গাজায় সাম্প্রতিক হামলা য় ইসরায়েল-আরব সম্পর্কে ফাটল
ফিলিস্তিনের গাজায় সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশের সম্পর্ক ভালো হয়েছিল। তবে এবারের নাকবা দিবসে প্রায় কোনো উসকানি ছাড়াই ইসরায়েলি বাহিনী বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালালে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করে কুয়েতের জাতীয় সংসদে একটি বিল পাস হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুয়েতের জাতীয় সংসদে গাজা উপত্যকার ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলের অমানবিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিলটি পাস করা হয়েছে।
ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার কুয়েত জাতীয় সংসদের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়। ওই অধিবেশনে সংসদ সদস্যরা ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ঘোষণা করেন। তারা বলেন, পূর্ব জেরুজালেম আল-কুদসকে (পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস) রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি কুয়েতের সংহতি ও সহমর্মিতা অব্যাহত থাকবে।
কুয়েতের পার্লামেন্টের স্পিকার মারজুক আলি আল-ঘানেম বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে কুয়েতের জনগণ ও সরকারের অবস্থান জানিয়ে দিতে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসেছে। ফিলিস্তিন হচ্ছে কুয়েতের প্রধান জাতীয় ইস্যু। তিনি গাজা উপত্যকার বেসামরিক অবস্থানগুলোতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ভয়াবহ আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শায়খ আহমাদ নাসের আল-মোহাম্মাদ আস-সাবাহ বলেন, ফিলিস্তিনি জাতির প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের প্রতি কুয়েতের অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেন, দখলদার ইসরায়েল সম্প্রতি যে জঘন্য অপরাধ করেছে তাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দখলদাররা সহিংসতা ও আগ্রাসনের মাধ্যমে আল-কুদস ও গাজায় আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের হত্যা করেছে, অবকাঠামো ধ্বংস করেছে, ফিলিস্তিনি কৃষিজমি ও ফলের বাগানে আগুন দিয়েছে এবং অসহায় নারী ও শিশুদের আর্তচিৎকারকে উপহাস করেছে।
কুয়েতের পাশাপাশি কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান আল-সানি গত শুক্রবার দোহায় বলেছেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে কাতারের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। কাতার কোনো দিন ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সঙ্গে কোনোকরম কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করবে না।
কুয়েত ও কাতার এমন সময় ফিলিস্তিন ইস্যুতে সমর্থন করে বক্তব্য দিল যখন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মতো আরব দেশগুলো ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে এই অবৈধ রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। সাম্প্রতিক গাজা আগ্রাসনের সময় এই দুই দেশের পাশাপাশি সৌদি আরব ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়ে কোনো বক্তব্য দেয় নি।❐