পৃথিবীর মানুষ শুরুর দিকের এক চলচ্চিত্রে একবার একটি রেলগাড়িকে ছুটে আসতে আসতে দেখে দর্শক প্রেক্ষাগৃহ থেকে দৌড়ে পালিয়েছিল। এটি সোয়া শ’ বছর আগের কথা। টেলিভিশন এল তার বছর তিরিশেক পরে। চলচ্চিত্র ততদিনে অন্যতম বিনোদনের মাধ্যমগুলোর সঙ্গে মিশে যেতে চাইছে। মানুষও আধুনিক এ প্রযুক্তির সঙ্গে একটু একটু করে মিশতে শুরু করেছে। মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে উঠতে চাইছে এ প্রযুক্তি। মানুষও আপত্তি করছে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ টেলিভিশনকে এক মাত্রায় পৌঁছে দেয়। মূলত এরপরই টেলিভিশনের ‘গণমাধ্যম’ চরিত্রটি প্রতিষ্ঠা পায়।
টেলিভিশনের বয়স এখন প্রায় শতবর্ষ। অনেকে বলেন, বদলে গেছে অনেক কিছু। বদলেছে পৃথিবী, বদলেছে সময়, বদলে গেছে মানুষ। আমরা বলি, না, বদলায় নি কিছুই। কেবল উন্নত হয়েছে। প্রযুক্তির ভাষায় আমরা যাকে আপগ্রেড বলি, ঠিক তাই। সেই নির্বাক চলচ্চিত্র পর্দার ছুটে আসা রেলগাড়ি এখন ত্রিমাত্রিক আর জীবন্ত হয়েছে। সেই ছুটে আসতে থাকা রেলগাড়ি দেখে যে দর্শক ছুটে পালিয়েছিল, আজ সে দর্শক অতিকায় ডায়নোসর দেখে ভ্রু কুঁচকে যাচাই করে নির্মাতা কতটা জীবন্ত করে দেখাতে পেরেছে।
আর টেলিভিশন নামের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংযোজনের ছোট্ট এই যন্ত্রটি, সেটি একলাই ধারণ করে চলেছে সভ্যতার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত মানুষ আর তার কাঙ্ক্ষিত কল্পনা। কিন্তু এ কল্পনা একলা হলে চলবে না। এর সঙ্গে চাই বাস্তবতা। চাই সত্য। চাই সুন্দর। চাই সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি। আর চাই বিনোদন। আর সংবাদ তো বলাই বাহুল্য! আর ভাবুন তো, কি আনন্দ, কি শিক্ষা, কি জ্ঞান, উপদেশ, সতর্কবাণী- টেলিভিশন নামের এ ছোট্ট যন্ত্রটি কি অসম্ভবভাবেই না এর সকলই পূরণ করে চলেছে!
তবে ঘাটতি আছে। ঘাটতি গুণগত মানে। সত্য যদি গোয়েবলসিয় সত্য হয়, সুন্দর যদি আরোপিত হয়, সংস্কৃতি যদি অপসংস্কৃতি হয়, অর্থনীতি যদি অনর্থমূলক হয় এবং রাজনীতি নীতিহীন হয় উপস্থাপনে- তাহলে সে পর্দায় তাকিয়ে আপনি থাকবেন কেন! শুনবেন কেন তার শব্দ? সেকারণেই আজকে বাংলাদেশে বিশাল আড়ম্বরে চোখ ধাঁধানো ২৭টি টেলিভিশন চ্যানেল থাকলেও মানুষ খবর রাখে না কবে কোথায় কোন্ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।
সেই দায়বদ্ধতা থেকে ‘বাংলা চ্যানেল’ অনাড়ম্বরে স্বল্প আলোতে সত্যটা নিয়ে, সুন্দরের হাত ধরে, বাংলার সংস্কৃতি পাথেয় করে এসে দাঁড়িয়েছে দর্শকের বসার ঘরের দরজায়। সঙ্গে আছে প্রাণবন্ত এক কর্মীবাহিনী, যারা আপনার তথ্য অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন।
থাকুন আমাদের সঙ্গে। দেখুন। যাচাই করুন। এবং তারপর সিদ্ধান্ত নিন। ‘বাংলা চ্যানেল’-এর নতুন দিগন্তে আপনি স্বাগত।