আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ট্রাম্পকে দায়ী করলো বাইডেন প্রশাসন
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে একটি ক্লাসিফায়েড বা গোপন প্রতিবেদনের সংক্ষেপ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস।
প্রতিবেদনে আফগানিস্তান থেকে প্রস্থানে বিশৃঙ্খলার জন্য গোয়েন্দা ব্যর্থতা ও ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়েছে। ঐ প্রতিবেদনের বিস্তারিত কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউস স্বীকার করে নিয়েছে যে, তালেবানের শক্তি ও আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর দুর্বলতা বুঝতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল। গোয়েন্দা বিষয়ে ‘‘আমরা যে ঠিক করিনি, তা স্পষ্ট,’’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কারবি।
তবে ‘যে যুদ্ধ অনেক আগেই শেষ হওয়া প্রয়োজন ছিল সেই যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আর মার্কিন সেনা পাঠাতেন না’ বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল। ‘‘২০ বছরের বেশি সময় পর, দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করার পর এবং তিন লাখ সদস্যের আফগান সেনাবাহিনী দাঁড় করানোর পরও তালেবান যে দ্রুততায় ও সহজে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, তা এটাই প্রমাণ করে যে, একটি স্থায়ী ও মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আরও অনেক বড় করা ব্যতীত গতিপথ পরিবর্তন করতে পারতো, এমন কোনো কিছু ছিল না।’’
২০২১ সালের ৩০ আগস্ট মার্কিন সেনা সরানোর কাজ শেষ হয়েছিল। তার আগে ২৬ আগস্ট কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ জন মার্কিন সেনা ও ১৭০ জন আফগান নাগরিক নিহত হয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সেনা কাবুল ত্যাগের সময়ই তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল। ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সাবেক কয়েকজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রকে সেনা না সরানোর আহ্বান জানিয়েছিল।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২১ সালের শেষদিকে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে নিতে তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন।
হোয়াইট হাউসের প্রতিবেদনে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলা হয়েছে, বাইডেন ক্ষমতা নেওয়ার সময় আফগানিস্তানে মার্কিন অপারেশন বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল। কারবি বলেন, বাইডেনের কাছে দুটি বিকল্প ছিল, মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়া কিংবা তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করা।
‘‘সাবেক ট্রাম্প প্রশাসন বাইডেন প্রশাসনের জন্য একটি তারিখ রেখে গিয়েছিল, কিন্তু তা কার্যকর করার কোনো পরিকল্পনা রেখে যায়নি। চার বছর ধরে অবহেলার পরে এবং কিছু ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে শক্তির ক্ষয় ঘটিয়ে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খলভাবে প্রস্থানের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা, অফিস এবং এজেন্সির প্রয়োজন ছিল সেগুলো বেহাল অবস্থায় ছিল,” বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।