জঙ্গি হামলায় ৫ সেনা হত্যা, ঈদের বদলে কাশ্মীরের গ্রামে শোক!
জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে ভারতীয় সেনার ট্রাকে হামলা চালিয়ে পাঁচ সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে লস্কর-ই-তৈবার সাত জঙ্গি।
সেই ট্রাকে করে ইফতারের ফল নিয়ে যাচ্ছিল সেনারা। এই আবহে পুঞ্চের এক গ্রাম আজ ঈদ পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গ্রামের উদ্দেশেই যাচ্ছিল সেনার ট্রাকটি। জানা গেছে, গ্রামটির নাম সঙ্গীয়োতে। বৃহস্পতিবারের সেই জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন পাঁচ সেনা সদস্য। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সঙ্গীয়োতের অনেককেই।
আমন্ত্রিত ছিলেন গ্রামের প্রধান মুখতিয়াজ খান। এই আবহে মুখতিয়াজ বলেন, ‘যেখানে আমাদের পাঁচ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন, সেখানে কি ইফতার আর কি ঈদ। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গ্রামের মানুষরা এই হামলার খবর পেতেই গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।’
এদিকে প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার জঙ্গিরা ‘রকেট-প্রপেলড গ্রেনেড’ এবং অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে সেনার ট্রাকে হামলা চালিয়েছিল। ঘটনায় রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের পাঁচ সেনার মৃত্যু হয়। আহত হন আরো একজন। নিহত সেনাদের নাম – হাবিলদার মনদীপ সিং, সিপাই হরক্রিষণ সিং, ল্যান্স নায়েক কুলবন্ত সিং, সিপাই সেবক সিং, ল্যান্স নায়েক দেবাশিস।
বৃহস্পতিবার পুঞ্চের যে জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণরেখার ভিম্বার গলি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ট্রাকটি বাসুনিতে রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সদর দপ্তর থেকে জিনিস নিয়ে আসছিল। ভিম্বার গলি এলাকা থেকেও কিছু জিনিসপত্র ট্রাকে তুলেছিলেন সেনারা। এদিকে জঙ্গলে ঘেরা ভিম্বার গলি এলাকায় রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের প্রচুরসংখ্যক সেনা মোতায়েন থাকে। পুঞ্চ ও রাজৌরির মধ্যে সেনার যান চলাচল হয় এই রাস্তা ধরেই।
জানা গেছে, ভিম্বার গলি এলাকায় গভীর জঙ্গল থাকায় জঙ্গিরা সেখানে অনায়াসে গা-ঢাকা দিয়েছিল। জঙ্গলে লুকিয়ে ভারতীয় সেনার কনভয়ে হামলা চালানোর ছক কষেছিল বলে জানা গেছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। হামলার সঙ্গে জড়িত জঙ্গিদের খোঁজে ইতিমধ্যে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে নাগরোটার ১৬ কোর।
আগামী মে মাসে শ্রীনগরে যে জি২০ গোষ্ঠীর বৈঠক আছে, তা বানচাল করার জন্য পাকিস্তান যে চেষ্টা চালাচ্ছে, তার সঙ্গে এই জঙ্গি হামলার যোগ রয়েছে বলে মনে করছে ভারত। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের দাবি, কাশ্মীর ও উত্তরপ্রদেশে সহিংসতা ছড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে ওই হামলার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তানিরা।