Our Concern
Ruposhi Bangla
Hindusthan Surkhiyan
Radio Bangla FM
Third Eye Production
Anuswar Publication
Ruposhi Bangla Entertainment Limited
Shah Foundation
Street Children Foundation
December 21, 2024
হেডলাইন
Homeপ্রবাসনিউ ইয়র্ক প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীদের বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন

নিউ ইয়র্ক প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীদের বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন

নিউ ইয়র্ক প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীদের বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন

নিউ ইয়র্ক সংবাদদাতা: নিউ ইয়র্কে প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসী বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন করেছেন। তারা একইসঙ্গে নিজেদের সংগঠন ‘নারায়ণগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন অফ উত্তর আমেরিকা ইনক’এর ৩২ বছর পূর্তিও করেছেন একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের প্রীতি সম্মিলনের পরিবেশে। গত ৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রবীণ প্রবাসী বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘নারায়ণগঞ্জ’ এর সুনাম ধরে রাখার আহবান জানান। তারা বলেন, প্রবাসে কিছু নারায়ণগঞ্জবাসী নিজেকে নেতা ঘোষণা দিয়ে সংগঠনের নামে বিরোধ সৃষ্টি করে যেন আনন্দ পান। তারা প্রকৃত অর্থে নারায়ণগঞ্জের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তারা। তারা আরো বলেন, নিজ এলাকার মানুষদের সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি রক্ষা করা যেখানে অন্যতম কাজ, সেখানে অনৈক্য সৃষ্টি করছেন কেউ কেউ। অনৈক্য সৃষ্টিকারীরা কখনও সফল হয় না। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও পাক শাসকরা অনৈক্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। দমন করতে চেয়েছিল সাধারণ মানুষকে। ওই পাক শোষকরা সফল হয় নি। বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ ছিল বলে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই। বিশেষ করে প্রবাস জীবনে বিরোধ, বিদ্বেষ, পরনিন্দা, অপ-প্রচার করা অশুভ লক্ষণ। অসুস্থ ও বিকারগ্রস্থ মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। যারা এমন কাজে লিপ্ত রয়েছেন, তাদের যেন শুভবোধের উদয় হয়। তারা আরো বলেন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাস করাটাই আমাদের সকলের ব্রত হওয়া উচিত। বক্তারা বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীতে প্রাণহানীর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমাদের সব সময় নিজেদের সুস্থ রাখার প্রতি বিশেষ সতর্ক থাকা উচিত।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন অফ নর্থ আমেরিকা ইনকের আহবায়ক কমিটির আহবায়ক নির্মল পাল এবং সভা পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সেলিম। সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটি নিউ ইয়র্কের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কমিটির কোষাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান মিয়া মন্টু, সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান, আহবায়ক কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক আরশাদুল বারী আসাদ, সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও যুগ্ম-আহবায়ক মোহাম্মদ মোহসীন, সংগঠনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও নূর বাবুল। এ ছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শিশু বিশেষজ্ঞ (চিকিৎসক) শান্তা পাল, লেখক ও সাংবাদিক দর্পণ কবীর এবং মোস্তফা জামাল টিটো।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতার সময়কাল এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়া নিয়ে বক্তব্য রাখেন নুরুজ্জামান মিয়া মন্টু ও আরশাদুল বারী আসাদ। নুরুজ্জামান মিয়া মন্টু জানান ১৯৮৯ সালে তাদের বাসায় সংগঠনটির জন্ম হয়েছিল। তিনি বলেন, বিরোধ নয়। বিরোধতা করে, বিভক্তি সৃষ্টি করে নিজের ক্ষতি করা ঠিক নয়। তিনি সকলকে সমঝোতা এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। আরশাদুল বারী আসাদ বলেন, আমরা এগিয়ে যাবার প্রত্যয় নিয়ে প্রবাসে সংগঠন করি। আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কতিপয় মানুষ নিজেদের মধ্য কাদা ছোঁড়াছুড়ি করছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি নিউইয়র্কে সকলের সহযেগিতায় সংগঠনের জন্য একটি ভবন ক্রয় করবেন বলে ঘোষণা দেন। মোহাম্মদ মোহসীন বলেন, আমরা ভবন ক্রয়ের জন্য ব্যাংক একাউন্ট খুলেছি। একটি ভবন ক্রয় কমিটিও গঠন করেছি। আগামীতে আমরা সংগঠনের ভবন ক্রয় করে প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীদের উপহার দেব। নির্মল পাল সভাপতির ভাষণে প্রবাসী নারায়ণগঞ্জবাসীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় নারায়ণগঞ্জের অবস্থার কথা স্মৃতিচারণমূলক কথায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে পাক বাহিনী হামলা এবং গণহত্যা করলে নারায়ণগঞ্জের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পাক সেনাদের সমরযান প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি ২৭ মার্চ পর্যন্ত। মাসদাইর এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে পাক সেনাদের কীভাবে সাধারণ মানুষ রুখে দেয়ার লড়াই করেছিল, তার বর্ণনা করেন তিনি। তিনি জানান, পাক সেনাদের গুলিতে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ তৌফিক সাত্তার এবং মোশারফ হোসেন মাশার শহীদ হয়েছিলেন। তিনি কীভাবে আগারতলা গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের মাটিতে যুদ্ধ করেছিলেন-ওসব কথা সংক্ষেপে বলেন। তিনি আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হলেও আমরা ৫০ বছর পর কী পেলাম, তা ভাবতে হয়। আমাদের বাক স্বাধীনতা আছে কিনা-এ কথাও বলতে হয়। আমরা আজ বিজয় দিবস উদযাপন করছি, একই সঙ্গে অনেক প্রশ্ন আমাদের মনে। অনেকের মনে গ্লানি। তিনি আরো বলেন, এই ৫০ বছরের বিজয় দিবস পালনের মধ্য দিয়ে আমরা যেন আমাদের জন্মভূমি এবং জনগণের কথা গুরুত্বের সঙ্গে ভাবি।

অনুষ্ঠানে একাধিক বক্তা সংগঠনের জন্য একটি ভবন ক্রয় করার ঘোষণা দেন। বিগত ইসি কমিটির বনভোজন উপ কমিটির দু’কর্মকর্তা মোস্তফা জামাল টিটো ও মো. আব্দুল কাদের সভায় দু’হাজার ডলার তুলে দেন ভবন ক্রয় কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমানের কাছে।

ভবন ক্রয় কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক নির্মল পাল ও আরশাদুল বারী আসাদসহ তিন কর্মকর্তা ভবন ক্রয়ে ৩০ হাজার ডলার দেবেন বলে অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন। এ সময় আরো কয়েকজন নারায়ণগঞ্জবাসী ভবন ক্রয়ে আর্থিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন বলে আহবায়ক কমিটির কর্মকর্তাদের জানান।

অনুষ্ঠাদের দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল মনোজ্ঞা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কৃষ্ণা তিথি এবং শাহ মাহবুব। তাদের পরিবেশিত দেশাত্ববোধক, আধুনিক, ফোক গান উপভোগ করেন সমবেতরা। কেউ কেউ গানের সুরের মূর্ছনায় মঞ্চে গিয়ে নেচে আনন্দ প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে ‘নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি ম্যাগাজিন বের করা হয়। এই ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন দর্পণ কবীর।

Share With:
Rate This Article
No Comments

Leave A Comment