মিয়ানমারের সঙ্গে ৮ দিন বাণিজ্য বন্ধ, ক্ষতি ১৬ কোটি
কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে টানা ৮ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ১৪ নভেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু শহর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোনো পণ্য আসছে না। একইভাবে টেকনাফ থেকে পণ্য মিয়ানমারে যাচ্ছে না। এতে প্রতিদিন গড়ে দুই কোটি টাকা সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা এ এস এম মোশাররফ হোসেন।
টেকনাফ স্থলবন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, রাখাইনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে হঠাৎ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। গত আট দিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে ৪৭ টনের একটি হিমায়িত মাছের চালান টেকনাফে এসেছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা এ এস এম মোশাররফ হোসেন বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সমস্যার কারণে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজস্ব আদায়ও বন্ধ রয়েছে।
এতে দিনে দুই কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধের কারণে গত ৮ দিনে কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আট দিন ধরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বন্দরে আগে আসা আদা, নারিকেল, আচার, সুপারি, শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ চালু হবে তাও বলা যাচ্ছে না। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, ১৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আকিয়াব শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংঘর্ষ চলছে।
দেশটির স্থানীয় প্রশাসন আকিয়াব শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকনেতা আলী আজগর মাঝি বলেন, বন্দরে মালামাল ওঠা নামার কাজের জন্য ছয় শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাজ নেই।
বন্দরের আমদানিকারক আবদুস শুক্কুর সিআইপি জানান, ব্যবসায়ীদের অনেক পণ্য মিয়ানমারে আটকা পড়েছে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে পড়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বন্দরের কর্মরত শ্রমিকেরা অলস সময় পার করছেন।