তীব্র শীতে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ কোটি মানুষ, ১২ জনের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাজুড়ে তাপমাত্রা খুব দ্রুত নামতে থাকায় মাত্র পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে অনাবৃত ত্বকে ফ্রস্টবাইট হতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। একটি শক্তিশালী আর্কটিক শীতকালীন ঝড়ের কারণে বছরের ব্যস্ততম ছুটির দিনেও আবহাওয়া সতর্কতার মুখে রয়েছে ২০ কোটির বেশি মানুষ। এই সতর্কতা এক উপকূল থেকে আরেক উপকূল পর্যন্ত, সর্ব দক্ষিণে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত এবং সানশাইন রাজ্য ফ্লোরিডা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে।
ঝড়ের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় প্রধান বিমানবন্দরগুলোয় হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই শৈত্যপ্রবাহের কারণে এবারের বড়দিনে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তুষার জমতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সেবা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের কিছু অংশে এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪৫ থেকে ৫৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস নিচে পর্যন্ত নেমে আসতে পারে।
তারা আরও সতর্ক করেছে যে, আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ডেস মোনেসের মতো বড় মেট্রো শহরেরও, ফ্রস্টবাইট বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সাধারণত রক্ত প্রবাহ কমে গেলে, প্রায়শই নাক, গাল বা হাত পায়ের আঙ্গুলে ফ্রস্টবাইট হতে পারে। শরীরে উষ্ণ রক্ত প্রবাহের অভাবে ত্বকের টিস্যু জমে গিয়ে ফেটে যেতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে অঙ্গহানি পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শুক্রবারের মধ্যে শীতকালীন ঝড় ‘বোম্ব সাইক্লোন’ হতে পারে।
বোম্ব সাইক্লোন বলতে এমন এক ঝড়কে বোঝায় যার প্রকোপ খুব অল্প সময়ের মধ্যে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়, এর কেন্দ্রীয় বায়ুচাপ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ২৪ মিলিবার কমে যায়।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “এটি আপনার ছোটবেলায় দেখা সাধারণ তুষার দিনের মতো নয়, এটি খুবই গুরুতর পরিস্থিতি।”
আর্কটিক বায়ু প্রবাহ টেক্সাসের এল পাসোতে তাপমাত্রা মাইনাস ৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নামিয়ে আনতে পারে, সেইসাথে তীব্র বাতাস বয়ে আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যেখানে নতুন আগত অনথিভুক্ত অভিবাসীরা শহরের রাস্তায় যত্রতত্র ঘুমিয়ে আছে।
এল পাসোর প্রধান বাস টার্মিনালের বাইরে ফুটপাতে রাত কাটাচ্ছেন ভেনেজুয়েলার অভিবাসী ডিলান টোরেস রেয়েস। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, “এখানে খুব শীত পড়েছে।”
ফ্লোরিডায় ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ঠান্ডা ক্রিসমাস দেখতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এনডব্লিউএস একে “প্রতি প্রজন্মে একবার” ঘটে, এমন একটি শীতকালীন আবহাওয়ার পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেছে।
বৃহস্পতিবার তারা জানায় যে শুক্রবার “জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এই শীতল বাতাস পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে।”
তুষারপাত এবং প্রবল ঝড়ো বাতাস মধ্য-পশ্চিম এবং কানাডায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মতো ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।