আইসিসির দুই শীর্ষ কর্মকর্তার পদত্যাগ
সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে বিশৃঙ্খল আচরণের জেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) শীর্ষ দুই কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। আগামী শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় বসবে আইসিসির বার্ষিক সম্মেলনের আগে দুই জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তার সরে দাঁড়ানোর ঘটনাকে বড়সড় ধাক্কাই বলা যেতে পারে।
শীর্ষ দুই কর্মকর্তা হলেন- আইসিসির হেড অফ ইভেন্ট ক্রিস টেটলি এবং মার্কেটিং ও কমিউনিকেশনের মহাব্যবস্থাপক ক্লেয়ার ফারলং।
যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ম্যাচগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থ খরচ করা হয়েছে। এ নিয়ে আইসিসির পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজন সদস্য প্রশ্ন তুললে পরিচালক পঙ্কজ খিমজি বিশ্বকাপে আয়-ব্যয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব জানতে চেয়ে সব সদস্যের কাছে চিঠি পাঠান এবং তদন্তের আহ্বান জানান। ধারণা, শ্রীলঙ্কায় বসতে চলা সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হবে এবং বিষদভাবে তদন্ত হওয়ারও সম্ভাবনা আছে। তার আগেই নিজেদের পদত্যাগপত্র জমা দিলেন ফারলং ও টেটলি।
এদিকে ক্রিকবাজ অবশ্য আইসিসির বরাতে জানিয়েছে, ফারলং ও টেটলি কয়েক মাস আগেই পদত্যাগ করেছেন। এরপরও তাঁরা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে গেছেন যেন নতুন কেউ এই দুই পদে যোগ দেওয়ার পর সবকিছু বুঝে উঠতে কিছুটা সময় পান এবং আইসিসির দৈনন্দিন কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে। ফারলং ও টেটলি শ্রীলঙ্কায় বসতে চলা বার্ষিক সম্মেলনেও উপস্থিত থাকবেন।
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই অর্থের অপচয় করা হয়েছে। তারা শুধু একটি দিক সক্রিয় রাখার জন্য হাজার হাজার ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু (ক্রিকেটপ্রেমীদের) দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বকাপ নিয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের ইচ্ছেমতো টাকা ঢেলেছে।’
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ডের ওই কর্মকর্তা ক্রিস টেটলির বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তার দাবি, ব্রেট জোন্স টেটলির ঘনিষ্ঠ বলেই তাকে বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র পর্বের আয়োজক কমিটির প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অথচ সহ–আয়োজক হয়েও মার্কিন বোর্ডের কারও কথা শোনা হয়নি, ব্রেট জোন্স হঠাৎ কোত্থেকে এল? সে অস্ট্রেলিয়ায় থাকত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে। এসেই প্রধান নির্বাহী হয়ে গেল। আসলে সে ক্রিস টেটলির খুব ঘনিষ্ঠ। এ কারণে সে উচ্চ পদ বাগিয়ে নেওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই।
টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র পর্বের ম্যাচগুলো হয়েছে তিনটি ভেন্যুতে—নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়াম, ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়াম ও লডারহিলের সেন্ট্রাল বোয়ার্ড পার্ক। এর মধ্যে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামের ড্রপ ইন পিচ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এ মাঠে অনুষ্ঠিত আট ম্যাচের সব কটি ছিল ‘লো স্কোরিং’। অস্ট্রেলিয়া থেকে নিয়ে এসে সেখানে বসানো পিচগুলো ব্যাটসম্যানদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, ওই মাঠ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের দায়িত্বে থাকা ফারলং ও টেটলি গড়পড়তা মানের পিচ নিয়ে বেশ চাপে ছিলেন। আইসিসির সম্মেলনে এ ইস্যুতেও জবাবদিহি করতে হবে বলেই তাঁরা পদত্যাগ করেছেন।
সূত্র: দ্য স্পোর্টস টক।