সংজ্ঞাহীন আকিব, ব্যান্ডেজে লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে একটি ব্যান্ডেজ করা মাথায় সবারই চোখ আটকে যাচ্ছে মুহূর্তেই। আর সেই ব্যান্ডেজের লেখা দেখে কেউই চোখের পানি আটকে রাখতে পারবেন না। চিত্রটি চট্টগ্রাম মেডিক্যালের অধ্যয়নরত ছাত্র মাহাদি আকিবের। যার মাথার ব্যান্ডেজে লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। এর নিচেই বিপজ্জনক চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছে। আকিবের মাথার হাড় ভেঙে দিয়েছে তারই রাজনৈতিক মতাদর্শের অপর একটি পক্ষ। এই ঘটনার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ৬২তম ব্যাচের ছাত্র মাহাদি আকিব। ঘটনাটি গত শনিবারের। কলেজের মেইন গেইটের কাছে অবস্থান করছিলেন আকিবসহ আরও কয়েকজন। হঠাৎ তারই রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্রলীগের অপর একটি পক্ষ তাকে’সহ কয়েকজনকে ধাওয়া করে। সঙ্গে থাকা সবাই দ্রুত সরে যেতে পারলেও প্রতিপক্ষ আকিবকে ঘিরে ফেলে। এরপর লোহার চেইন, বোতল এবং ধারালো রামদা দিয়ে ওর মাথায় উপর্যপুরি আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
মাথা থেঁতলানো অবস্থায় সহপাঠীরা আকিবকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে হাসপাতালটির আইসিইওতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এখনও ফেরেনি সংজ্ঞা।
চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী জানান, আকিবের মাথার হারের বেশিরভাগ অংশ ভেঙে গেছে। মাথা অনেকটা থেঁতলানো। ব্রেনেও আঘাত হয়েছে। ব্রেন ড্যামেজ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে মাথায় সফল অপারেশন হয়েছে। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক অবজারবেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে আকিব সুস্থ হয়ে ফিরবেন বলে চিকিৎসকরা আশা প্রকাশ করছেন।
এদিকে এই ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কলেজ প্রশাসন মেডিক্যাল কলেজ শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার জানান, ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।