মেট্রো রেলে পোষা প্রাণী নিয়ে ওঠা যাবে না, লাউড স্পিকার নিষিদ্ধ
অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। আগামী বুধবার গতির ঝড় তুলতে প্রস্তুত মেট্রো রেল। ঘষামাজা, স্টেশনের ভেতর ও বাইরের খুঁটিনাটি কাজ প্রায় শেষ করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রাথমিকভাবে চলা ৯টি স্টেশনের কাজও প্রায় শেষ।
মেট্রো রেলস্টেশনে চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের শেষ মুহূর্তের কাজ।
দেশের প্রথম নগর ট্রেনের প্রথম যাত্রী হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে।
অবকাঠামো থেকে শুরু করে যার সব কিছুই তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে। একইভাবে মেট্রো রেলে যারা চড়বেন তাদেরও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এর নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। স্টেশনের মেইন প্ল্যাটফর্ম, কনকোর্স লেভেল ও ট্রেন, সবখানেই যাত্রীদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। মেনে চলতে হবে নির্দেশিকা। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের অপরাধে পড়তে হবে শাস্তির মুখে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেট্রো রেল, প্ল্যাটফর্ম ও পুরো স্টেশন এলাকা থাকবে ধূমপানমুক্ত। তাই এই পরিষেবা ব্যবহারের সময় যাত্রীরা ধূমপান করতে পারবেন না। এ ছাড়া প্ল্যাটফর্ম ও স্টেশনে অবস্থানকালে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করা যাবে না।
মেট্রো রেল চত্বরে ময়লা ফেলা যাবে না। পান চিবিয়ে থুথু না ফেলতেও যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মেট্রো রেল, প্ল্যাটফর্ম ও পুরো স্টেশনে পোস্টার, ব্যানার ও গ্রাফিতি লাগানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রেলওয়ের সৌন্দর্য বজায় রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেট্রো রেল চত্বরে ভিক্ষুকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর কোনো ধরনের ভারী পণ্য নিয়েও প্রবেশ নিষেধ। এ ছাড়াও পণ্য ফেরি করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এর সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র, পোষা প্রাণী বহন, বিপজ্জনক পণ্য পরিবহনও নিষিদ্ধ।
ফোনের লাউড স্পিকার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
মেট্রো রেলের কোচে বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সংরক্ষিত আসন রয়েছে। তারা ব্যতীত অন্য কেউ তাতে বসতে পারবেন না। আর নারী কোচেও পুরুষ যাত্রীদের ওঠা নিষিদ্ধ।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘কেউ যদি অপ্রত্যাশিত কিছু করে তখন তাকে তো কোথাও বসাতে হবে। সে জন্য আমরা একটা রুম তৈরি করেছি। তাকে ওই রুমে বসিয়ে বলব যে, আপনি যে কাজ করেছেন সেটা সঠিক হয়নি। এই কাজ আপনার কাছ থেকে কোনোভাবেই আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না। আমরা তাকে কাউন্সেলিং করব। ’
যদি কেউ ইচ্ছাকৃত বারবার ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে তবে তাকে সরাসরি ডিটেনশন রুমে রেখে পুলিশে দিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মেট্রো রেলে স্টেশনের দ্বিতীয় তলা থেকে যাত্রীরা টিকিট কিনতে পারবেন। আর তৃতীয় তলা থেকে মেট্রো রেলে চড়া যাবে। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর টিকিট দেখিয়েই প্ল্যাটফর্ম ছাড়তে হবে। আর এমআরটি পাসধারীরা পাস পেইড জোনে নির্ধারিত স্ক্যানারে নিজেদের পাস স্ক্যান করে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে ও গন্তব্যে পৌঁছনোর আবারও স্ক্যান করতে হবে। দূরত্ব বিবেচনায় নির্ধারিত ভাড়া কেটে নেওয়া হবে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর মেট্রো রেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে মেট্রো রেলের উদ্বোধন করবেন তিনি। এরপর টিকিট কেটে প্রথম যাত্রী হিসেবে মেট্রো রেলে চড়বেন তিনি।
উদ্বোধনের পরদিন অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর থেকে মেট্রো রেলে চড়তে পারবেন সাধারণ যাত্রীরা। প্রথমদিকে দৈনিক চার ঘণ্টা করে মেট্রো রেল চলবে। প্রথমদিকে দিনের কোনো চার ঘণ্টা মেট্রো রেল চলবে, সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে যাত্রীর চাপ মাথায় রেখেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।