ইইউতে শরণার্থী পাঠিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে রাশিয়া: ফিনল্যান্ডের অভিযোগ
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির মাঝে ফিনল্যান্ডের স্থল সীমান্তে শরণার্থী পাঠিয়ে রাশিয়া চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠছে। দক্ষিণ প্রান্তে শরণার্থীদের ঢল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপ। ঠিক সেই সংকটের সময়ে উত্তরেও এমন অনুপ্রবেশ ঘটলে ইউরোপের ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ রয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ করে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে ফিনল্যান্ড।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে রাশিয়ার এই বিশাল স্থল সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। শুধু গত দুই সপ্তাহে মূলত, ইয়েমেন, সোমালিয়া, সিরিয়া ও ইরাক থেকে আসা পাঁচ শতাধিক আশ্রয়প্রার্থী ফিনল্যান্ডে প্রবেশ করেছে। শর্ত পূরণ করতে না পারলে তাদের রাশিয়ায় ফেরত পাঠানোও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে ফিনল্যান্ড সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়াচ্ছে।
আপাতত চারটি অবশিষ্ট সীমান্ত চেকপোস্টের মধ্যে দুটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা যাবে। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেটেরি অর্পো প্রয়োজনে আরো পদক্ষেপের ঘোষণা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত স্থলসীমা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
রাশিয়া ইইউকে সমস্যায় ফেলতে এমন আচরণ করছে বলে অভিযোগ উঠছে।
‘বেলারুশ মডেল’ নামে পরিচিত এই কৌশলের আওতায় শরণার্থীদের বিমান বা স্থলপথে ইইউর কাছাকাছি এনে তাদের সীমান্ত পেরোতে সহায়তা করা হয়। ২০২১ সালে পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া বেলারুশের বিরুদ্ধে এমন আচরণের অভিযোগ করেছিল। তাদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে বিমানযোগে মানুষ এনে তাদের স্থলপথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত পেরোতে উৎসাহ দিয়েছিল।
বেলারুশের দেখাদেখি রাশিয়াও এমন কৌশল গ্রহণ করছে—এমন অভিযোগ অবশ্য স্বীকার করতে প্রস্তুত নয় মস্কো। সোমবার সে দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ফিনল্যান্ডের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক কর্মকর্তার সূত্র অনুযায়ী, সব বহিরাগত ফিনল্যান্ডে আসতে না চাইলেও রুশ কর্তৃপক্ষ আচমকা গেট বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের বাধ্য হয়ে রাজনৈতিক আবেদন করতে হচ্ছে।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তো পোল্যান্ড সফরে গিয়ে বলেন, শর্ত পূরণে ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো অসম্ভব হয়ে উঠেছে। ফলে একবার সীমান্ত পেরিয়ে এলেই সেখানে থাকার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তিনি শেঙেন এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় স্তরে সাধারণ সমাধানসূত্রের ডাক দেন।
নিনিস্তোর মতে, কোনো দেশের পক্ষে একা এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এর ঠিক পরেই হয়তো প্রতিবেশী কোনো দেশকে এমন সমস্যায় পড়তে হবে। ফিনল্যান্ডকে এ ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে চায় পোল্যান্ড।