প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই চ্যালেঞ্জের মুখে নেতানিয়াহু
ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত ইসরাইলবিরোধী প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
প্রস্তাবটিকে ‘ঘৃণ্য’ বলে অভিহিত করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। তবে এ প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন। খবর রয়টার্সের।
গৃহীত প্রস্তাবে ইসরাইলের দখলদারের কারণে ফিলিস্তিনিদের অধিকার কীভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি আনা হয়। প্রস্তাবটি ভোটাভুটির মাধ্যমে গৃহীত হয়।
প্রস্তাবটি ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। উগ্র ডানপন্থি নেতা নেতানিয়াহু গত বৃহস্পতিবার ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
ক্ষমতাগ্রহণের পরই তিনি ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে নতুন করে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি অঞ্চল পাঁচ দশক ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে ইসরাইল।
এ অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে ইসরাইল ‘কী ধরনের বিচারের মুখে পড়বে’ সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইজিসে) মতামত জানতে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতিসংঘে। ওই সময় ইসরাইলের বিরোধিতা করে ফিলিস্তিনের সপক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশসহ ৮৭ দেশ ওই সময় ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে। তবে ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলসহ ২৬ দেশ। আর ভোটদানে বিরত ছিল ৫৩ দেশ।
সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ায় জাতিসংঘে এ প্রস্তাব পাস হয়েছে। এ প্রস্তাব পাস হওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন সেই সঙ্গে একে নিজেদের বিজয় হিসেবেও উল্লেখ করেছে। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— ‘এর মাধ্যমে ইসরাইলের অপরাধ উন্মোচিত হবে।’
তবে আইসিজে যে মতামত দেবে, গুরুত্বের বিচারে তা যথেষ্ট হলেও সেটি বাস্তবায়নের ক্ষমতা তাদের নেই।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেওয়া ৮৭ দেশ হলো— বাংলাদেশ, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, আর্জেন্টিনা, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বাহামাস, বাহরাইন, বার্বাডোস, বেলজিয়াম, বেলিজ, বলিভিয়া, বসতওয়ানা, ব্রুনাই দারুসালাম, কম্বোডিয়া, চিলি, চীন, কলম্বিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, জিবোতি, মিসর, এল সালভাদর, গ্যাবন, গ্রেনাডা, গিনি, গিনি-বিসাউ, গায়ানা, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, জর্ডান, কাজাখস্তান, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাওস, লেবানন, লেসোতো, লিবিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মাল্টা, মরিশানিয়া, মরিশাস, মেক্সিকো, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নিকারুগুয়া, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, প্যারাগুয়ে, পেরু, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, সেন্ট কিটস-নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট, সৌদি আরব, সেনেগাল, সিয়েরা লিয়ন, সিঙ্গাপুর, স্লোভেনিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, সুদান, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, তিউনিশিয়া, তুর্কি, তুর্কমেনিস্তান, উগান্ডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
প্রস্তাবের বিপক্ষে ২৬ দেশের মধ্যে রয়েছে— যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, কোস্টারিকা, চেক রিপাবলিক, এস্তোনিয়া, জার্মানি, হাঙ্গেরি, গুয়েতেমালা, ইসরাইল, ইতালি, কেনিয়া, লাইবেরিয়া, লিথুয়ানিয়া, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোওশেনিয়া, নাউরু, পালাউ, পাপুয়া নিউ গিনি, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য।
এ ছাড়া ভোটদানে বিরত থাকা ৫৩ দেশ হচ্ছে— অ্যানডোরা, বেলারুশ, বসনিয়া, বুলগেরিয়া, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ডমিনিকান রিপাবলিক, ইকুয়েডর, ইরিত্রি, ইথিওপিয়া, ফিজি, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ঘানা, গ্রিস, হাইতি, হন্ডুরাস, আইসল্যান্ড, ভারত, জাপান, কিরিবাতি, লাটভিয়া, লিশচেনস্তেন, মালাই, মোনাকো, মন্তেনেগ্রো, মিয়ানমার, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পানামা, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, মলদোভা, রুয়ান্ডা, সামোয়া, সান মারিনো, সার্বিয়া, স্লোভাকিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ সুদান, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, তানজানিয়া, উরুগুয়ে এবং ভানুয়াতু।