বিজেপির সামনে চ্যালেঞ্জ, মুসলিম দেশগুলোর ক্ষোভ বাড়ছে
সম্প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধন আইন ও তার বিরুদ্ধে চলা আন্দোলনে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা ও নিপীড়নের ঘটনায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর ক্ষোভ বাড়ছে।
ভারতের বাংলা দৈনিক ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ স্পষ্ট করে জানায়, যে ভাষায় ৫৭ মুসলিম রাষ্ট্রের সংগঠন ওআইসি সমালোচনা করতে শুরু করেছে, তার প্রভাব সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত সম্পর্কে পড়তে পারে এবং বিষয়টি সবচাইতে বেশি সাহায্য করবে পাকিস্তানকে।
ওআইসি-তে গত বছরেই প্রথম ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে ডাক পায় ভারত। সম্প্রতি দিল্লির এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে সম্পদস্বরূপ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে এই ‘প্রসারিত সম্পর্ক’ যে অনেকটাই ধাক্কা খেতে চলেছে একের পর এক ঘটনায় তারই স্পষ্ট আভাস মেলে।
দু’দিন আগেই ওআইসি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় কোণঠাসা হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়া এবং পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে উদ্বিগ্ন ওআইসি। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে যে সনদ রয়েছে, তার থেকে যদি ভারতে অন্য কিছু হয়, তা হলে তা গোটা অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক। মুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে ওআইসি-র পক্ষ থেকে সরাসরি অনুরোধ করা হচ্ছে।
২৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশটির বাংলা দৈনিক ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ জানায়, আগে থেকেই মালয়েশিয়া ও তুরস্ক ভারতের বর্তমান মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করে আসছিলো। পাশে ছিলো অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এবং আরবের দেশগুলো। কিন্তু সম্প্রতি সেখানেও ভারত সরকারের বেশ কিছু কাজ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে।
অভিযোগ উঠছে, ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, বিষয়টি সরকারের কাছে আগামী দিনগুলোতে বড় চাপের কারণ হয়ে উঠতে পারে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরবের দেশগুলোর কাছ থেকেও নেতিবাচক বার্তা পাচ্ছে ভারত। ঘরোয়া রাজনীতি ও কেন্দ্রীয় নীতি প্রণয়নের জন্য বিদেশনীতির প্রশ্নে কতটা সমঝোতা করা হবে, এখন সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির সামনে।
এখানে উল্লেখ্য যে, এই ওআইসি-তে গত বছরেই প্রথম ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে ডাক পায় ভারত। অন্যদিকে ভারতের অংশগ্রহণের কারণে প্রতিবাদ করে সম্মেলন বয়কট করে পাকিস্তান। বিষয়টিকে সে সময় কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখেছিলো নয়াদিল্লি। আর সে কারণেই ওআইসি’র এই সুর পরিবর্তনের প্রভাব ভারতের ওপর পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে দেশটির কূটনীতিক বিশেষজ্ঞরা।