ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যেতে পারেন সুনাক
নির্বাচনে দলের ভরাডুবি হয়েছে। বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যে নিজের আসনটি রক্ষা করতে পেরেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয় মেনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সুনাক। অথচ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার আবির্ভাবের সময় নতুন করে স্বপ্ন দেখছিল ব্রিটেন। সে স্বপন ভেঙেছেও। নির্বাচনে জয়ী লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমারকে তিনি ফোন করেছেন। লেবার পার্টি জয়ী হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে পদত্যাগও করেছেন তিনি। জানিয়েছেন রাজা তার পদত্যাগ মেনে নিয়েছেন।
ঋষি সুনাকের এই পরাজয়ের পরই শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। এবার কী করবেন তিনি? ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে সরে এখন তার গন্তব্য কোথায়? এমনিতেও দুই বছর আগে সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়েছিল, সুনাকের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ড রয়েছে। তিনি যদিও জানিয়েছিলেন, গ্রিনকার্ড তিনি রাখেননি। সত্য গোপন কেন করেছিলেন তা সহজেই প্রতীয়মান। দীর্ঘমেয়াদে সুনাক যুক্তরাষ্ট্রেই চলে যাওয়ার কথা ভেবেছিলেন। এবারের নির্বাচনের পর আবার ওই গুঞ্জন ডালপালা মেলতে শুরু করে। হোয়াইট হলে এমন একটি ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে, সুনাক সম্ভবত স্ত্রীকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় নিজের অ্যাপার্টমেন্টে চলে যাবেন। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সুনাকের দুই কন্যাকে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি করানো হবে। সুনাক ইতোমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া কলেজে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান দিয়েছেন।
রাজনীতি থেকে সরে সুনাক অনেকটা ব্যবসায়িক জীবনেই ফিরে যেতে পারেন বলে অনেকের ধারণা। প্রযুক্তি আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তার আগ্রহের কমতি ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, এমন কোনো ব্যবসায় যুক্ত হতে পারেন তিনি। ঋষি সুনাকের তরফ থেকে আপাতত জানা গেছে তিনি সংসদ থেকে কিছুটা দূরেই থাকছেন। এই টোরি নেতা রাজনৈতিকভাবে বড় চমকের কোনো খবরই এখনও দেননি। সুনাকের জন্য কনজারভেটিভ পার্টিতে বেশ কিছু সংকট রয়েছে। সে সংকট বিবেচনায় তিনি যদি রাজনীতি থেকে দূরে সরে দাঁড়ান তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এখন কিছুটা চাপমুক্ত। একটি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে পরিমাণ চাপ থাকে তা থেকে অন্তত মুক্ত।
ঋষি সুনাকের ডাউনিং স্ট্রিটের অভিজ্ঞতা তার কাজে লাগবে। তা ছাড়া নিজের ব্যবসায় এখন পর্যন্ত লাভের মুখও দেখেছেন অনেক। রাজনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে নিজের ব্যবসাকে বড় করার অভিযোগও রয়েছে তার ওপর। এ ক্ষেত্রে হয়তো তিনি টনি ব্লেয়ারকেই অনুসরণ করবেন। টনি ব্লেয়ার মাত্র এক মাস আগেই বলেছিলেন, এভাবে এত চাপ নেওয়ার থেকে থেকে বরং এখন সুস্থভাবে বসে থাকাই ভালো। ঋষি সুনাকের আগেও ডেভিড ক্যামেরুনসহ বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীকে সরতে হয়েছে। তা থেকে ব্যতিক্রম সুনাক নন। তবে রাজনীতিতে তিনি আদৌ টিকে থাকবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা-কল্পনা। আপাতত মনে হচ্ছে, তিনি সরে যাবেন যুক্তরাষ্ট্রেই।
সূত্র: ইনডিপেন্ডেন্ট