জালালাবাদের বিজয়ের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান
নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি: আমার দুচোখ ভরা স্বপ্ন, ও দেশ তোমারই জন্য— গানের এই স্লোগানকে ধারণ করে নিউ ইয়র্কের আঞ্চলিক সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বিজয়ের ৫০ বছর পালন করেছে। আয়োজনে ছিল দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং যারা জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ক্রেস্ট প্রদান। এই আয়োজন বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিকে রঙিন করে তোলে। তবে হঠাৎ করে করোনা বেড়ে যাওয়ায় অনুষ্ঠানে তার কিছুটা প্রভাব পড়েছিল।
অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বই ছিল প্রশংসা কুড়িয়েছে। কণ্ঠশিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনাও জমেছিল খুব। দেশাত্মবোধক গান, এবং সিলেটের বাউল, হাসান রাজার গান ভিন্ন এক আমেজ তৈরি করেছে। সুবর্ণ জয়ন্তীর এই আয়োজনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সিলেটের ভূমিকা এবং সিলেটের ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয় বাংলাদেশ সোসাইটির প্রয়াত সভাপতি কামাল আহমদকে।
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলালের সভাপতিত্বে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন ও সদস্য সচিব শরিফুল হক মনজুর উপস্থানা করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ ও প্রধান সমন্বয়কারী মইনুল ইসলাম ছিলেন সার্বিক তত্ত্বাবধানে। প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুল হোসেন খান, আজমুল হোসেন কুনু, বদরুন নাহার খান মিতা, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, বিয়ানীবাজার সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মান্নান, উপদেষ্টা এডভোকেট নাসির উদ্দিন, মিনহাজ আহম্মেদ সাম্মু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, সৈয়দ কামাল উদ্দিন, হাজী আব্দুর রহমান, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, নুরুল ইসলাম, পৃষ্ঠপোষক শমসের আলী, এটর্নী মঈন চৌধুরী, রিয়েলএস্টেট ব্যবসায়ী আকিব হোসাইন, জাহিদ খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন মালিক, বিলাল চৌধুরী, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম, সাবেক প্রচার সম্পাদক এম এ করিম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সহ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, কানেকটিকাট এসোসিয়েশনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ, জামাল হোসেন, রহমান রেজাউল, সহ সভাপতি সফি উদ্দিন তালুকদার, কবি গৌছ উদ্দিন খান, শাহ মিজানুর রহমান, সহ সভাপতি লোকমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক আহমেদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জামিল আনসারি, ক্রীড়া সম্পাদক শাহীন জামালী, আইন বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ, প্রচার সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুতিপা চৌধুরী, সদস্য হেলিম উদ্দিন, মান্নান মোনতাসির, রোকন হাকিম ও মিজানুর রহমান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজমুল হাসান বলেন, আমরা একসাথে বিজয়ের পঞ্চাশ বছর এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালন করছি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশ দিয়েছেন এবং তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মেডেল। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান, বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য। তিনি বলেন, আপনাদের অর্থেই বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল। তিনি করোনাকালে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বিভিন্ন মানবধর্মী কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও অন্যান্য বক্তারা জালালাবাদের অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেন এবং আগামীতেও সাথে থাকার সংকল্প ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্পন্সরদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন আব্দুল মুকিত চৌধুরী, সৈয়দ কামাল উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, নূরুল ইসলাম। স্পন্সরদের মধ্যে ছিলেন শামসের আলী, আকিব হোসাইন, এটর্নি মঈন চৌধুরী, জাহিদ খান, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, মহিউদ্দিন মালিক প্রমুখ। আহবাব চৌধুরী খোকন জানান, যেসব মুক্তিযোদ্ধা আসতে পারেন নি তাদের ক্রেস্ট পৌঁছে দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে চন্দ্র ব্যানার্জির নেতৃত্বে নৃত্যাঞ্জলী এবং সঙ্গীত পরিবেশন করেন শাহ মাহবুব, মারিয়া ও আমানত হোসেন আমান।