Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 21, 2024
হেডলাইন
Homeআন্তর্জাতিকহুমকিতে চাপে যুক্তরাষ্ট্র : মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা

হুমকিতে চাপে যুক্তরাষ্ট্র : মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা

হুমকিতে চাপে যুক্তরাষ্ট্র : মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা

সোলেমানির মেয়ে পিতা হত্যার প্রতিশোধ চান 

কেনিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা

♦ তেলআবিবসহ ৩৫ লক্ষ্যে হামলার পরিকল্পনা ইরানের

ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলার হুমকি ট্রাম্পের

লাল পতাকা উড়িয়ে প্রতিশোধের ঘোষণা 

♦ ইরাক থেকে মার্কিন সেনা সরাতে পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস

বাগদাদে ড্রোন হামলা চালিয়ে জেনারেল কাসেম সোলেমানিকে হত্যার পর মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার রাতে বাগদাদের অতি সুরক্ষিত গ্রিন জোন এবং ইরাকের একটি বিমান ঘাঁটিতে রকেট ও মর্টার হামলা হয়েছে। বালাদ বিমানবন্দরের কাছে বেশ কয়েকজনকে গুলি করা হয়েছে।
ইরানের মসজিদের মিনারে মিনারে রক্তলাল ‘যুদ্ধপতাকা’ উড়িয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির জনগণ। এর অংশ হিসেবে ইরান ৩৫টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার যে পরিকল্পনা করেছে, তার মধ্যে ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবও আছে। রোববার রাতে ইরাকের পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাস হয়েছে।
 
এদিকে সোলেমানিকে হত্যার পর তেহরানের ‘প্রতিশোধের’ হুমকিতে চাপে পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ হত্যাকাণ্ডের পর ইউরোপীয় মিত্রদের পাশে পায়নি ওয়াশিংটন। ন্যক্কারজনক হামলার পর নিজের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন।
 
ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধশতাধিক শহরে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
 
রোববার ভোরে ইরাক থেকে সোলেমানির (৬২) লাশ ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহওয়াজ বিমানবন্দরে পৌঁছে। এ সময় তার কফিনে শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে। তার শোক মিছিলে লাখ লাখ মানুষ অংশ নেন। মিছিলে অনেকের হাতে ছিল সোলেমানি ও ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি।
 
পরনে ছিল কালো পোশাক। হাতে ছিল সবুজ, সাদা ও লাল রঙের পতাকা। তার মৃত্যুতে কয়েকদিন ধরেই শোক পালন করছে ইরান ও ইরাকের সমর্থকরা। রোববার ইরানের কয়েকটি স্থানে তার জানাজা হয়। এর আগে শনিবার ইরাকের বিভিন্ন স্থানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ৭ জানুয়ারি নিজ শহর কেরমানে তার লাশ দাফন করা হবে।
খবর বিবিসি, এএফপি, নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন, তেহরান টাইমস, দ্য সান।
 
ইরানের কৃতী সন্তান সোলেমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বাড়ছে। দেশজুড়ে বিক্ষোভ থেকে প্রতিশোধের দাবি উঠছে। রোববার সোলেমানির পরিবারের সদস্যদের সহমর্মিতা জানাতে তার বাসভবনে যান ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। এ সময় সোলেমানির মেয়ে তার বাবার হত্যার প্রতিশোধ দাবি করেন।
 
জবাবে রুহানি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেবে সবাই। ইরানের মসজিদের মিনারে মিনারে রক্তলাল ‘যুদ্ধপতাকা’ উড়িয়ে প্রতিশোধের ইঙ্গিত দিয়েছেন ইরানি জনগণ। ইরানের বিপ্লবী গার্ডস কমান্ডার জেনারেল গোলাম আলী আবু হামজাহেরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, যে ৩৫টি লক্ষ্যবস্তুতে ইরান হামলার পরিকল্পনা করেছে তার মধ্যে ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবও রয়েছে।
 
এদিকে ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার হুমকি দিয়ে ট্রাম্পের টুইটের পর যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়ে যায়। ইরানের সাইবার নিরাপত্তা গ্রুপের সদস্যরা এটি হ্যাক করে বলেছে- ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ বার্তা।
 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোলেমানি হত্যার ‘সমুচিত প্রতিশোধ’ ইরান কখন কীভাবে নেয় সেটা দেখার বিষয়। তারা বলেন, এমনও হতে পারে ‘তিনি মারা পড়লে কী করতে হবে- সব পথ সোলেমানি নিজেই বাতলে গেছেন।’ জেনারেল সোলেমানি ছিলেন ইরানের কৌশলগত পরিকল্পনার অন্যতম পুরোধা।
 
তিনি হত্যার শিকার হলে প্রতিশোধ কীভাবে নিতে হবে, সেই পরিকল্পনা হয়ত তিনি নিজেই বলে দিয়ে গেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের হিসাব-নিকাশ যেমনই হোক, ইরান যে প্রতিশোধ নেবে, তা হয়তো আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
 
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডসের (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান মোহসেন রেজায়ী বলেছেন, কাসেম সোলেমানি হত্যাকাণ্ডে ইসরাইলও জড়িত। তারা লুকিয়ে থাকতে পারবে না। তিনি বলেন, ইসরাইল নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই, কারণ ইরানের আঙুল ইসরাইলের দিকেও রয়েছে।
 
তিনি বলেন, ইতিহাস প্রমাণ করে ট্রাম্প যুদ্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট সক্ষম নন। যুক্তরাষ্ট্র না বুঝেই খুব বড় ঝুঁকি নিয়েছে, ট্রাম্প শিগগির বুঝতে পারবেন তিনি কী বিপজ্জনক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি বলেন, সোলেমানি ইরানের পুত্র। ইরানে এমন কোনও শহর বা গ্রাম নেই যেখানে তার জন্য শোক করছে না।
 
এদিকে ইরাকের মাটিতে সোলেমানিকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় আরেকটি ঘটনাও ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এতদিন কেবল ইরাকের শিয়াপন্থী স্থানীয় যোদ্ধারাই ইরানের, বিশেষ করে সোলেমানির অনুসারী ছিল। এবার হয়ত ইরাকের রাজনীতিকরাও নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থে ইরানের দিকে ভিড়বেন।
 
হামলার পরপরই ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি এবং দেশটির শিয়া সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক গুরু আয়াতুল্লাহ আলি আলুসিস্তানি নিন্দা জানিয়েছেন। দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেন। বাগদাদের তাহরির স্কয়ারে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে একজোট হয়ে সংগ্রাম করার ঘোষণা দিয়েছে ইরানপন্থী ও ইরানবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
 
ইরাকের মাটি থেকে মার্কিন সেনাদের তাড়ানোর দাবি করছেন ইরাকি আইনপ্রণেতারা। এ নিয়ে রোববার রাতে ইরাকের পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশন বসে। মার্কিন সেনা সরিয়ে নিতে ইরাকি পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস করে।
 
পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার লামু কাউন্টিতে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে আল শাবাব গোষ্ঠী। জঙ্গি হামলায় কতজন হতাহত হয়েছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত খবর জানা যায় নি। লামু কাউন্টির কমিশনার ইরুঙ্গু মাচিয়ারা হামলার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, একটি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
 
তবে জঙ্গিদের জবাব দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কেনিয়ার যৌথ বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়। গোষ্ঠী আল শাবাবের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মুজাহিদিন যোদ্ধারা শত্রুপক্ষের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেছে ও সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। সেনাঘাঁটির একটি অংশ তারা দখল করে রাখে।
 
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় কাসেম সোলেমানিসহ সাতজন নিহত হন। এর পরপরই প্রতিশোধের ডাক দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন ইরান, ইরাকের শিয়াপন্থীরা।
 
ইরানের মাটিতে সোলেমানির লাশ : মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলেমানির লাশ ইরানে পৌঁছেছে। রোববার ভোররাতে ইরাক থেকে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আহওয়াজ বিমানবন্দরে তার লাশ পৌঁছে।
 
এ সময় ইরানের শীর্ষস্থানীয় শত শত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাবে তার কফিন পৌঁছলে তাতে শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে। এ শহরে এর আগে এত মানুষ একসঙ্গে কখনও দেখা যায় নি। ইরানে তার মৃতদেহ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বাঁধভাঙা ঢল নামে রাজপথে।
 
শোকার্ত এসব মানুষ কালো পোশাক পরেছিলেন। তাদের হাতে ছিল সবুজ, সাদা আর লাল রঙের পতাকা। শহীদের রক্তের রংকে বোঝানোর জন্য এমন রং ব্যবহার করা হয়। ইরানের গ্রাম, শহর সর্বত্র শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
 
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ইরানের খুজিস্তান প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর আহওয়াজে জেনারেল সোলেমানির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার লাশ ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ নগরীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুপুরে ইমাম রেজার (আ.) মাজার প্রাঙ্গণে আরেক দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
 
তেহরান, কোম ও সোলেমানির জন্মস্থান দক্ষিণ ইরানের কেরমান শহরে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সোলেমানির অসিহত অনুযায়ী কেরমানেই তার লাশ দাফন করা হবে। শনিবার ইরাকের কাজেমাইন, বাগদাদ, কারবালা ও নাজাফ শহরে জেনারেল সোলেমানি ও তার সহযোদ্ধাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ইরাকের লাখ লাখ মানুষ এসব জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
 
ইরানের মসজিদের মিনারে মিনারে রক্তলাল ‘যুদ্ধপতাকা’: সোলেমানি হত্যার প্রতিশোধের বার্তা দিয়ে ইরানের মসজিদের চূড়ায় যুদ্ধের ইঙ্গিত করে এমন লাল পতাকা উড়িয়েছে ইরানি জনগণ। শনিবার কোম প্রদেশের পবিত্র মসজিদ জামকারানের সর্বোচ্চ গম্বুজে রক্তলাল পতাকা ওড়ায় কর্তৃপক্ষ।
 
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জামকারান মসজিদে রক্তলাল পতাকা উড়ল। এ পতাকা ওড়ানোকে সোলেমানি হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইরানের বদলা নেয়ার অঙ্গীকার হিসেবে দেখা হচ্ছে। পতাকাটিতে লেখা রয়েছে, ‘যারা হোসেনের রক্তের বদলা নিতে চায়।’
শিয়া সংস্কৃতিতে লাল পতাকা অন্যায় রক্তপাতের বদলা নেওয়ার প্রতীক।
 
ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলার হুমকি: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুশিয়ার করে বলেছেন, তেহরান মার্কিন নাগরিক বা সম্পদের ওপর হামলা চালালে তার জবাবে ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালানো হবে। তিনি বলেন, ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে খুব দ্রুত ও কঠোরভাবে হামলা চালানো হবে।
 
সোলেমানি নিহত হওয়ার পর ইরান প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করায় ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেন। টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, জেনারেলের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ইরান যুক্তরাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কিছু সম্পদ টার্গেট করার কথা খুব জোরালোভাবে বলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ৫২টি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করেছে।
 
তিনি বলেন, এগুলোর মধ্যে কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ও ইরানের সংস্কৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তেহরান যুক্তরাষ্ট্রে হামলা করলে এসব টার্গেট খুব দ্রুত কঠোর হামলার মুখে পড়বে। ট্রাম্প বলেন, ৫২টি টার্গেট ইরানে বন্দি থাকা ৫২ জন আমেরিকানের প্রতিনিধিত্ব করবে। ১৯৭৯ সালের শেষদিকে মার্কিন দূতাবাস থেকে আটক হওয়ার পর তারা ইরানে এক বছরের বেশি সময় বন্দি ছিল।
 
তার এ টুইটের পরই মার্কিন সরকারের একটি ওয়েবসাইট হ্যাক হয়ে যায়। আমেরিকান ফেডারেল ডিপোজিটরি লাইব্রেরি প্রোগ্রামের ওয়েবসাইটটি হ্যাক হওয়ার পর দাবি করা হয়, ইরানের সাইবার নিরাপত্তা গ্রুপের হ্যাকাররা এটি হ্যাক করেছে। এতে বলা হয়- ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের পক্ষ থেকে এটি একটি বার্তা।
 
আমাদের মিত্রদের সমর্থন করা থেকে আমরা পিছপা হব না: ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের শিকার মানুষ, ইয়েমেনে নির্যাতনের শিকার বাসিন্দারা, সিরিয়ার জনগণ ও সরকার, ইরাকের জনগণ ও সরকার, বাহরাইনের নির্যাতিত মানুষ, ফিলিস্তিন ও লেবাননের মুজাহিদি প্রতিরোধ, তাদের আমরা সব সময়ই সমর্থন করব।
 
বাগদাদে সোলেমানির জানাজায় লাখ লাখ মানুষের অংশ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর টুইটটি করেন ট্রাম্প। আমেরিকানদের ওপর হামলা না চালাতে ইরানকে সতর্ক করেন তিনি। তেহরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিলের পর থেকে ট্রাম্প পরস্পরবিরোধী নীতি অনুসরণ করে আসছেন। অর্থনৈতিক চাপ বাড়িয়েছেন, সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন।
 
অপর এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, সামরিক অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্তরাষ্ট্র দুই ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। আমরাই বিশ্বের বৃহত্তম ও সর্বোত্তম সামরিক শক্তি। ইরান যদি মার্কিন ঘাঁটি বা অন্য কোনো আমেরিকানের ওপর হামলা চালায় তবে আমরা আমাদের ব্র্যান্ড নিউ এই ‘সুন্দর’ অস্ত্রগুলো সেখানে পাঠাব।
 
এ বিষয়ে কোনও সংশয় নেই। সোলেমানিকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্র বেশ বেকায়দায় পড়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, সোলেমানিকে হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররা যতটা সহায়ক হবে বলে তারা ভেবেছিলেন, তা হয়নি। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপীয় সব মিত্রকে বুঝতে হবে, আমরা কী করেছি। আমরা হাজারও প্রাণ বাঁচিয়েছি।
 
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের উপপ্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলি ফাদাভি বলেছেন, সোলেমানিকে হত্যার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে। তিনি বলেন, তারা বলেছে, তোমরা যদি প্রতিশোধ নিতেই চাও, তাহলে আমরা যতটা করেছি, তার সমানুপাতিক কিছু কর।
 
যুক্তরাষ্ট্র কোন্‌ মাধ্যমে ইরানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল তা অবশ্য তিনি বলেন নি। তবে যোগাযোগমাধ্যমের একটি ইঙ্গিত সম্ভবত আছে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের কথায়। শুক্রবার রাতে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরানে সুইজারল্যান্ডের দূত যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ফালতু একটি বার্তা নিয়ে এসেছিলেন।
 
তিনি বলেন, ওই রাষ্ট্রদূতকে তলব করে লিখিতভাবে কড়া জবাব দেওয়া হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার নিশ্চিত করেছে, ইরানে তাদের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মার্কিন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে শুক্রবার সকালে একটি চিঠি ইরানি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন।
 
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স প্রায়োরিটিজের নীতিবিষয়ক পরিচালক বেন ফ্রাইডম্যান বলেন, ইরান প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিলে যুক্তরাষ্ট্রকে বিপদে পড়তে হবে। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে যে সংখ্যক মার্কিন সেনার উপস্থিতি রয়েছে, তা ইরানের আক্রমণ মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট নয়।
 
সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডল ইস্ট সেন্টারের বিশেষজ্ঞ ফানার হাদ্দাদ বলেন, কেউ কেউ হয়ত মনে করছেন, সোলেমানি নিহত হওয়ায় ইরাকে ইরানের পাখা ভেঙে গেছে; কিন্তু উল্টোটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ইরাকি রাজনীতিকরা এখন ইরানের সঙ্গে আরও বেশি ঘনিষ্ঠ হবেন।
 
এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান সম্মুখ সমরে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। এতে ইরানেরই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তেলসমৃদ্ধ দেশটির বেশির ভাগ তেল শোধনাগারই উপকূলবর্তী এলাকায়। উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যে সামরিক উপস্থিতি রয়েছে, তার জন্য এসব শোধনাগার সহজ লক্ষ্যবস্তু।
Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment