিতে পারেন।

যারা একদমই কর দেন না

আর যারা করযোগ্য হওয়ার পরও একেবারেই কর দেন না, তাদের ক্ষেত্রে, যে পরিমাণ কর তিনি দেননি সেটি ছাড়াও, তাকে আরও ২৫ শতাংশ বাড়তি জরিমানা করার বিধান রয়েছে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে সম্পদ জব্দ করার সুযোগও রয়েছে। তবে তা খুব একটা হয় না বলে আইননজীবী মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।

যদি কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী কর জমা না দেয় তাহলে অনেক সময় তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার উদাহরণও বেশ রয়েছে।

বিবিসি

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment