Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
November 22, 2024
হেডলাইন
Homeআন্তর্জাতিককরোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে

করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে

করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস খুব অল্প সময়ের মধ্যে চীনসহ প্রায় ২৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশেও এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
 
মানুষের এই উদ্বেগে অনেকটা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভুয়া খবর।
 
এসব ভুয়া খবরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে অদ্ভুত সব কারণকে দায়ী করার পাশাপাশি, করোনাভাইরাসের অনেক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হচ্ছে।
 
এমনকি বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ শনাক্ত হয়েছে, এমন দাবিও তোলা হয়েছে।
 
যদিও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কারও মধ্যে করোনা ভাইরাসের কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর)।
 
এই গুজব ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এ ধরণের ভুয়া খবর ভাইরাসের মতোই ক্ষতিকর হতে পারে।
 

আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে মন্তব্য করে এ ধরনের প্রচারে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

 
এক্ষেত্রে উদ্বিগ্ন না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
 
আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলো জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে। যেমন ফেসবুকে আমি একটি পোস্ট দেখলাম – ভারতে দুই হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত। অথচ সত্যিটা হল কেরালা রাজ্যে তিনজনের মধ্যে ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। আর ২০০০ জন চীন থেকে ফিরেছেন, তাদের কেবল পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
 
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘তারা কেউ আক্রান্ত নন। এছাড়া বাংলাদেশের অমুক জেলায় করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে, এমন খবরও দেখেছি, যেগুলোর কোনও ভিত্তি নেই।’
 
গেল ১ ফেব্রুয়ারি চীনের উহান শহর থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
 
তাদের মধ্যে ৩০১ জনকে আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে এবং বাকি ১১ জনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে।
 
কেননা করোনাভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর উপসর্গ প্রকাশ পেতে এক থেকে ১৪ দিন সময় লাগে।
 
প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তাদের কারও মধ্যেই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয় নি।
 
এদিকে চীন থেকে সম্প্রতি যারা বাংলাদেশে ফিরেছেন বিশেষ করে বাংলাদেশে যেসব চীনা নাগরিক আছেন তাদের কারও মধ্যে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায় নি।
 
তারপরও এই ভুয়া খবরগুলোর কারণে এই মানুষগুলোকে পারিবারিকভাবে এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে বলে আক্ষেপ করেন সেব্রিনা ফ্লোরা।
 
তিনি বলেন, ‘চীন থেকে ফিরেছেন এবং ভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা গেছে এমন ৫১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন পরীক্ষা করা হয়েছে। কোন পরীক্ষায় কারও মধ্যে ভাইরাস শনাক্ত হয় নি।’
 
সতর্কতার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের পাশাপাশি দেশের নৌবন্দর, স্থলবন্দরগুলোতেও চীন থেকে ফেরত যাত্রীদের থারমাল ডিটেক্টরের সাহায্যে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
 
মঙ্গলবার পর্যন্ত বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা ৭ হাজার ২৮৪ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায় নি।
 
এজন্য করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে কোনও তথ্য প্রচারের আগে সেটা ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
 
এছাড়া করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
 
কোথাও বলা হচ্ছে, রসুন, লবঙ্গ, আদাজল খেলে করোনাভাইরাস ভালো হয়। এ নিয়ে অনেকে বিভিন্ন ওষুধের বিজ্ঞাপনও প্রচার করছেন। যেগুলোর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
 
এ ব্যাপারে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে এমন কোনও ভ্যাকসিন বা টিকা এখনও আবিষ্কার হয় নি। এ রোগের আলাদা চিকিৎসা পদ্ধতিও বের হয় নি। সাধারণ সর্দি কাশি বা শ্বাসকষ্টে যে ধরণের চিকিৎসা দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাপী সেটাই দেয়া হচ্ছে। তাই গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।’
 
এসব গুজবের কারণে একদিকে মানুষ যেমন আতঙ্কিত হয়ে পড়বে তেমনি ভুল চিকিৎসার দিকে ধাবিত হয়ে আরও বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
 
এমন অবস্থায় তিনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটের তথ্য উপাত্ত যাচাই করে কিংবা স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতামত নিতে বলেছেন।
 
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের বেশিরভাগ সেরে উঠছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যায়। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই। শুধু সাবধান থাকতে হয়।
 
ভাইরাসটি সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য আসছে। কিন্তু একজন রোগীর তথ্য যেটা কিনা শুধু তার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য সেটা বিচার বিশ্লেষণ না করেই অনেক গণমাধ্যমে খবর প্রচার করা হয়েছে বলে তিনি আক্ষেপ করেন।
 
চীনা স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে মিস ফ্লোরা বলেন, ‘করোনাভাইরাসে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ৮০% রোগীর বয়স ৬০ বছরের ওপরে এবং ৭৫% রোগীর অন্যান্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা কিডনি সমস্যাও রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে করোনাভাইরাস সবার জন্য মারাত্মক আকার নেয় না। তাই আমরা আশ্বস্ত করতে চাই এটি কোনও জটিল রোগ নয়। গুজবে আতঙ্কিত না হয়ে সাবধান থাকলেই এর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।’
 
 
 
Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment