রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায়ও বিদেশ সফর, খরচ ১৫ কোটি ২৪ লক্ষ
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় নেওয়া একটি প্রকল্পেও প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফরের প্রস্তাব করা হয়েছে। ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মাল্টি-সেক্টর’ প্রকল্পটি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ফলে বাড়ছে এর মেয়াদ ও ব্যয়। এক্ষেত্রে শুধু বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
আবার ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, ট্রেনিং, ওয়ার্কশপ, সভা এবং বৈদেশিক প্রশিক্ষণ মিলে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এতে মোট খরচ হবে ১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এছাড়া আছে মোটা অংকের পরামর্শক ব্যয়ও। অনুদানের টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয়ও বাড়ছে প্রকল্পটির।
আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে এ প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব। গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, বিদেশ সফরের প্রয়োজন রয়েছে। এটাকে সংকীর্ণভাবে দেখলে হবে না। মনে রাখতে হবে অনুদানের টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তাছাড়া বিশ্বের যেসব দেশ রিফিউজি হ্যান্ডলিং করছে তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নেয়া প্রয়োজন। কেননা প্রায় ৫০ জনের মতো সরকারি কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরাসরি কাজ করছেন। এখানে শিশুদের মনোবল ফিরিয়ে আনা, ধর্ষিত নারীদের মানসিক উন্নয়ন, সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিচ্ছন্নতাসহ প্রায় ৩৪টি ইস্যু রয়েছে। এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরামর্শকও প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমরা এসব বিষয় বিবেচনা করেই উন্নয়ন সহযোগীদের পরামর্শ নিয়েই প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ দিয়েছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনুদানের টাকা বলেই যেনতেন খাতে খরচ করা হবে, এটা মোটেও ঠিক নয়। এক্ষেত্রে বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়। বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে এত অর্থ ব্যয় করাটা অপচয়। প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে, সেক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অভিজ্ঞদের এদেশে এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। সেটি বাস্তবতার ভিত্তিতে আরও কার্যকর হবে। তবে মনে রাখতে হবে যে কোনও প্রকল্পে দৃশ্যমান কোনও রিটার্ন যেসব খাতে আসবে না সেসব খাতে যত কম খরচ করা যায় ততই ভালো। ওই টাকা দিয়ে স্কুল, রাস্তা অন্যান্য অবকাঠামো খাতে লাগালেই প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হয়।❐