Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
November 22, 2024
হেডলাইন
Homeপ্রধান সংবাদদিল্লি সংঘর্ষে সাংবাদিকের প্যান্ট খুলে ধর্ম যাচাই

দিল্লি সংঘর্ষে সাংবাদিকের প্যান্ট খুলে ধর্ম যাচাই

দিল্লি সংঘর্ষে সাংবাদিকের প্যান্ট খুলে ধর্ম যাচাই

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। সংঘর্ষে ইতোমধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। সংঘর্ষে  খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ভুক্তোভোগী হয়েছেন দেশটির স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যমগুলোর সাংবাদিকরাও।
 
সংঘর্ষ চলাকালে সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে, মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমন কি সাংবাদিক মুসলমান কিনা তা নিশ্চিত করতে প্যান্ট খুলে যাচাই করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটেছে।
 
মঙ্গলবার দেশটির প্রসিদ্ধ সংবাদমাধ্যম দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস এসব তথ্য নিশ্চিত করে একটি অনলাইন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
 
সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লিতে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন কেন্দ্র করে ক্ষোভের নিশানায় পড়েছে সংবাদমাধ্যম। মঙ্গলবার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে আরও দুই সংবাদকর্মীকে। এর আগের দিন বিক্ষোভে উত্তপ্ত এলাকায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন এক বাঙালি সাংবাদিক। তাকে প্যান্ট খুলে নিশ্চিত করতে হয়েছে তিনি মুসলমান নন।
 
মঙ্গলবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার চিত্র সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এমন সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।
 
বিড়ম্বনাময় অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তোভোগী সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, উত্তেজনাপূর্ণ জাফরাবাদ অঞ্চলে সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি ও তার সহকর্মী সাংবাদিক।
 
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মৌজপুর মেট্রো রেল স্টেশন এলাকায় একটি হিন্দু সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের হাতে এ হেনস্তার শিকার হন তিনি।
 
তিনি জানান, সেদিন তার কপালে তিলক এঁকে দিতে তৎপর হলে তিনি আপত্তি করলে ক্ষিপ্ত হয়ে যান ওই সংগঠনটির সদস্যরা। হিন্দু হলে তিলক আঁকতে আপত্তি কিসের- প্রশ্ন করা হয় তাকে। 
 
এর ১৫ মিনিট পরেই এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয় এবং ‘মোদী’ ‘মোদী’ স্লোগানের মাঝে কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে যায়।
 
এ সময় স্থানীয় একটি বাড়িতে আগুন লাগলে অগ্নিকাণ্ডের ছবি তুলতে গিয়ে আবারও বাধাপ্রাপ্ত হন ও সেই একই ধরনের প্রশ্নের সম্মূখীন হন তারা। সাংবাদিক অনিন্দ্য বলেন, ‘আপনিও তো হিন্দু। তা হলে ওখানে কেন যাচ্ছেন? আজ হিন্দুরা জেগে উঠেছে।’
 
তবে তাদের কথায় কান না দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছবি তুলতে গেলে অনিন্দ্যকে একদল সশস্ত্র চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
 
এ ঘটনার কিছু পরেই এক তরুণ এগিয়ে এসে সাংবাদিক অনিন্দ্যকে ফের পথরোধ করে হুমকি দেয় ও জিজ্ঞেস করে, ‘তুই একটু বেশি চালাকি করছিস। তুই হিন্দু, না মুসলিম?’
 
এ সময় তারা সাংবাদিক অনিন্দ্যর প্যান্ট খুলে ধর্মীয় চিহ্ন খোঁজার চেষ্টা করে। অবস্থা বেগতিক দেখে হাতজোড় করে অনেক অনুনয়-বিনয় দেখানোর পরে কোনও মতে রেহাই পান ওই চিত্র সাংবাদিক।
 
তখনও বিপদ কাটে নি ওই সাংবাদিকের। অটোরিকশা নিয়ে ফেরার পথে আবারও সশস্ত্র বাহিনীর মারধরের মুখে পড়েন ।
 
কারণ তিনি প্যান্ট খুলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বলে নিশ্চিত করলেও অটোরিকশাচালক মুসলমান ছিলেন। তাই আবারও সশস্ত্র বাহিনীর রোষানলে পড়তে হয়।
 
তাদের মাঝপথে থামিয়ে ঘেরাও করে চারজন সশস্ত্র যুবক। কলার ধরে দুজনকে অটো থেকে নামিয়ে মারধরের চেষ্টা করে। সাংবাদিক পরিচয় এবং অটোচালক নির্দোষ, এমন কথা বলে অনেক অনুনয়ের পরে তারা ছাড়া পান।
 
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মুহূর্তগুলো আমার পার হলো ভয়ানক আতঙ্কে। ওই অটোওয়ালাই যখন আমাকে অফিসে দিয়ে গেল, তখনও সে ভয়ে কাঁপছে। চলে যাওয়ার আগে শুধু বলল, ‘সারাজীবনে কেউ আমাকে ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করে নি কখনও।’
 
এনডিটিভি জানিয়েছে, সোমবার থেকে উত্তর-পূর্ব দিল্লিজুড়েই ১৪৪ ধারা করা হয়েছিল। মঙ্গলবারও তা অব্যাহত ছিল। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এতে দিল্লি পুলিশের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
 
পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পেরে অবশেষে সন্ধ্যার দিকে সবচেয়ে উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে আবারও কারফিউ জারি করা হয়েছে।
 
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ায় উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ♦
 
 
 
 
 
 
 
Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment