পড়তে-লিখতে ভুলে গেছে ঝাড়খণ্ডের অনেক স্কুল শিক্ষার্থী
করোনা মহামারির পর ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বেশির ভাগ স্কুলের একটি বড় অংশের শিক্ষার্থী পড়তে, লিখতেই ভুলে গেছে। সরকারি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলোতে হয় সঠিক পরিকাঠামো নেই, নয়তো শিক্ষক নেই। এমনটাই বলছে একটি জরিপ।
রাজ্যের ১৩৮টি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে জরিপটি করা হয়।
তাতে দেখা গেছে, মহামারির পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীরা প্রায় পড়তে, লিখতে ভুলেই গেছে।
সম্প্রদায়ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবকদের সামাজিক আন্দোলন জ্ঞান-বিজ্ঞান সমিতি ঝাড়খণ্ড জরিপটি পরিচালনা করেছে। তারা জানিয়েছে, ১৩৮টি স্কুলে জরিপ হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ শতাংশ প্রাথমিক স্কুল এবং ১৯ শতাংশ উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের অনুপাত ঠিক নেই। শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রতি ৩০ জন বা তার কম সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য এই স্কুলগুলোতে একজন করে শিক্ষক নেই।
উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডের সেই সব স্কুলের ওপরই জরিপ চালানো হয়েছে, যেখানে অন্তত ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী তফসিলি জাতি এবং আদিবাসী পরিবারের।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করোনার কারণে প্রায় দুই বছর দেশটিতে স্কুল বন্ধ ছিল। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এত দিন স্কুল বন্ধ ছিল না। তার প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর। যে ১৩৮টি স্কুলে সমীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে ২০ শতাংশ স্কুলেই একজন মাত্র শিক্ষক রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই পুরুষ এবং অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন শিক্ষককে নিয়ে যেসব স্কুল চলছে, সেগুলোতে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীই আদিবাসী বা দলিত। যেসব স্কুলে জরিপ হয়েছে, সেগুলোর ৪০ শতাংশই চালান অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত শিক্ষকরা।
প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ৬৮ শতাংশ এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ৫৮ শতাংশ উপস্থিতির হার ছিল।
এ ছাড়াও জরিপ চালানো ১৩৮টি স্কুলের একটিতেও ভালো বাথরুম, বিদ্যুৎ এবং পানির সরবরাহ নেই। দুই-তৃতীয়াংশ স্কুলই দেয়াল দিয়ে ঘেরা নয়। ৬৪ শতাংশ স্কুলে কোনো খেলার মাঠ নেই, ৩৭ শতাংশ স্কুলের গ্রন্থাগারে কোনো বই নেই।
জরিপের সময় দুই-তৃতীয়াংশ স্কুলের শিক্ষকরাই জানিয়েছেন, স্কুলে দুপুরে খাবার দেওয়ার মতো যথেষ্ট তহবিল নেই।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা