ভারতে সরকারি চাকরিজীবীদের অফিসে ঢোকার সময় বেঁধে দিলো সরকার
ভারতের সরকারি চাকরিজীবীদের অফিসে যাওয়া-আসার নতুন সময় বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে রবিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অফিস চলবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। চাকরিজীবীদের অফিসে ঢুকতে হবে সকাল ৯টায়। দেরি হলে কাটা হবে ক্যাজুয়াল লিভ। পুরো ব্যবস্থা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মনিটরিং করা হবে বলে জানানো হয়েছে এবং এই নির্দেশ সব সরকারি চাকরিজীবীর জন্যই প্রযোজ্য।
মূলত যে সব সরকারি চাকরিজীবী অফিসে দেরি করে আসেন এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিস ত্যাগ করেন তাদের ‘শায়েস্তা’ করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কর্মরত সব কর্মীকে নির্দিষ্ট সময় মেনে অফিসে প্রবেশ এবং বের হতে হবে। এ নির্দেশ অমান্য করলেই পেতে হবে ‘শাস্তি’।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক কর্মচারীই সময়মতো অফিসে এসে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি দেন না। সাধারণ কর্মচারীরা শনাক্তকরণ ব্যবস্থা ব্যবহার করলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে তা ব্যবহারে অনীহা দেখা যায়। তাছাড়া, করোনা মহামারির পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের অফিসে দেরিতে আসার প্রবণতাও বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এও অভিযোগ আছে, অনেক জুনিয়র কর্মী প্রায়ই দেরিতে অফিসে আসেন এবং সময়ের আগেই বেরিয়ে যান। সিনিয়র কর্মকর্তাদের দাবি, এজন্য তাদেরকে প্রায়ই অফিসের সময় শেষ হওয়ার পরও কাজ করতে হয়। কিছু কর্মী প্রায়ই অফিস ফাঁকি দেন অথবা অফিসে কিছুক্ষণ কাটিয়েই বের হয়ে যান। এ বিষয় লক্ষ করার পর কর্মীদের নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
নতুন সময়সূচি অনুসারে ১৫ মিনিট দেওয়া হয়েছে ‘গ্রেস টাইম’ হিসেবে। অর্থাৎ অফিসে প্রবেশের সরকারি সময় সকাল ৯টা। এরপর সর্বোচ্চ পনেরো মিনিট দেরি করে অর্থাৎ ৯টা ১৫ মিনিটের মধ্যে তারা অফিসে ঢুকলে শাস্তি পাবেন না। টাইমস অভ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সব কর্মীকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপস্থিতি দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণে কোনো কর্মীর অফিসে আসতে দেরি হলে তা আগেভাগেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাতে হবে এবং সেজন্য ‘ক্যাজুয়াল লিভ’ নিতে হবে বলে উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো কর্মী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অফিসে না পৌঁছলে তার জন্য বরাদ্দ ক্যাজুয়াল লিভ থেকে অর্ধদিবস কাটা যাবে। অর্থাৎ দুই দিন দেরি হলেই একটি ছুটির দিন কাটা যাবে ওই কর্মীর। আর তার ক্যাজুয়াল লিভ বাকি না থাকলে আর্নড লিভ থেকে সেই ছুটি কাটা যাবে বলে জানিয়েছে পিটিআই। বায়োমেট্রিক মেশিন যেন সবসময় চালু থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া