Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 22, 2024
হেডলাইন
Homeআন্তর্জাতিক৫০ শতাংশ নারী শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত

৫০ শতাংশ নারী শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত

৫০ শতাংশ নারী শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত

ইউএনএফপিএ এর নতুন রিপোর্ট অনুসারে, প্রায় ৫০ শতাংশ নারী তাদের শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত। ধর্ষণ, বন্ধ্যাকরণ, কুমারীত্ব পরীক্ষা, নারীদের খতনার (জেনিটাল মিউটিলেশন) মত সহিংসতাসহ আরও অনেক কিছুই এই অধিকার লঙ্ঘনের অন্তর্গত।

ইউএনএফপিএ ১৪ এপ্রিল ২০২১ প্রকাশিত ফ্ল্যাগশিপ স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট ২০২১ অনুযায়ী আফ্রিকা, এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকার ৫৭ টি দেশের প্রায় অর্ধেকের মত নারী তাদের জীবনসঙ্গীর সাথে সহবাস করা বা না করার সিদ্ধান্ত, জন্মনিরোধক ব্যবহার করা বা না করা কিংবা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের করার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত ।

এই প্রথমবারের মত জাতিসংঘের একটি রিপোর্ট নারীর শারিরীক স্বায়ত্তশাসনের উপর আলোকপাত করেছে: নির্যাতিত হওয়ার কোনো ভয়ভীতি বা অন্য কেউ তার হয়ে সিদ্ধান্ত নেবার দায়িত্ব নেওয়া ব্যতীত নিজের শরীর এবং সত্ত্বা ওপর কর্তৃত্ব করার শক্তি অর্জন করা। শারিরীক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার বঞ্চিত হওয়া প্রতিটি নারী বা মেয়ের জীবনে মারাত্মক ক্ষতি করার চাইতেও বিশাল প্রভাব ফেলে: অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়, নারীর দক্ষতা অবমূল্যায়িত হয়, , এবং ফলশ্রুতিতে স্বাস্থ্য ও আইনি সেবার ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

মূল তথ্য: আমার শরীর, কিন্তু সিদ্ধান্ত আমার নয়
এই বৈশ্বিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে ইউএনএফপিএ দুইটি বিষয় পরিমাপ করছেঃ নারীর নিজের শরীর সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা এবং সেই রাস্ট্রের আইন কতটুক পর্যন্ত নারীর শরীর সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহন সমর্থন করে বা বাধা প্রদান করে। তথ্য উপাত্ত থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, নারীর উচ্চ শিক্ষা এবং সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতার মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগসূত্র রয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে যে সকল দেশে তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায়:
● মাত্র ৫৫ শতাংশ নারী স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ, জন্মনিরোধক ব্যবহার এবং সহবাস করতে আগ্রহী বা অনাগ্রহী সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমতায়িত।
● মাত্র ৭১ শতাংশ দেশ সর্বাত্মক মাতৃত্বকালীন সেবা নিশ্চিত করে।
● মাত্র ৭৫ শতাংশ দেশে সম্পূর্ণ বৈধভাবে ও সমতানুসারে জন্মনিরোধক প্রাপ্তি নিশ্চিত করে।
● প্রায় ৮০ ভাগ দেশে যৌন স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা সমর্থনে আইন রয়েছে।
● মাত্র ৫৬ ভাগ দেশে ব্যাপক যৌন শিক্ষা সমর্থনে আইন ও নীতিমালা রয়েছে।

ইউএনএফপি-এর নির্বাহী পরিচালক, ডঃ নাটালিয়া কানেম বলেছেন, “প্রায় অর্ধেক নারী এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না যে সে যৌন মিলন করবে কিনা, গর্ভনিরোধক ব্যবহার করবে কিনা বা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করবে কিনা, যা আমাদের জন্য চুড়ান্ত অপমানজনক। তিনি আরও বলেন, “প্রকৃতপক্ষে, লক্ষ কোটি নারী এবং মেয়ে, তাদের নিজেদের শরীরের উপর কোনো কর্তৃত্ব নেই। তাদের জীবন অন্যদের দ্বারা পরিচালিত হয়।
এই প্রতিবেদনটি আরও যেসব উপায়ে নারী, পুরুষ, মেয়ে ও ছেলে শিশু তাদের শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত সেগুলোর ওপরও আলোকপাত করেছে:
● বিশটি দেশ বা অঞ্চলে “তোমার ধর্ষককে বিবাহ কর” আইন রয়েছে, যেখানে একজন ধর্ষক কোনো নারী বা মেয়েকে ধর্ষণ করার পর তাকে বিয়ে করে ফৌজদারি আইনের বিচার প্রক্রিয়া থেকে পার পেয়ে যেতে পারে।
● তেতাল্লিশটি দেশে বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে কোনও আইন নেই (জীবনসঙ্গী কর্তৃক ধর্ষণ)।
● ৩০ টিরও বেশি দেশে নারীদের ঘরের বাইরে চলাফেরা করায় বিধিনিষেধ রয়েছে।
● প্রতিবন্ধী মেয়ে এবং ছেলে প্রায় তিনগুণ বেশি যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে বিশেষ করে মেয়ে শিশুরা হবার সর্বাত্মকঝুঁকিতে থাকে।

সমাধান: ‘হ্যাঁ’ বলার সক্ষমতা এবং ‘না’ বলার অধিকার
প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, কীভাবে সহিংসতা মোকাবিলার প্রচেষ্টা পুনরায় নারীকে শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ধর্ষণের ফৌজদারি মামলা পরিচালনা প্রক্রিয়াকালীন সময়ে যৌন নির্যাতনের সার্ভাইভারকে অস্বস্তিকর শারীরিকভাবে কুমারিত্ব পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ।

প্রতিবেদনে দেখা যায় যে,প্রকৃত সমাধানগুলি অবশ্যই সার্ভাইভারদের প্রয়োজন এবং অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে গ্রহণ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মঙ্গোলিয়ায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের চাহিদা সম্পর্কে সরকারকে সরাসরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সংগঠিত হয়েছিল। অ্যাঙ্গোলায়, যে সকল যুবক-যুবতীরা তাদের শরীর, স্বাস্থ্য এবং অধিকার সম্পর্কে শিক্ষা পেয়েছে, তারা স্বাস্থ্য সেবা গ্রহন, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহার, যৌন মিলনে না বলা এবং যৌন সহিংসতার পর বিচার চাইতে পেরেছে।

“শারিরীক স্বায়ত্তশাসন থেকে বঞ্চিত করা নারী ও মেয়েদের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন যা বৈষম্যকে প্রকট করে এবং জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য থেকে উদ্ভূত সহিংসতা স্থায়ী করে, ” বলেছেন ড. নাতালিয়া কানেম। “এটি আত্মসত্ত্বা ধ্বংসের চেয়ে কম কিছু নয়, এবং এটি অবশ্যই থামাতে হবে।”

অপরদিকে, ড. কানেম বলেছেন,” যে নারীর তার নিজের শরীরের ওপর কর্তৃত্ব আছে সে তার জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও বেশি ক্ষমতায়িত। সে কেবল শারিরীক স্বায়ত্তশাসনই অর্জন করে নি, বরং স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা, আয় এবং সুরক্ষার ক্ষেত্রেও অগ্রগতির অর্জন করেছে। সে যেমন নিজের জীবনে সাফল্য অর্জন করে তেমনি তার পরিবারও সাফল্য লাভ করে।

ইউএনএফপি-এর একটি বার্ষিক ফ্ল্যাগশিপ প্রকাশনা হল “স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট”। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর প্রকাশিতএই প্রকাশনাটি যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকারের ক্ষেত্রে উদীয়মান বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করে, সেগুলোকে মূলধারায় নিয়ে আসে এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নের জন্য সেগুলোর প্রতিবন্ধকতা এবং সুযোগগুলো উপস্থাপন করে।❐

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment