আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হলো জাতিসংঘ সদরদপ্তরে
চতুর্থবারের মতো জাতিসংঘ সদরদপ্তরে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক আবহে পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দিবসটিতে ভাষার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সংঘাত, অহিষ্ণুতা ও সামাজিক উদ্বেগ মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ, অষ্ট্রেলিয়া, ক্যামেরুন, মেক্সিকো, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো মিশন এবং জাতিসংঘ সচিবালয় ও ইউনেস্কো নিউইয়র্ক অফিসের যৌথ উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় বেলা চারটায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ছাড়াও অনুষ্ঠানে সংস্থার সদস্য দেশসমূহের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সমাজকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত ভাষণ দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
আলোচনা পর্বে অংশ নেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি তিজানি মোহাম্মাদ বান্দে, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর স্থায়ী প্রতিনিধি মিজ্ পেনিলোপি আলথিয়া বেকলেস, অস্ট্রেলিয়ার চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিজ টিগান ব্রিঙ্ক, ক্যামেরুনের চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জাকাইরি সারজে রাউল নাইয়ানিদ, মেক্সিকোর চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হুয়ান স্যানডোভাল মেনডিওলিয়া, জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে সংস্থার বৈশ্বিক যোগাযোগ বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মিজ্ মেলিচ্ছা ফ্লেমিং, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও কনফারেন্স ব্যবস্থাপনা বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের পক্ষে পরিচালক সিসিলিয়া এলিজালদে।
এছাড়া ইউনেস্কো মহাপরিচালকের পক্ষে নিউইয়র্কস্থ ইউনেস্কো অফিসের পরিচালক মারিয়ে পাওলি রোউডিল মহাপরিচালকের বাণী পড়ে শোনান।
বরাবরের মতোই নিউইয়র্ক সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিও এ অনুষ্ঠানে বাণী প্রদান করেন যা পাঠ করা হয়।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘বাংলাদেশই বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলা রক্ষার জন্য যে সব ভাষা শহীদ প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের প্রতি সত্যিকারের সম্মান দেখানো হয়েছে ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৯৯ সালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে। স্বীকৃতি দানের এই পদক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রণী ভূমিকা ও বিচক্ষণ নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে প্রসংশার দাবি রাখে।’
এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ভাষার কোনো সীমানা নেই’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন ভাষার শক্তি সীমান্ত অতিক্রম করে যায় এবং ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ও তাদের সংস্কৃতিসমূহকে সংযুক্ত করে। লুপ্তপ্রায় ভাষা সংস্কৃতিসহ বিশ্বের সকল ভাষা ও সংস্কৃতির সুরক্ষার জন্য তিনি সদস্য রাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
স্থায়ী প্রতিনিধি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই ১৯৭১ সালে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। ♦