বাংলাদেশের উত্থান বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প: দ্রৌপদী মুর্মু
বাংলাদেশের একটি ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। শুক্রবার দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান হয়।
ডেলিগেশন টিমের সদস্যদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, তারা সবাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতা। শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারত ও বাংলাদেশের অনন্য সম্পর্কের ভবিষ্যতেরও রক্ষক তারা। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যক্ত করেন যে তারা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আগামী বছরগুলোতে একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের মতোই ভারতেও স্মরণীয় শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের গতি অব্যাহত থাকায় এই সফরটি গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বন্ধু ও অংশীদার হতে পেরে ভারত গর্বিত এবং বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন যাত্রা সহভাগিতা করে চলেছে। এই চেতনা রক্ষা করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যা আমাদের দুই দেশ ও আমাদের জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বকে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং এর উত্থান ও সমৃদ্ধি বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প। বাংলাদেশের তারুণ্যের রয়েছে একটি মহিমান্বিত অতীত এবং প্রতিশ্রুতিতে পূর্ণ একটি ভবিষ্যত।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ প্রত্যেক ভারতীয়ের হৃদয়ে ও মনে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। সভ্যতাগত দিক থেকে আমাদের দুই দেশের মাঝে রয়েছে সুগভীর সংযোগ। আমরা শিল্প, সংগীত এবং সাহিত্যসহ আমাদের মধ্যে অনেক কিছু সহভাগিতা করি।
তিনি বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে তার বন্ধুত্বকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে এবং আমরা এর পূর্ণ সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উভয় দেশ এই সম্পর্কের প্রতি যে গুরুত্ব দেয়- তা আমাদের গভীর সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তিনি দিল্লি ও লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাম্প্রতিক বৈঠকের কথা স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন যে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। ভারতের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি হলেন তরুণ জনগণ এবং বাংলাদেশের জনতত্ত্বও আমাদের মতোই, যেখানে রয়েছে বিপুল সংখ্যক তরুণ জনগণ। তিনি বলেন, উদ্ভাবক, প্রণেতা, নির্মাতা এবং ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে উভয় দেশের তরুণদেরকে অত্যাধুনিক নানান ক্ষেত্র যেমন গ্রিন এনার্জি, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্টার্ট আপ এবং টেকনোলজি নির্ভর সেবা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে নিয়োজিত করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেছেন যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ইতোমধ্যেই মানুষে মানুষে প্রচুর যোগাযোগ রয়েছে, আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উভয় দেশের তরুণরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ডেলিগেশন টিমের সদস্যরা এই সুযোগটি ভারতের বিভিন্ন বিষয়, আমাদের বৈচিত্র্য এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্পকলা ইত্যাদি ক্ষেত্রের উন্নয়ন সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কাজে লাগাবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা সোনার বাংলা গড়তে যেমন কঠোর পরিশ্রম করে, তেমনি ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে শান্তি, সমৃদ্ধি ও বন্ধুত্বের সোনালী যুগের সূচনা করতে তাদেরও একই আবেগ ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করা উচিত।
বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন প্রোগ্রামটি ২০১২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছিল। এই যুব কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো পরস্পরের দেশের মধ্যে সদ্ভাব এবং বোঝাপড়া বৃদ্ধি করা, তরুণদের মধ্যে ধারণার আদান-প্রদান করা এবং মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির উপলব্ধি প্রচার করা।
President Droupadi Murmu met and interacted with a youth delegation from Bangladesh at Rashtrapati Bhavan. The President urged them to usher in a golden era of peace, prosperity and friendship among the people of India and Bangladesh. https://t.co/IXlXgUAX8P pic.twitter.com/i3TWyhHGpl
— President of India (@rashtrapatibhvn) October 14, 2022