‘ঘুষের চেয়ে ভিক্ষা উত্তম, আমাকে ভিক্ষা দিন’
ঘুষ, দুর্নীতি আর ন্যায় বিচার এক সঙ্গে চলে না, স্লোগান সম্বলিত লিফলেট বিতরণ ও সহযোগীদের নিয়ে মানববন্ধন করায় মাহাবুবুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে ১৫ দিনের জন্য আইন পেশা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। পাশাপাশি তাকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোরও নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
তবে এই নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই তিনি সন্ধ্যায় জজ কোর্টের বিপরীতে মানিকগঞ্জ শহীদ রফিক সড়কে দাঁড়িয়ে এর প্রতিবাদ জানান তিনি। এ সময় তার গলায় ঝুলছিল- ‘ঘুষের চেয়ে ভিক্ষা উত্তম। করলাম প্রতিবাদ, হইলাম বহিষ্কার। আমাকে ভিক্ষা দিন।’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েকজন আইনজীবী গত ১০ অক্টোবর মানিকগঞ্জ বিচার বিভাগে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে আদালত চত্বরে মানববন্ধন করেন। সেখানে তারা দাবি করেন এফিডেভিট করতে নির্দিষ্ট ফির অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এক হাজার টাকার কমে কোনো নকল সরবরাহ করা হচ্ছে না। রেকর্ড রুম থেকে নথি পেতে হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। তারা দাবি করেন আদালতের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বিচারপ্রার্থীদের মামলা খরচ অনেক বেড়ে যায়।
এর প্রেক্ষিতে বুধবার মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক এএফএম নূরতাজ আলম বাহারের স্বাক্ষরে আইনজীবী মাহাবুবুর রহমানকে ১৫ কার্যদিবসের জন্য আইন পেশা থেকে বিরত থাকা এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। মাহাবুবুর ইসলাম ও তার কয়েকজন সহকর্মীদের কর্মকাণ্ডে বার ও বেঞ্চের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান। তিনি জানান, আইনজীবী সমিতির সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাহাবুবুর ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই নোটিশ পাওয়ার পরপরই বুধবার বিকালে আদালত চত্বরের বাইরে শহীদ রফিক সড়কে মাহাবুবুর ইসলাম গলায় একটি প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে এর প্রতিবাদ করেন। প্ল্যাকার্ডে তিনি লেখেন- ‘ঘুষের চেয়ে ভিক্ষা উত্তম। করলাম প্রতিবাদ, হইলাম বহিষ্কার। আমাকে ভিক্ষা দিন।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে অন্যায়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম, আন্দোলন চলবে।