দাসপ্রথার জন্য ক্ষমা চাইলেন ডাচ রাজা আলেকজান্ডার
ঔপনিবেশিক আমলের দাসপ্রথায় নেদারল্যান্ডসের কলঙ্কিত ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ডাচ রাজা উইলেম আলেকজান্ডার। তিনি বলেছেন, দাসপ্রথা একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। তার দেশের মানুষের করা এ অপরাধের জন্য তিনি ক্ষমা চাইছেন। খবর বিবিসির
আলেকজান্ডার বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমি দাসপ্রথার ডাচ ইতিহাসের কথা স্মরণ করছি এবং মানবতাবিরোধী এই অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনাদের রাজা হিসেবে ও সরকারের একজন সদস্য হিসেবে আমি নিজেই অপরাধ স্বীকার করছি। আর আমি যে কথা বলছি, তা হৃদয় দিয়ে অনুভব করছি।’
শনিবার নেদারল্যান্ডসে দাসপ্রথা বিলোপের ১৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে দাসপ্রথা ও দাস ব্যবসায় নেদারল্যান্ডসের ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।
নেদারল্যান্ডসের অধিবাসীদের ডাচ বলা হয়। ঔপনিবেশিক আমলে স্পেনীয় ও পর্তুগিজদের অনুসরণে তারা দাস ব্যবসা শুরু করে। এরপর প্রায় ২৫০ বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দাস ব্যবসা চালায় তারা।
১৮৬৩ সালে দাস ব্যবসা বিলোপ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রধানত আফ্রিকার দেশগুলো থেকে প্রায় ৬ লাখ মানুষকে দাস হিসেবে ক্যারিবীয় ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে বিক্রি করা হয়েছিল।
দাসপ্রথায় নেদারল্যান্ডসের সম্পৃক্ততার শুরু ১৭শ শতকে। এর আগেই স্পেন-পর্তুগালের মতো সাবেক ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো দাস বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এশিয়ান স্টাডিজের ২০০৮ সালের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ডাচরা প্রধানত আরাকানের (বর্তমান রাখাইন রাজ্য) লোকদের দাস বানিয়ে তৎকালীন বাটাভিয়াতে পাঠাতো।
বাটাভিয়া ছিল ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রধান ঘাঁটি, যা আজকের ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা বলে পরিচিত। ১৮৬৩ সালে নেদারল্যান্ডস দাসপ্রথা বিলুপ্ত ঘোষণা করে। কিন্তু সুরিনামের মতো কিছু জায়গায় ডাচ দাসপ্রথা শেষ হয় আরও ১০ বছর পর।