Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
January 16, 2025
হেডলাইন
Homeবাংলাদেশসরকার পতনের লক্ষ্যে এবার দেশজুড়ে বিএনপির গণমিছিল

সরকার পতনের লক্ষ্যে এবার দেশজুড়ে বিএনপির গণমিছিল

সরকার পতনের লক্ষ্যে এবার দেশজুড়ে বিএনপির গণমিছিল

সরকার পতনের লক্ষ্যে এবার দেশজুড়ে গণমিছিল করতে যাচ্ছে বিএনপি। একই দাবিতে সমমনা অন্য দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার থেকে রাজপথে এই কর্মসূচি পালন করবে দলটি। এ লক্ষ্যে আজ শুক্রবার থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রাপ্ত দায়িত্ব অনুযায়ী ১৯টি জেলায় যাওয়া শুরু করছেন। ৩০ ডিসেম্বর তারা ঢাকায়ও যুগপৎ কর্মসূচি পালন করবেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এসব তথ্য জানিয়েছেন। জেলায় জেলায় গণজাগরণ সৃষ্টিতে গণমিছিল সফল করার জন্য এরই মধ্যে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ লক্ষ্যে ঢাকা বাদে বাকি ৯টি সাংগঠনিক বিভাগের সদর ও ওইসব বিভাগের পুরোনো একটি শহরসহ মোট ১৯টি জেলায় গণমিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, দলীয়প্রধানের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও যুগ্ম মহাসচিবরা। অন্য জেলাগুলোতেও গণমিছিলে থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতাসহ সংশ্লিষ্ট জেলার নেতারা।

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে ও পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন জেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এতে গণমিছিলের কর্মসূচি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য গ্রেপ্তার নেতাদের অবর্তমানে পরবর্তী পদের নেতাকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের মামলায় তিনি এবং আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এখন কারাগারে। ফলে গণমিছিলে দেখা যাবে অন্য নেতাদের।

এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামে, গয়েশ^র চন্দ্র রায় রাজশাহীতে, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বরিশালে ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান সিলেটে যাচ্ছেন।

২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আহ্বানে ওই দিনের ঢাকার কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর দেয় বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী দল ও জোটগুলোও বিএনপিকে অনুসরণ করে।

গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করে তা আদায়ে ২৪ ও ৩০ ডিসেম্বর কর্মসূচি দেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ১০ দফার প্রধান দফাÑসরকারের পদত্যাগ। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবিও তারা গুরুত্বের শীর্ষ রেখেছেন।

এদিকে রাজধানীতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি বাস্তবায়নের কর্মকা-ও শুরু করেছে বিএনপি। এরই মধ্যে গণমিছিল বাস্তবায়নের জন্য প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনকে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম গ্রেপ্তার হওয়ায় তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আহ্বায়ক কমিটির পরবর্তী এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবীকে।

ঢাকার বাইরে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন গ্রেপ্তার হয়েছেন। সেখানে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিনিয়র সহসভাপতি ডা. শফিকুল ইসলামকে। অন্যান্য জেলাতেও একই পথ অনুসরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রিন্স জানান, সংশ্লিষ্ট নেতা মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত পরবর্তী জ্যেষ্ঠ নেতা ওই পদে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।

গাজীপুর মহানগর আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিন মারা যাওয়ায় সেখানে বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মঞ্জুরুল করিম রনিকে।

৩০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা গত বুধবার প্রস্তুতি বৈঠক করেছে। এদিন সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়েও বৈঠক হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে অঙ্গ ও সহযোগী দলগুলোর নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সূত্র জানায়, দাবি আদায়ে যথাসাধ্য শক্তি নিয়ে মাঠে থাকবেন দলটির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু জানিয়েছেন, ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল রাজধানীর কোন কোন সড়ক দিয়ে যাবে, তা জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দেওয়া হবে। চিঠি নিয়ে যাবেন এজেডএম জাহিদ হোসেন।

সরকারের বিরুদ্ধে জনমত শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বিএনপি। এ জন্য ১০ দফা দাবি ও ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ বিতরণ করবে দলটি। এ ব্যাপারে প্রিন্স জানান, ১০ দফা দাবি এক পৃষ্ঠা ও রূপরেখা তিন পৃষ্ঠার বুকলেট আকারে ছাপানো হচ্ছে। সবাই যাতে সহজে দফা ও রূপরেখাগুলো বুঝতে পারে, সেজন্য তা সাধু ভাষা থেকে চলতি ভাষায় রূপান্তর করা হয়েছে। খরচ কমানোর জন্য এগুলো সাদা কাগজের বদলে নিউজ প্রিন্ট কাগজে ছাপানো হচ্ছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, ১০ দফা ও রূপরোখা ছাত্র-শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নানা পেশার প্রতিনিধিদের কাছে পৌঁছানোর কাজ শুরু করছে দলটি।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, শুক্রবার থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রথমেই স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ১০ দফা ও রূপরেখা নিয়ে তৃণমূল নেতাদের ‘ব্রেইন স্টর্মিং’ সেশন করবেন তারা। ১০ দফার লিফলেট ও রূপরেখার বুকলেট স্থানীয় নেতারা আরও তৃণমূলে পৌঁছে দেবেন। এ নিয়ে আলোচনা সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও উঠান বৈঠক করতে পারবেন তারা।

বিএনপির ২৭ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখায় গুরুত্বের শীর্ষ রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে প্রতিস্থাপন, বিভিন্ন পর্যায়ে জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ ছয়টি কমিশন গঠন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদে দুই মেয়াদের বেশি নয় এবং উভয় পদে নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা।

বিএনপির ১০ দফা আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে কর্মসূচি দিয়েছে সমমনা দল ও জোটগুলো। তারা ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে গণমিছিল করবে।

২০-দলীয় জোটের ১২ দল মিলে নতুন জোট গড়ে উঠেছে। এই জোটের সমম্বয়ক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেছেন, ‘২০-দলীয় জোট আর কার্যকর নয়। তবে আমাদের সক্ষমতা সীমিত। তাই যুগপৎ আন্দোলনে আমরা সম্মিলিতভাবে অংশ নেব। বিএনপির পাশপাশি আমারও স্বতন্ত্র কর্মসূচিও দেব। জানুয়ারিতে সারা দেশ সফর করব।’

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলন বেগবান করতে জোট রাজনীতিতে নতুন কৌশল দেখা যাচ্ছে। এ সম্পর্কে ভালো জানাশোনা রয়েছে, এমন একজন জোট নেতা জানিয়েছেন, ১২-দলীয় জোটর পর প্রথম পর্যায়ে ছয়টি দল নিয়ে ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ গঠন করা হচ্ছে। এর নেতৃত্বে থাকছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। এই জোটে আরও থাকছে সাইফুদ্দীন মনির ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), খন্দকার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশ, সাদেক শাওনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাপ, আজহারুল ইসলামের ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী) ও গরীবে নেওয়াজের বাংলাদেশ পিপলস লীগ।

ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, শিগগিরই ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ ঘোষণা করা হবে।

২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ছিল জামায়াতে ইসলামী ও কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। তারাও ৩০ ডিসেম্বর একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘এরই মধ্যে জামায়াত ১০ দফা দাবি ঘোষণা করেছে। আগামীকাল ও ৩০ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচিতেও একাত্মতা ঘোষণা করেছি আমরা। এসব কর্মসূচি পালনের কর্মপন্থা ঠিক করা হচ্ছে।’

এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ বলেন, ‘আমরা স্বতন্ত্রভাবে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করতে সক্ষম। সে কারণে আমরা অন্য কোনো দলের সঙ্গে যাইনি।’

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment