মিয়ানমারে নববর্ষ উপলক্ষ্যে ৩ হাজার বন্দিকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা
নববর্ষ উপলক্ষ্যে সাধারণ ক্ষমার আওতায় ৯৮ জন বিদেশিসহ ৩ হাজার ১১৩ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
সোমবার তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে টেলিগ্রামে সামরিক সরকারের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর অভ্যুত্থান বিরোধী প্রতিবাদকারীদের নির্মমভাবে দমনের চেষ্টা করে জান্তা বাহিনী। এ সময় হাজার হাজার গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারী ও বিরোধীদের জেলে ঢুকায় এই সামরিক সরকার। বিশ্বজুড়ে এর সমালোচনা করা হয়।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অং লিন ডুয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, নতুন বছর উদযাপনের মধ্যে দিয়ে মানুষের জন্য আনন্দ বয়ে আনতে এবং মানবিক উদ্বেগ দূর করতে এই সাধারণ ক্ষমা।
সোমবার ঘোষণা করা এই সাধারণ ক্ষমার আওতায় কারা রয়েছেন তা পরিষ্কার নয় এবং এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ফোন করার হলেও জান্তার এক মুখপাত্র উত্তর দেননি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মিয়ানমারের নোবেল জয়ী ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী ও সামরিক শাসন বিরোধীদের প্রধান অং সান সু চি এখন ৩৩ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। ধারাবাহিক কয়েকটি মামলার বিচারে তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয় যা ‘মিথ্যা মামলা’ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা কুড়িয়েছে।
২০২১ সালে ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সদস্যকেও সামরিক জান্তা আটক করে রেখেছে।
মিয়ানমারের আন্দোলনকারী গোষ্ঠী ‘অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স’ এর ভাষ্য অনুযায়ী, জান্তা অন্তত ১৭ হাজার ৪৬০ জনকে আটক করে রেখেছে এবং ৩ হাজার ২৪০ জনকে হত্যা করেছে।
জান্তা মাঝে মাঝে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বন্দিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। ২০২১ সালে নববর্ষ উপলক্ষ্যে তারা ২৩ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল, কিন্তু ২০২২ ও চলতি বছর সেই তুলনায় অল্প সংখ্যক বন্দিকে মুক্তি দিল তারা।
মিয়ানমারের সকল রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জান্তার প্রতি বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ও অনেক বিশ্ব নেতা।