মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান বিশ্বের নজর
মিয়ানমারের ক্যুর নিন্দায় সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে এ ব্যাপারে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এ ঘটনাকে গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছে তারা।
মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি জে ব্লিনকেন। দেশটির সেনাবাহিনীকে অবিলম্বে তাদের কর্মকাণ্ড পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জে ব্লিনকেন বলেন, ‘সব সরকারি কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের নেতাদের মুক্তি দিতে সামরিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই। ৮ নভেম্বর নির্বাচনে মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। এর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য মিয়ানমারের মানুষের যে আকাক্সক্ষা যুক্তরাষ্ট্রও তার সঙ্গে একাত্ম।’
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেইন মিয়ানমারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী আবারও দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা রাষ্ট্রীয় কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্টকে আটক করেছে। এ ধরনের খবর গভীর উদ্বেগজনক।’ মরিস পেইন আরও বলেন, ‘আমরা সামরিক বাহিনীকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে, আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে এবং অবৈধভাবে আটক সব বেসামরিক নেতা ও অন্যদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাই।’
ভারত জানিয়েছে, তারা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে মিয়ানমার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়ায় ভারত সবসময় সমর্থন দিয়ে এসেছে। আমাদের বিশ্বাস, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবশ্যই বহাল থাকবে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব কাতসুনোবু কাতো বলেছেন, তার দেশ মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। দেশটিতে থাকা জাপানি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে টোকিও যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
আর জাতিসংঘ নতুন পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে সেনা অভ্যুত্থান ও বেসামরিক নেতাদের আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এসব ঘটনাবলিকে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথে মারাত্মক আঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিশ্ব সংস্থার মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজেরিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব মিয়ানমারের পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরুর আগমুহূর্তে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের আটকের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।’
রাষ্ট্রীয় কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং অবৈধভাবে আটক সবাইকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন। এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে মিয়ানমারের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অং সান সু চি।❐