খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার কিছু সময় পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।
শুনানির শুরুতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপিল বেঞ্চে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
খালেদার শুনানি শুরুর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের উদ্দেশে আপিল বিভাগ বলেন, আজকের শুনানিতে উভয় পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবী থাকবেন। এই বলে আদালত বিরতিতে যান।
এর আগে বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ তার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে দাখিল করে।
খালেদা জিয়ার জামিন আবদেনের শুনানি ঘিরে সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। আদালতে প্রবেশেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। আর্চওয়ে ও মেটাল ডিরেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, সাংবাদিকসহ সংশ্নিষ্টদের আদালতে প্রবেশ করানো হয়।
জামিন শুনানির আবেদনটি আপিল বিভাগের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় ১২ নম্বরে রাখা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের পর গত ২৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থার মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দিন প্রতিবেদন দাখিল না করায় শুনানিকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির আদালতে প্রায় তিন ঘণ্টা ‘নজিরবিহীন’ হট্টগোল হয়।
ওইদিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে খালেদার স্বাস্থ্য প্রতিবেদনে জমা দিয়ে ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ঠিক করেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত বছরের ২৯ অক্টোবর বিচারিক আদালতে সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি। সর্বশেষ গত ৩১ জুলাই তার জামিন আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগে যান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
এছাড়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত খালেদা জিয়াকে জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন। পরে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। দুই দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত ১ এপ্রিল থেকে অসুস্থ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন।