ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাস শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। দিবসের বিশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয় এবং চ্যান্সেরি প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহীদ মিনারে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, ভাষা সংগ্রামের পথ ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে জাতির পিতার বাংলায় ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাকে পৃথিবীর সর্বত্র সম্মানজনকভাবে উপস্থাপনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে যা ভবিষ্যতে আরো বেগবান হবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এ দিবস পৃথিবীর সকল দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করা হয়। ইউনেস্কোর আঞ্চলিক পরিচালকের পক্ষে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী মিজ মেগুমি ওয়াতানাবে মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী বাংলাদেশী তরুণদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষার স্বকীয় গুরুত্ব ও অবস্থান সুসংহত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। ইতালির ফ্লোরেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারী কনসাল মিজ গ্লোরিয়া গ্র্যানাতা বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে শান্তি ও সৌহার্দ্য বিনির্মাণের ক্ষেত্রে দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বলেও মতামত ব্যক্ত করেন। নেপলসে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসাল মিজ ফিয়োরেলা ব্রেগিলা ভাষার জন্য বাংলাদেশের তরুণদের আত্মত্যাগের জন্য তিনি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান এবং গর্ববোধ করেন বলে অনুভূতি ব্যক্ত করেন। বন্ধুপ্রতীম ইতালীয় ও অন্যান্য বিদেশী নাগরিকরাও মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আত্মত্যাগকারী শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা মাতৃভাষার অনন্যতা ও স্বকীয়তার বিষয়ে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। ঋষিলিপি ইন্টারন্যাশনাল নামে সংগঠনের উদ্যোক্তা বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু দুই ইতালিয় নাগরিক বাংলাদেশের সাতক্ষীরা থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি তাদের গভীর ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেন।