শরণার্থী রুখতে করোনাকালের আইন বলবৎ থাকছে যুক্তরাষ্ট্রে
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছেন। বাইডেন প্রশাসন অবশ্য এই আইন তুলে নেওয়ার কথা বলেছিল। ‘টাইটেল ৪২’ আইনটি নিয়ে আমেরিকায় দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে।
এই আইনের সাহায্যে যে কোনো শরণার্থী, উদ্বাস্তু, অ্যাসাইলামসিকার, অভিবাসন প্রত্যাশীকে বিনা নোটিসে দেশ থেকে বের করে দেয়া যায়। সীমান্তে আটকে দেওয়া যায় শরণার্থীদের। ২০২০ সালে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন করোনাকে সামনে রেখে এই আইনটি বলবৎ করেছিল।
করোনা পরবর্তী সময়ে আইনটি জারি থাকবে কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। বাইডেন প্রশাসন আইনটি তুলে দিতে চাইলেও ১৯টি সীমান্তবর্তী রাজ্য এর পক্ষে সওয়াল করে। প্রতিটি রাজ্যই রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকে।
আদালত শেষ পর্যন্ত ৫-৪ ভোটে আইনটি আপাতত বলবৎ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী যে সমস্যাগুলোর কথা রাজ্যগুলো বলছে, তার সঙ্গে করোনার কোনো সম্পর্ক নেই। ফলে করোনার আইন জারি রেখে সীমান্তের সমস্যা মেটানোর যে ভাবনা তারা জানিয়েছে, তা অর্থহীন।
১৯৪৪ সালে আমেরিকায় প্রথম বিতর্কিত ‘টাইটেল ৪২’ আইনটি পাশ হয়। গণস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এই আইন তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আইনটি প্রথম বলবৎ হয় ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের হাত ধরে।
এই আইনের সাহায্যে অতি সহজেই ভিসাহীন আমেরিকাবাসীকে বিনা নোটিসে দেশ থেকে বিতাড়িত করা যায়। এখনো পর্যন্ত এই আইন দুই দশমিক পাঁচ মিলিয়ন বার প্রয়োগ হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছে প্রশাসন। এই আইনের সাহায্যে বহু শরণার্থীকে আমেরিকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
আইনজ্ঞদের বক্তব্য, শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে আমেরিকায় নানা সমস্যা আছে। মঙ্গলবারও (২৭ ডিসেম্বর) মেক্সিকো সীমান্তে হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীরা ভিড় জমিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে ভাবতেই হবে।
কিন্তু ‘টাইটেল ৪২’ অত্যন্ত খারাপ আইন। অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করার সুযোগ থাকে এই আইনে। করোনার সময় তা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। করোনা পরবর্তীকালে সে কারণেই আইনটি তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।