ফিলিপাইনের আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ করল
আলোচিত রিজার্ভ চুরির ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিল ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)। তবে দেশটির একটি আদালত ওই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। ফিলিপাইনের ব্যাংকটির অভিযোগ, অর্থ আদায় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বিরাট এক ষড়যন্ত্র’ শুরু করেছে এবং আরসিবিসির ‘সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, ভাবমূর্তি নষ্ট করতে’ উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু যে টাকার জন্য এটা তারা করছে, তা কখনোই আরসিবিসির কাছে ছিল না। তাই ওই টাকার দায়ও আরসিবিসির নয়।
আরসিবিসি মামলা করার পর আইনি লড়াইয়ের জন্য ম্যানিলার ‘বারনাস ল অফিস’কে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই মামলার রায়ে ফিলিপাইনের আদালত বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংককে বিচারের আওতায় আনার এখতিয়ার ফিলিপাইনের ওই আদালতের নেই। সে কারণে আরসিবিসির মামলাটি খারিজ করা হল। ২০১৯ সালে ওই মামলাটি দায়ের করে আরসিবিসি। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ তাদের অর্থ উদ্ধারে আরসিবিসি’র উপরে চাপ দিচ্ছে এবং এ জন্য তারা ব্যাংকের বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছে এবং তাদের সুখ্যাতি ও ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এরমধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়া হয় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজল কমার্সিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায়।
সেখানে ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে ওই অর্থ নেয়া হয়। আবার অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলেও নেয়া হয়। স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেয়া হলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তারও কোনো হদিস মেলেনি।
চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, ওই অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর আরসিবিসি এবং এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। কী ধরনের অপরাধ হচ্ছে জেনেও অ্যাকাউন্ট খোলা, বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর এবং পরে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার বিষয়গুলো ঘটতে দিয়েছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ব্যাংকটি।