অসন্তোষের গুঞ্জন বাড়ছে চীনে
আগামী মাসে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর এই কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এতে পার্টির নেতা নির্বাচন করা হয়। আসন্ন কংগ্রেসে শি জিনপিং টানা তৃতীয়বার দলের নেতা নির্বাচিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই অসন্তোষের গুঞ্জন বাড়ছে চীনে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইন্টেল এশিয়া ডট নেট।
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউটের থিংক-ট্যাঙ্কের চীন-কেন্দ্রিক গবেষক নাথান রুসার বলেছেন, ‘‘এই মূহুর্তে চীনে অভ্যুত্থানের কোন প্রমাণ নেই। এটি নিয়ে ধারণা করারও কোন কারণ নেই।’’
তিনি আরও বলেন, সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের প্রধান ছিলেন শি। তার প্রথম দুই মেয়াদে বিরোধীদের অপসারণ, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং বিভিন্ন ক্র্যাকডাউনের মাধ্যমে কাটিয়েছেন শি। এছাড়াও শি চেরি-পিকিং সেনা নেতাদের হাত করে তার ক্ষমতা মজবুত করেছেন।
মাও সেতুংয়ের পর থেকে কোনো চীনা নেতাই তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসেননি। ধারণা করা হচ্ছে মাও সেতুংয়ের পর শি জিনপিং এমন এক নেতা যিনি তৃতীয়মেয়াদে ক্ষমতার আসতে যাচ্ছেন।
গণচীনের মহান বিপ্লবী নেতা মাও সে তুংকে আধুনিক চীনের রূপকার ও প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়। তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন চীনা সমাজ ও সংস্কৃতিতে তার প্রভাবের কারণেই। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের চেয়ারম্যান এবং আমৃত্যু কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে দেশটির সাংহাই, চংকিং এবং শানসি প্রদেশের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান গং দাওন, দেং হুইলিন এবং লিউ জিনয়ুনের বিরুদ্ধে শির প্রতি আনুগত্য এবং প্রাক্তন জননিরাপত্তা সহ-মন্ত্রী সান লিজুনের নেতৃত্বে একটি “রাজনৈতিক চক্রের” অংশ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। তবে গত শুক্রবার তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছে।
শি জিনপিংইয়ের সমালোচকরা বলছেন, তিনি তার ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে প্রচারাভিযান ব্যবহার করেছেন। শি’র প্রকাশ্যে আসার মাধ্যমে অভ্যুত্থানের জল্পনা গুজব বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে এ কথা বলা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে মধ্য এশিয়ায় আনুষ্ঠানিক সফর থেকে দেশে ফেরার পর এটিই তার প্রথম প্রকাশ্যে আসা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনে সামরিক অভ্যুত্থান ও শি জিনপিং গৃহবন্দি বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। চীনের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, শি জিংপিং উজবেকিস্তান থেকে ফিরেই করোনার আইসোলেশনে চলে গিয়েছিলেন। আইসোলেশনের সময় শেষ হওয়ার পরই তিনি আবার জনসম্মুখে এসেছেন।