নির্মাণের কারিগর আবু সুফিয়ান বিপ্লব
১৯৮৮ সালে শিল্পজমিনে আবু সুফিয়ান বিপ্লবের পদচারণা থিয়েটারের মাধ্যমে। দৃষ্টিপাত নাট্যসম্প্রাদারের হয়ে নাট্যচর্চার হাতেখড়ি হয়। স্বার্থকতা খুঁজে পান প্রয়াত নাট্যজন এস এম সোলায়মানের সংস্পর্শে থিয়েটার আর্ট ইউনিট। দলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নিবেদিত রয়েছেন এখন পর্যন্ত। অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে মানেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত নাট্যজন এস এম সোলায়মানকে। তিনি বলেন, গুরুর হাত ধরেই আমার মিডিয়ার কাজে যুক্ত হওয়া। ইচ্ছে ছিল অভিনয় নিয়েই থাকার, গুরুর উৎসাহেই হয়ে গেলেন নির্মাতা। সাক্ষাৎকার ভিত্তিক এ প্রতিবেদনটি লিখেছেন মোহাম্মদ হোসেন দিপু।
আবু সুফিয়ান বিপ্লব ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ পর্যন্ত সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশের অনেক খ্যাতনামা পরিচালকদের সাথে কাজ করেন। ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে কাজ করে আসছেন তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গ্রীনফ্রেম এর হয়ে।
২০০৭ সালে স্ট্যাম্পফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ( Stamford University Bangladesh) থেকে ফিল্ম এন্ড মিডিয়ার উপরে মাস্টার্স করেন। ১৯৯৮ সালে World View Bangladesh থেকে ২ মাস ব্যাপী ‘টিভি প্রোডাকশন’ নির্মাণে কোর্স সম্পন্ন করেন। ২০১৬ সালে Mass Communications Institute Bangladesh (NIMCO) থেকে ২ মাস ব্যাপী Special Course on ‘Digital Television Camera & Lighting Course 2016’ for Film Making সম্পন্ন করেন। ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka) থেকে ৩ মাস ব্যাপী Special Course of ‘Advance Course of Research Methodology Program Outlines’ সম্পন্ন করেন । ২০১৯ সালে তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (Bangladesh Silpalakala Academy) থেকে ২ মাস ব্যাপী ফিল্ম নির্মাণের উপর কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক সেমিনার, কোর্স, আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ডিরেক্টরস গিল্ড (Director’s Guild – Television Drama Director’s Organization) এর একজন নিয়মিত সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছেন।
সেই পরিচালক হিসেবে পদচারণা থেকে প্রায় দীর্ঘ ২ যুগের বেশি সময় ধরে ফ্রেম বন্দি করার চমক জাগানিয়া কিছু কাজ করে চলেছেন। তথ্যচিত্র জগতে এক অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। বাংলাদেশের যুব উন্নয়ন ও তাদের দক্ষতা কার্যক্রম নিয়ে সেভ দ্য চিলড্রেন-এর ‘যুব ক্ষমতায়ন প্রোগ্রামের’ জন্য নির্মাণ করেন ডকুমেন্টারি ফিল্ম। ঢাকা ও চট্রগ্রামে ধারণ করা হয় দৃশ্যগুলো। এছাড়াও সেভ দ্য চিলড্রেন এর ‘বাংলাদেশে নিউমোনিয়া মোকাবেলা প্রকল্প’ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করেন ডকুমেন্টারি ফিল্ম। বরিশাল জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে ধারণ করা হয় দৃশ্য গুলো। পেশাগত জীবনে বিপ্লব গড়ে তুলেছেন নিজস্ব প্রডাকশন হাউজ ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গ্রীনফ্রেম। প্রায় ১৮ বছর ধরে নিজ সংস্থার ব্যানারে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন। তার উল্লেখযোগ্য ক্লাইন্টের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, United Nation Development Programme in Bangladesh (UNDP), United Population Fund in Bangladesh (UNFPA), Plan International Bangladesh, BRAC, Terre des Hommes Foundation (Tdh), Action Aid Bangladesh, Save the Children, Village Court, Aspire to Innovation (A2i) etc.
তিনি যে কেবল তথ্যচিত্র বা ডকুড্রামা তৈরি করেন তেমন নয়, ছোটপর্দায় প্রচারিত হয়েছে আবু সুফিয়ান বিপ্লব নির্মিত বেশ কিছু একক ও ধারাবাহিক নাটক। তার পরিচালনায় এক পর্বের নাটক ও টেলিফিল্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- এ হামিদ, কখনো আধারে নিশি, রূপকথা, নীল খাম, সেদিন তারাবানু আজ তারাবানু, সবকিছু ভেঙ্গে যায়, নয়নতারা ইত্যাদি। নাটকগুলো বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল, যেমন চ্যানেল আই, দেশ টিভি, মাছরাঙ্গা টিভি, এটিএন বাংলা, আর টিভি ইত্যাদিতে প্রচারিত হয়। বিপ্লবের পরিচালনায় জনপ্রিয়তা পাওয়া ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘কঙ্কাবতী’, ২৫ পর্বের এই ধারাবাহিক নাটকটি চিত্রায়িত হয় থাইল্যান্ডের কোসামতে এবং প্রচারিত হয় জনপ্রিয় আরটিভিতে। এছাড়াও অ্যাসপায়ার টু ইনোভেশন (এটুআই) বাংলাদেশের প্রযোজনায় ২০১৬ সালে সরকারি টিভি চ্যানেল বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত ‘সাহেলা বুবুর বৈঠকখানা’ শীর্ষক ১৩ পর্বের ধারাবাহিক নাটকটি বেশ প্রশংসিত হয়। দেশ টিভির ওপেনিং প্রোগ্রাম হিসেবে ‘ক্যারাভান ৭১’ ৫ পর্বের ধারাবাহিক ডুক ফিকশন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ওপর নির্মাণ করেন।
আবু সুফিয়ান বিপ্লব জানান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার হয়ে ডকুমেন্টারির পাশাপাশি ফিকশন ভিত্তিক ডকুড্রামাও তিনি নির্মাণ করেছেন। সেগুলোতে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, আবুল হায়াত, আনিসুর রহমান মিলন, ফারাহ রুমা, শাহনাজ খুশি, প্রাণ রায়, দিপা খন্দকার, লিটু আনাম, জোতিকা জ্যোতি, হুমায়রা হিমু, রোকেয়া রফিক বেবী, ফজলুল রহমান বাবু, রহমত আলি, জিয়ায়ুল ইসলাম কিসলু, তারিক আনাম খান, পাভেল আজাদ, ডা. এজাজ, চিত্রনায়িকা চম্পার মতো তারকা শিল্পীরা।
United Nation Development Programme in Bangladesh (UNDP) এর প্রযোজনায় আবু সুফিয়ান বিপ্লব নির্মিত ‘আমাদের গ্রাম আদালত’ ও ‘বাড়ির কাছে গ্রাম আদালত’ শীর্ষক সচেতনামূলক ডকুড্রামা দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রদর্শিত হয়েছে। Aspire to Innovation (A2i) ও United Nation Development Programme in Bangladesh (UNDP), বাংলাদেশের জন্য এই কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে অনলাইনে শিক্ষাব্যবস্থা সচল রাখতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা বোর্ডের জন্য তিনি নির্মিত প্রায় আটশ’ অনলাইন ক্লাস ভিত্তিক ভিডিও, যা সংসদ টিভি ও কিশোর বাতায়ন ফেসবুক পেইজে সম্প্রচার হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভোট ও ভোটার আইডিকার্ড’ নিয়ে নির্মাণ করেন ১১টা টিভিসি। এর বিভিন্ন পর্বে অভিনয় করেন ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা, ক্রিকেটার আশরাফুল, প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন ফরিদী, চিত্রনায়ক আফজাল হোসেন, প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্না, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়িকা শাবনুর, চিত্রনায়িকা মৌসুমি, চিত্রনায়িকা পপি, সঙ্গীতশিল্পী মমতাজ, জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ প্রমুখ। নির্মাণ করেছেন সুন্দরবন সুরক্ষায় জন্য সচেতনামূলক দুটি ভিডিও ‘সুন্দরবন মায়ের মতন’ ও ‘জামতলার রানী’।
বিপ্লব আরো বলেন, তার কাজের শুরুটা হয় প্রাইভেট সেক্টর দিয়ে। শুরুতেই দীর্ঘ ১ যুগের বেশি গ্রামীণ ফোনের জন্য অনেক টিভিসি, ডকুড্রামা, ডকুমেন্টরি, ইভেন্ট করেছেন। গ্রামীণ ফোনের হয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, নাসির হোসনে, তাসকিন আহমেদ, এনামুল হক বিজয়, আফতাব আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক. মাশরাফি বিন মর্তুজা এদের নিয়ে টিভিসি নির্মাণ করেন। এছাড়াও সরকারি টেলিটক, রবি, এয়ারটেল ও বাংলা লিংকের সঙ্গেও রয়েছে কাজের অনেক টিভিসি, ডকুড্রামা তৈরি করার অভিজ্ঞতা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে গ্রামীণ ফোনের পৃষ্ঠপোষকতায় আবু সুফিয়ান বিপ্লব শুরু করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি ডিজিটাল লাইব্রেরি তৈরির কাজ। তিনি জানান, দেশের নানা প্রান্তের মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে একাত্তরের স্মৃতি শোনার কাজটি জোরেসোরে শুরু হলেও প্রায় ২,২০০ জনের ভিডিওচিত্র নির্মাণের পর থমকে যায়। এ মহান কাজটি বিপ্লব শেষ করতে চান যদি কেউ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে পাশে দাঁড়ান।
কাজের প্রয়োজনে সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে আবু সুফিয়ান বিপ্লব বলেন, বিভিন্ন জনপদে দেখেছি লড়াকু মানুষের বিভিন্ন জীবন আর অস্তিত্ব রক্ষায় জীবিকার লড়াই। অঞ্চল থেকে অঞ্চলে মানুষের পাল্টে যাওয়া আচরণ-ভাষা-ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করে। মানুষ দেখতে আমার ভালো লাগে, মানুষের সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগে। মানুষই আমাকে উৎসাহ জোগায় কাজে। কাজগুলো সম্পূর্ণ মানুষের উন্নয়নের জন্যই।
দেশের দক্ষিণপ্রান্তে সাম্প্রতিক কাজের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের পাহাড়ি জনপদে সংঘাত থেমে নেই। সেই ঝুঁকির মধ্যেই কাজ করে এলাম খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজার এলাকায়। এর মধ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ জন্য তৈরি করলাম ১০টি প্রামাণ্যচিত্র। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে অবহেলিত পাহাড়ি জনপদে নারীর ক্ষমতায়ন, বাল্যবিবাহ রোধ, গর্ভকালীন সেবা ও পরবর্তী সেবা, যৌতুক, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, কিশোর-কিশোরীর সেবা ইত্যাদি। করোনা সতর্কতায় কয়েক মাস বিরতির পর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে আবু সুফিয়ান বিপ্লব ফের কাজে ফিরেছেন বলে জানালেন। কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী অবহেলিত জনপদ উখিয়া ও টেকনাফবাসীদের জীবনধারা এবার ক্যামেরাবন্দি করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, এই দুই উপজেলায় রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ার পর পাল্টে গেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনধারা রোহিঙ্গারা ভাগ বসিয়েছে তাদের জীবিকার, কমেছে রুক্ষতা। প্রতিদিনই নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতি নিয়ে ডকুমেনটেশনের কাজ করেছি এবার। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিয়েও কিছু কাজ করি। রোহিঙ্গারা এদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই অবশ্য তাদের জন্য উন্নয়ন ভিত্তিক নানা কার্যক্রম জড়িত হই। রোহিঙ্গাদের মানবিক জীবনযাপন ও সচেতনতার স্বাস্থ্যবিধি, পরিবার পরিকল্পনা, পাচার, নারী নির্যাতন, গর্ভকালীন সেবা, শিক্ষা জীবন নানা বিষয়ে ভিডিও নির্মাণ করি।
সম্প্রতি The Global Alliance for Improved Nutrition (GAIN) এর জন্য পোশাক তৈরি শিল্প শ্রমিকদের ওয়ার্কফোর্স নিউট্রিশনের উপর সচেতনতা বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ৫টি নাটক নির্মাণ করেন। যেখানে অভিনয় করে ফজললু রহমান বাবু, আনিসুর রহমান মিলন, দিপা খন্দকার, তানিয়া আহমেদ, প্রাণ রয় প্রমূখ। এছাড়াও Improved Nutrition, Resilience, and Gender Equity (SAPLING) and Bandarban Agriculture and Nutrition Initiative (BANI) of Helen Keller International Bangladesh এর উদ্যোগ বান্দরবানে বসবাস রত বাঙালী, মারমা ও ম্রো সম্প্রদায়কে নিয়ে তাদের নিজস্ব ভাষায় তিনটি ৬ পর্বের ধারাবাহিক নাটক, ৬টি প্যাকেজ নাটক, ৯টি কুকিং শো, ৯টি টক সচেতনামূলক শো নির্মাণ করেন। যেখানে বান্দরবানে বসবাসরত বাঙালী, মারমা ও ম্রো সম্প্রদায়ের অভিনয় শিল্পীরা কাজ করে থাকেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন ইন্টারন্যশনাল ও ন্যশনাল একাধিক পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। আবু সুফিয়ান বিপ্লব ‘Most Promising Documentary, Drama & Ad Maker of the Year (Bangladesh) 2022’ International ICONS Award ২০২২ পেয়েছেন। ভারতের WBR কর্পোরেশন আয়োজনে গত ২৯ এপ্রিল ২০২২ নিউ দিল্লি রেডিসান ব্লু হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। আবু সুফিয়ান বিপ্লবের হাতে পুরষ্কারটি তুলে দেন মিস ইউনিভার্স (২০০০) খেতাব জয়ী লারা দত্ত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের শিল্পী, নির্মাতা, কলাকুশলীসহ মিডিয়া কর্মীরা।
International Icon Award প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আবু সুফিয়ান বিপ্লব বলেন, আলহামদুলিল্লাহ ও শুকরিয়া যে এই এওয়ার্ডটি আমি পেয়েছি। আমার জীবনে দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে আরো একটি অর্জন যুক্ত হলো। এর আগেও আরো এওয়ার্ড পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশকে বাইরের দেশে উপাস্থাপন করা ভাগ্যর ব্যাপার। আমি একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে এখানে এওয়ার্ডটি পেয়েছি। কৃতজ্ঞতা তাদের প্রতি যারা আমার এই দীর্ঘ এই পথচলায় আমার সহযোগী ছিলেন।
এছাড়াও আবু সুফিয়ান ভূঁইয়া বিপ্লব ‘Best Director (Film & Drama) Bangladesh’ from India-Bangladesh Solidarity Reconciliation Award-2022’ পুরষ্কার পেয়েছেন, পুরষ্কারটি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক কর্তৃক হস্তান্তর করেন।
Bangladesh Media Kallan Council (BMKC) আয়োজনে বেগম রোকেয়া সম্মাননা পদক আয়োজনে ‘শ্রেষ্ঠ পরিচালক’ সম্মাননা পদক ২০২২ পেয়েছেন নির্মাতা আবু সুফিয়ান বিপ্লব। পদকটি হাতে তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান এমপি।
Sixth-Indo Bangla International Online Film Festival-2022 -এ ডকু ফ্লিম ‘Caravan 71’ নির্মাণের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক (বাংলাদেশ) হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন আবু সুফিয়ান বিপ্লব। শুক্রবার (১৯ আগস্ট ২০২২) বিকেলে কলকাতা প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। ইন্দো-বাংলা আন্তর্জাতিক অনলাইন চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজনে ছিল এম স্বস্তি ফিল্মস, ইন্ডিয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবু সুফিয়ান বিপ্লব বলেন, Sixth-Indo Bangla International Online Film Festival-2022 অনলাইনে আবেদন করে আমার তৈরি ডকু ফিল্ম ‘ক্যারাভান ৭১’ জমা দেই। আয়োজকরা গত ৯ ও ১০ জুলাই চলচ্চিত্রগুলো অনলাইনে প্রদর্শন করে। প্রায় ১০০ ছবি থেকে বাছাই জুরি বোর্ড ‘ক্যারাভান ৭১’ নির্মাণের জন্য ডকু ফ্লিম ক্যাটাগরিতে আমাকে শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসাবে নির্বাচন করে। এরই ধারাবাহিকতায় কলকাতায় আনুষ্ঠানিকভাবে আজ এ পুরষ্কার প্রদান করা হলো।
South Asian Business Excellence Awards-2022-এর ‘সেরা পরিচলাক (ফিল্ম ও মিডিয়া)’ পুরষ্কার পেয়েছেন নির্মাতা আবু সুফিয়ান বিপ্লব। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর ২০২২) জমকালো এক অনুষ্ঠানে তার হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়েছে।
পুরষ্কার প্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, এতদিন শুধু কাজ করেছি, কাজের পিছনে ছুটছি। দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে নিয়োজিত আছি। এখন কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছি। এই স্বীকৃতি আমরা পথ চলায় গতি বাড়িয়ে দেবে। কৃতজ্ঞতা তাদের প্রতি যারা আমার এই দীর্ঘ এই পথ চলায় আমার সহযোগী ছিলেন।
7th-Indo Bangla International Film Festival-2023 Documentary-Film ‘The Rohingya Men in the Camp’ নির্মাণের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ পরিচালক (বাংলাদেশ)’ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন আবু সুফিয়ান বিপ্লব। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ কলকাতা প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। সপ্তম-ইন্দো-বাংলা আন্তর্জাতিক অনলাইন চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজনে ছিল এম স্বস্তি ফিল্মস, ইন্ডিয়া।
Association of the world Fair and Fest USA inc. দ্বারা আয়োজিত ‘World Fair & Fest New York 2023’ শ্রেষ্ঠ নির্মাতা ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া ২০২৩ পুরষ্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। অনুষ্ঠানটি গত ৬ আগস্ট রোববার নিউ ইয়র্কের উডসাইডের গুলশান ট্যারেসে বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, প্রচার, প্রদর্শন এবংবিভিন্ন ধরনের পণ্যও পরিষেবা অন্য দেশগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজন করা হয়।
পুরষ্কার প্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, এই দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজে নিয়োজিত আছি। এখন কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছি। এই স্বীকৃতি আমার পথ চলার গতি বাড়িয়ে দেবে। কৃতজ্ঞতা আমার পরিবার বিশেষ করে আমার স্ত্রী রুমা আক্তার ও দুই ছেলে এবং আমার প্রতিষ্ঠান গ্রীনফ্রেম তাদের প্রতি যারা আমার এই দীর্ঘ এই পথ চলায় আমার সহযোগী ছিলেন। আমার কাজের ধারা অব্যহত থাকবে।
আবু সুফিয়ান বিপ্লবের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায়। তবে বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরেই। এই নির্মাতা সংসারের দায়িত্বটা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন গৃহিণী রুমা আক্তারের ওপর। সন্তানদের বড় করে তোলার বিষয়ে দুজনই সহমত, নিজেদের ইচ্ছে মধ্যেই ছেলেরা যেন নিজেদের গড়ে তুলতে পারে। তারা যেন সততা নিয়ে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠে।
সবশেষে প্রযুক্তির নিত্য বাঁক পরিবর্তনে আমাদের মিডিয়া আগামী দিনে কোন পথে যাবে জানতে চাইলে বললেন, সময়ের সঙ্গে । ক্যাসেটের যুগ থেকে এখন ডিভাইসের যুগে চলে এসেছি। সেই অ্যানালগ প্যানেল থেকে এখন ডিজিটাল প্যানেলে কাজ করছি। আমি আশাবাদি, প্রযুক্তির গতি আমাদের পিছনে ফেলতে পারবে না আমাদের নির্মাতাদের মধ্যে সেই উদ্যম আছে। একই সঙ্গে অবশ্য মনে কিছু শঙ্কাও আছে। যেভাবে আমরা হাতের মুঠোর চার থেকে ইঞ্চির ভেতর ঢুকে যাচ্ছি, মোবাইল ফোনের মধ্যে সব কিছু দেখে ফেলতে চাচ্ছি এবং পারছি এতে আগামীতে আমাদের মিডিয়ার মুঠোবন্দি হয়ে পড়ে কিনা সেটা।