ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
এলিজাবেথ জিন ক্যারল নামের এক মার্কিন নারী লেখক এবার ধর্ষণের অভিযোগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ক্যারল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেছিলেন। ট্রাম্প তখন প্রেসিডেন্ট থাকায় আইনি জটিলতার কারণে মামলাটি আপিল বিভাগে আটকা পড়ে। কিন্তু নতুন মামলাটি এগোতে তেমন কোনো আইনি জটিলতা নেই।
আলজাজিরা ও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) জাতীয় ছুটির দিন থ্যাংকস গিভিং ডে উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যে ‘অ্যাডাল্ট সার্ভাইভার্স অ্যাক্ট’ নামের একটি আইন পাস হয়। কয়েক দশক আগেও যেসব প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব) ব্যক্তি ধর্ষণের মতো শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, আইনটিতে তাদের মামলা করার এক বছরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
আইনটির প্রথম সুযোগ যারা গ্রহণ করেছেন, তাদের অন্যতম এলিজাবেথ জিন ক্যারল। ৭৮ বছর বয়সি এ লেখক নারী বিষয়ক পত্রিকা ‘এলি ম্যাগাজিন’-এ নিয়মিত লেখালেখি করেন। ২০১৯ সালে প্রকাশিত নিজের একটি বইতে তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন, যা ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে অস্বীকার করেন। ট্রাম্প উল্টো দাবি করেন, এসব কল্পকাহিনি। তাকে ফাঁসানো ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের জুনে ট্রাম্পের এমন পাল্টা দাবির পাঁচ মাস পর তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেন জিন ক্যারল। কিন্তু ট্রাম্প তখন প্রেসিডেন্ট থাকায় মামলাটি নিয়ে আইনি জটিলতা দেখা দেয়। তখন থেকে তা আপিল বিভাগে আটকে ছিল। সম্প্রতি মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২০২৩ সালের ৬ জানুয়ারি।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ফেডারেল কোর্টে করা মামলায় জিন ক্যারল অভিযোগ করেন, ১৯৯৫ ও ৯৬ সালে নিউইয়র্কে ম্যানহাটনের একটি বিলাসবহুল ডিপার্টমেন্ট স্টোরের ড্রেসিং রুমে ট্রাম্প তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করেন। এ যাতনা তাকে দীর্ঘ ২৭ বছর বয়ে বেড়াতে হয়েছে। তিনি এসবের ক্ষতিপূরণ চান এবং মানসিক যাতনা ও মর্যাদাহানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
জিন ক্যারলের আইনজীবী রবার্টা কাপলান বলেন, ‘ট্রাম্পকে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত করার জন্যই বৃহস্পতিবারের মামলাটি করা হয়েছে।’
অন্যদিকে ট্রাম্পের আইনজীবী আলিনা হাব্বা বলেন, ‘নতুন আইনের আওতায় যারা মামলা করছেন, তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। তবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা নতুন আইনের গুরুত্বকে গৌণ করবে। প্রাপ্তবয়স্ক ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতাকে হ্রাস করবে।’
২৪ নভেম্বর নতুন আইনটি পাস করার পর ইতোমধ্যে প্রায় ১১শ’ মামলা হয়েছে। অধিকাংশ মামলা হয়েছে বিভিন্ন গির্জার পুরোহিত, হাসপাতাল ও বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্তমানে একাধিক মামলার অভিযোগ খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের একটি বিশেষ কমিটি। তা ছাড়া ক্ষমতায় থাকাকালে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগেও ট্রাম্প ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগের তদন্ত চলছে।