জাওয়াহিরির মৃত্যুর কোনো তথ্য নেই!
কাবুলে ড্রোন হামলায় আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হয়েছেন বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করলেও আফগানিস্তানের তালেবান সরকার শুক্রবার জানিয়েছে, জাওয়াহিরির মৃত্যুর কোনো তথ্যই তাদের কাছে নেই। এই সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ মেলেনি। জাওয়াহিরির মৃত্যু নিয়ে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে তালেবান সরকার। এ অবস্থায় জাওয়াহিরির দেহ সম্পর্কে কোনো তথ্য সামনে না আসায় বাড়ছে সন্দেহ। আনন্দবাজার পত্রিকা
কাবুলের কাছে শেরপুরে একটি বাড়িতে জাওয়াহিরি ছিলেন বলে দাবি আমেরিকার। বাইডেনের দাবি, ঐ বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন জাওয়াহিরি। বিষয়টির সত্যতা খতিয়ে দেখতে ঐ বাড়িটির সামনেই পৌঁছে গিয়েছিল একটি সংবাদমাধ্যম। চারপাশ ঘুরেও বাড়ির কোথাও বিস্ফোরণের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে ঐ সংবাদমাধ্যমটি। এর পরেই আরো ঘনীভূত হয় রহস্য। যদিও আমেরিকার এক সংবাদমাধ্যম জাওয়াহিরির মৃত্যুর খবর সামনে আসার পরেই শেরপুরের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পৌঁছে গিয়েছিল। সেখানে স্থানীয় এক বাসিন্দা ঐ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, রবিবার বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়েছেন তিনি। যে বাড়িটিতে জাওয়াহিরি ছিলেন, তার একটি জানালাকে চিহ্নিত করে দেখানো হয়, সেখানেই হামলা চালানো হয়েছিল।
ইতিমধ্যেই জাওয়াহিরি মৃত নাকি জীবিত, তা নিয়ে নানা স্তরে শুরু হয়েছে দাবি-পালটা দাবি। আমেরিকার ঐ অভিযান নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। জাওয়াহিরির মৃত্যুর প্রমাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কার্বি জানিয়েছিলেন, জাওয়াহিরির মৃত্যুর সপক্ষে তার ডিএনএ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ নেই। ঐ মুখপাত্রের দাবি, অন্যান্য সূত্র মারফত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তারা নিশ্চিত হয়েছেন, বেঁচে নেই জাওয়াহিরি।
এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, জাওয়াহিরি যদি মারাই গিয়ে থাকেন, তবে তার মৃতদেহ গেল কোথায়? যদিও অনেকের বক্তব্য, আল-কায়েদা কিংবা তালেবানই হয়তো সরিয়েছে মৃতদেহ। কারণ, আমেরিকার অভিযান যে ব্যর্থ, তা প্রমাণ করার যেমন দায় রয়েছে আল-কায়েদার, তেমনই জাওয়াহিরির উপস্থিতি প্রমাণিত হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মুখ পুড়বে তালেবানের। জঙ্গি নেতাকে ঠাঁই দেওয়ার অভিযোগ উঠবে তাদের বিরুদ্ধে। এমনিতেই আর্থিক সংকটে রয়েছে আফগানিস্তান। এর মধ্যে তালেবান সরকারের সঙ্গে জঙ্গি-যোগ স্পষ্ট হলে আন্তর্জাতিক সাহায্য পাওয়ার প্রশ্নে আরো সংকটে পড়বে দেশটি। পাশাপাশি দেহ উদ্ধারের প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, জাওয়াহিরিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে খুন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিখুঁত নিশানায় হামলা চালানো হলেও সেখান থেকে দেহ নিয়ে আসাও বেশ কঠিন।