নিউ ইয়র্কে আজ ঈদুল ফিতর, ঈদের জামাত
নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি:আজ ১৩ মে বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
আজ থেকে নিউ ইয়র্ক সিটির স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিউ ইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশিরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।
তারা ঈদকে সামনে কেনাকাটা করেছেন। স্বর্ণের দোকানগুলোতেও ভিড় দেখে গেছে।
গেল বছর করোনার লকডাউনে মানুষ ঘরবন্দী ছিল। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মন্দা গেছে। এ বছর রমজানে অন্যান্য বারের তুলনায় নিউ ইয়র্কে ইফতার পার্টি কম হয়েছে হলেও গতবারের চেয়ে বেশি হয়েছে। এবার পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে।
এ বছর নিউ ইয়র্কের মানুষ ঈদ করবেন ছোট পরিসরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরের মধ্যেই। গ্রোসারিগুলো ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করছে। হালাল মাংসের দোকানগুলোতেও ভিড় আছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিউ ইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকার মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন মসজিদে পুরুষদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একাধিক মসজিদে নারীদেরদের জন্যও নামাজের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গেছে। যারা মসজিদে নামাজ পড়তে যাবেন, তাদেরকে জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অবশ্যই মাস্ক পরে যেতে হবে। মাস্ক ছাড়া মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না। নামাজের সময় মুসল্লিদের সিডিসির গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। প্রত্যেকের মধ্যে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব থাকতে হবে। যারা মাস্ক পরে যাবেন না, তাদের জন্য কোনো কোনো মসজিদে মাস্কের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
করোনার কারণে বড় পরিসরে মাঠে ঈদের নামাজ আয়োজন করা বেশির ভাগ মসজিদ কর্তৃপক্ষের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। মসজিদেই হবে অধিকাংশ জামাত। আবহাওয়া ভালো থাকলে মসজিদের সামনের স্ট্রিটেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বেশির ভাগ মসিজেদ দু’টি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আগে যেসব মসজিদের আয়োজনে খোলা মাঠে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হতো, সেখানে একাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হতো। অনেক মসজিদেই তিনটি করে জামাত অনুষ্ঠিত হতো। এবার মসজিদের ভেতরেই জামাত হবে। দূরত্ব বজায় রাখার কারণে বেশি মুসল্লির স্থান সংকুলান করা সম্ভব হবে না।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পক্ষ থেকে বড় পরিসরে ঈদের জামাত আয়োজনের চেষ্টা চলছে। সিটি অনুমতি দিলে টমাস এডিসন হাইস্কুলের মাঠে বড় পরিসরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। করোনার কারণে মাঠের অনুমতি না পেলে মসজিদের ভেতরে ও সামনে জামাত হবে। সিডিসির গাইডলাইন মেনে প্রত্যেক মুসল্লির মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। মাঠে নামাজ হলে একটি জামাত হবে। মসজিদে হলে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
নিউইয়র্কে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারেই ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের দিন বৃষ্টি হলে মসজিদের ভেতরেই একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মসজিদের ভেতরে এবং সামনে নামাজ হবে। অনুমতি পেলে টমাস এডিসন স্কুলের মাঠেও ঈদের জামাত হতে পারে।
এস্টোরিয়ার আল আমিন মসজিদে ১২ বা ১৩ মে ঈদের চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া খারাপ থাকলে ঈদের তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে মসজিদের ভেতরে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় এবং তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায়। চতুর্থ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। চতুর্থ জামাতে নারীরা অংশ নিতে পারবেন।
জ্যাকসন হাইটস মোহাম্মদী সেন্টারের উদ্যোগে প্রতিবছর দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবার সেটি হবে না। এবার তারা অনলাইনে ফেসবুক লাইভে নামাজের ব্যবস্থা করছে। ফেসবুক লাইভে মানুষ ঈদের নামাজে অংশ নিতে পারবেন।
ইস্ট এলমহার্স্ট জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম সেন্টার ইন্ক-এ মসজিদের ভেতরে দুটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৮টায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল নয়টায় হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রঙ্কসের বায়তুল ইসলাম মসজিদ অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টার ইনক-এ এবার ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
দারুস সালাম মসজিদ ইনক-এ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১২ কিংবা ১৩ মে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এখানে প্রথম জামাতে কেবল পুরুষেরা অংশ নিতে পারবেন। অন্যান্য জামাতে নারী-পুরুষ উভয়েই অংশ নিতে পারবেন।
নিউইয়র্কের আরো কয়েকটি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাবাজার জামে মসজিদ এবং ওজন পার্কের ফুলতলী ইসলামি সেন্টার।
এস্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টার এবং বায়তুল মোকাররম মসজিদের উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পার্কচেস্টার জামে মসজিদের উদ্যোগেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জ্যাকসন হাইটসের দারুল ফোরকান মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জ্যাকসন হাইটসের আন নূর মসজিদেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রুকলিনে বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ব্রুকলিনের নিউকার্কের বেলাল মসজিদে ঈদের জামাত হবে। ব্রুকলিন ইসলামি সেন্টারের উদ্যোগেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রুকলিনের বায়তুস শরফ জামে মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো চূড়ান্ত সময়সূচি ঘোষণা করেনি তারা। এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি গোলাম হোসেন বলেন, আমরা এখনো সময় ঠিক করতে পারিনি। হাতে এখনো সময় আছে। দু-চার দিনের মধ্যেই ঈদ জামাতের সময়সূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।❐