নিউ ইয়র্কে তাজউদ্দিন আহমদের জন্মশতবর্ষ ও শহীদ জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ
নিউ ইয়র্কে জেল হত্যা শহীদ স্মরণ ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করা হলো।
গত ৩ নভেম্বর জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাজউদ্দিন আহমদ জন্মশতবর্ষ উদযাপন পরিষদ।
অনুষ্ঠান সূচিতে ছিল জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর স্থিরচিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা, স্মৃতিচারণ, নৃত্য, ভিডিও বার্তা প্রদর্শন।
শুরুতে শোক সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে কারাগারে বন্দি অবস্থায় নিহত চার জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর স্মরণে উপস্থিত সুধীজনরা দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সুসিস্মিতার পরিবেশনায় তাজউদ্দিন আহমদ‘র জীবনী পাঠের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর তাজউদ্দিন আহমদ জন্মশতবর্ষ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সাগর লোহানীর উপস্থাপনায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অর্থনীতিবীদ ড. নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন ওয়ালিউল্লাহ সিকদার, সংস্কৃতিজন বেলাল বেগ, মুক্তিযোদ্ধা ও যুক্তরাষ্ট্র উদীচীর সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, লেখক কুলদা রায়, একুশে চেতনা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র‘র সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মামুন প্রমুখ।
জন্মশতবর্ষ উদযাপনের ঘোষনাপত্র পাঠ করেন বাচিকশিল্পী স্বাধীন মজুমদার, তাজউদ্দিনকে নিয়ে লেখা মারুফ রসুলের লেখা প্রবন্ধ পাঠ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার সদস্য মিথুন আহমদ।
অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার প্রাক্কালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তাজউদ্দিন আহমদদের দেওয়া ভিডিও বার্তাটি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও তাজউদ্দিন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমদের ভিডিও বার্তাও উপস্থাপন করা হয়।
তাজউদ্দীন আহমেদকে স্মরণ করতে গিয়ে বক্তরা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নাম ছিল তাজউদ্দিন। যিনি তার সততা, মেধা আর কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে গেছেন সব সময়। তিনি এক ক্ষুরধার নিভৃতচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যাকে ভয় পেত স্বৈরাচারী সামরিক শাসকরা। তিনি যাবতীয় আত্মপ্রচার থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। তাজউদ্দীন আহমদকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনপার প্রধান চাকিকাঠি বললেও অত্যুক্তি হবে না, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে যার নেতৃত্ব ও বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে আমরা মাত্র নয় মাসে এই স্বাধীনতা পেয়েছি।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক ভাবে যে গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে, এসময় আমাদেরকে তাজউদ্দিনের কাছে আশ্রয় নিতে হবে।
গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন ও তার সম্পূরক আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে জনগণের রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তাজউদ্দিনের চেতনা ধারন করতে হবে।
সূত্র: সন্ধান২৪ ডট কম