ইকুয়েডরের মর্গে উপচে পড়েছে লাশ
করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত পুরো পৃথিবী। ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা আর অস্ট্রেলিয়ার মতো দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতেও ভয়াবহ অবস্থা।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ইকুয়েডরে।
গোটা দেশ যেন মৃত্যুপুরী। দেশের গোয়াকিলের একটি হাসপাতালের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাতে জানা যাচ্ছে, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত মানুষের মৃতদেহ সরানোর কাজ করছে প্রশাসন। বিভিন্ন রাস্তায় মিলছে বেওয়ারিশ লাশ।
ইকুয়েডর করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি আর সামাল দিতে পারছে না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের মৃতদেহ সরানোর কাজ করছে প্রশাসন। রাস্তায় রোজই মিলছে বেওয়ারিশ লাশ। ইকুয়েডরের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মর্গে উপচে পড়েছে লাশ।
তাই মৃতদেহ রাখা হচ্ছে বাথরুমে। নার্সরা বলেছেন, বহু মানুষকে বেড দেওয়া যায় নি। ফলে অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। হাসপাতাল জুড়ে আক্রান্তদের হাহাকার। বহু মানুষ হাসপাতালের বাইরেও মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মর্গের কর্মীরা আর লাশ নিতে চান না। তখন মৃতদেহের স্থান হয়েছে বাথরুমে।
প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০টি লাশ হাসপাতালের বাথরুমে রাখা হচ্ছে। ইকুয়েডর সরকার জানিয়েছে, দেশটিতে ২৩ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। প্রায় ৬০০ জন মারা গেছেন। যদিও চিকিৎসক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি।
হাসপাতালগুলোতে লাশ রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। মৃতদেহ রাখতে হচ্ছে বাথরুমেও। কোভিড-১৯ রোগীর লাশে হাসপাতালগুলোর মর্গ ভর্তি হয়ে গেছে। বাধ্য হয়েই বাথরুমে লাশ স্তূপ করে রাখতে হচ্ছে। একজন চিকিৎসক বলেছেন, চিকিৎসকেরা বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বিছানা পুনরায় ব্যবহার করতে সেখানে থাকা লাশ জড়িয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।
ইকুয়েডরে করোনায় প্রায় ২৩ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রায় ৬০০ জন মারা গেছেন। সেখানে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের শিকার হয়েছে গোয়াকিল শহরটি।
একজন নার্স জানিয়েছেন, ‘প্রত্যেক নার্সকে প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ জন রোগীকে দেখতে হতো। এরপর এত রোগী আসতে শুরু করল যে শুশ্রূষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। বাথরুমে অনেকে মারা গেছেন, অনেকে মেঝেতে শুয়ে মারা গেছেন, কেউ চেয়ারে বসে মারা গেছেন।’◉