ইউনেস্কো ও ব্রাজিলে যৌথ উদ্যোগে মহান একুশে উদযাপন
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে ইউনেস্কো ও ব্রাজিল দূতাবাস। এ বছর ইউনেস্কো দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে ‘প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বহুভাষায় জ্ঞানার্জন: সংকট ও সম্ভাবনা’। এ আলোকে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্রাসিলিয়া যথাযথ মর্যাদায় দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
একুশের সকালে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠান শুরু করেন। দূতাবাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
বায়ান্নর শহীদদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, বাঙালির ভাষা আন্দোলনই ছিল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের সূত্রপাত। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার বিষয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দূতাবাসে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্ণার হতে পরিচালিত ইউনাস্কো-ব্রাজিল ও রাজধানী ব্রাসিলিয়া সরকারের সহযোগিতায় দূতাবাস ব্রাজিল সময় সকাল সাড়ে ১১টায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে এক আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য বহুজাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যা দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্ণার থেকে সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব- পশ্চিম, ইউনেস্কো-ব্রাজিলের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পুরষ্কার বিজয়ী গ্লোবাল ভায়োলেন্সের পরিচালক এডি আভিলা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদেশের উপস্থাপনায় ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি’-এর সাথে নৃত্য ছাড়াও ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, কিউবা, মিসর এবং জ্যামাইকার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনলাইনে প্রায় ছয় শতাধিক মানুষ উপভোগ করেন। বিপুল সংখ্যক ব্রাজিলিয়ান ছাড়াও বিশ্বের সকল মহাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। ব্রাজিলের বেশ কয়েকটি অন লাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টালে অনুষ্ঠানটির প্রচারণা ছিল উল্লেখযোগ্য।
অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল ১১ ভিন্ন ভাষার শিশুদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করে দেয়া ছোট ছোট বক্তব্য। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য দক্ষিণ আমেরিকার জনগণের নিকট পৌছে দিতে দূতাবাসের এই অনলাইন অনুষ্ঠানটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে বলে দূতাবাস আশাবাদী।