করোনামুক্ত হয়েও মারা গেলেন নির্মাতা সাজেদুল আউয়াল
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক, লেখক, শিক্ষক ও সমালোচক ড. সাজেদুল আউয়াল আর নেই। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে করোনা পরবর্তী জটিলতায় রাজধানীর হাতিরপুল নিজ বাসায় তিনি মারা গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাজেদুল আউয়ালের ছেলে ইশরাত শামীম অনন্ত বলেন, ‘বাবা গত মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে তার করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট নেগেটিভ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর কিছুটা ভালো ছিলেন। আজকে সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই বলছিলেন, খারাপ লাগছে। কিছুক্ষণের মধ্যে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তখন অ্যাম্বুলেন্স কল করি। কিন্তু আধা ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যান। তাকে হাসপাতালে আর নিতে পারি নি।’
গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস শনাক্তের পর থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সাজেদুল আউয়াল। করোনামুক্ত হয়ে ১৯ মার্চ তিনি বাসায় ফিরেছিলেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র-সাহিত্যের ক্ষেত্রেও সাজেদুল আউয়ালের অনেক অবদান। চলচ্চিত্র-বিষয়ে রয়েছে তাঁর অনেক গ্রন্থ, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র অধ্যয়ন ও গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তিনি শিক্ষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগ এবং বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটে।
চলচ্চিত্র নির্মাণে সাজেদুল আউয়ালের সূচনা ১৯৯৯ সালে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নির্ভানা’র মধ্য দিয়ে। এরপর দীর্ঘ সময় নিয়েছেন প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র নির্মাণে।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে ‘ছিটকিনি’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন সাজেদুল আউয়াল। ছবিটির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্যও তৈরি করেছেন তিনি। ছবিটি মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। ছবিতে অভিনয় করেছেন রুনা খান, ভাস্কর বন্দোপাধ্যায়সহ আরো অনেকে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে অনুদানের জন্য ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ নামে আরেক ছবির চিত্রনাট্য জমা দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৫৮ সালের ২৫ মার্চ কুমিল্লায় সাজেদুল আউয়ালের জন্ম। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা থিয়েটারে যোগ দেন। ‘ঢাকা থিয়েটার’-এর সঙ্গে দীর্ঘ দিন সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর রচিত প্রথম কাব্যনাটক ‘ফণিমনসা’। ১৯৮০ সালে নাটকটি মঞ্চায়নকালে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। ১৯৭৪ সালে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলেনর সঙ্গে যোগ দেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাজ করেন ‘সিনে আর্ট সার্কেল’-এ।❐